জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ১৯ মে সন্ধেবেলা আরবিআই-এর (RBI) তরফ থেকে ২০০০ টাকার নোট (2000 Currency) বাতিল করে দেওয়া হয়। সেই নোট বাতিলের পর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে একাধিক জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তবে সোমবার অর্থাৎ ২২ মে সাংবাদিক বৈঠকে এসে দেশের সাধারণ মানুষকে স্বস্তির বার্তা দিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (Reserve Bank of India) গভর্নর শক্তিকান্ত দাস (RBI Governor Shaktikanta Das)। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য ২০০০ টাকার নোট বদল নিয়ে হুড়োহুড়ি করার কোনও দরকার নেই। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০০০ টাকার নোট বাতিল করার অনেক সময় আছে। সেটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর আরও বক্তব্য নোট বদলের সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বরে শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ২০০০ টাকার নোট বেআইনি হবে না। কিন্তু কেন নোট বদল করার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করা হয়েছে, সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন শক্তিকান্ত দাস।


আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেন, "আপানার অযথা ভয় পাবেন না। এই মুহূর্তে সব কাজ-কর্ম ছেড়ে ব্যাঙ্কে ভিড় করার কোনও দরকার নেই। দেশের সাধারণ মানুষদের কাছে নোট বদলের জন্য চার মাস সময় আছে।" তিনি ফের বলেন, "৩০ সেপ্টেম্বরের পরেও ২০০০ টাকার নোট 'অবৈধ' হয়ে যাবে না। তবে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নোট বদল করতে হবে। আসলে দেশের সাধারণ মানুষ যাতে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখেন তাই সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।" 



২০০০ টাকার নোট ক্রমে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হবে, কেন্দ্র সরকারের এই ঘোষণার পরেই ২০১৬ সালের নোটবন্দির স্মৃতি আবার ফিরে আসছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে বিরোধী দলগুলি।


আরও পড়ুন: ২০০০ টাকার নোট বদল নিয়ে বড় ঘোষণা স্টেট ব্যাঙ্কের!


আরও পড়ুন: RBI | Currency: ফের আসছে ৫০০-র থেকে বড় নোট? জেনে নিন কী বলছে সরকার...


গত রবিবারই স্টেট ব্যাঙ্কের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ২০০০ টাকার নোট জমা দিতে হলে বা বদলাতে গেলে কাউকে কোনও পরিচয়পত্র দেখাতে হবে না, নির্দিষ্ট কোনও ফর্মপূরণও করতে হবে না। তবে এক লপ্তে মোট দশটি ২০০০ টাকার নোট অর্থাৎ ২০ হাজার টাকার নোট ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া যাবে কিংবা বদলানো যাবে বলে জানায় স্টেট ব্যাঙ্ক। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এখন এই বিষয়ে যাবতীয় সন্দেহ দূর করে দিয়েছে। আরবিআই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দু'হাজার টাকার নোটের তথ্য ঠিকঠাক রাখার জন্যই ব্যাঙ্কে প্রত্যেক ডিপোজিটের ক্ষেত্রে এক্সচেঞ্জের উপর ফর্ম ভরতে হবে। 


এদিকে এই ইস্যু নিয়ে এই ইস্যু নিয়ে জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে অর্থনীতিবিদ অভিরুপ সরকার বলেন, "২০০০ টাকার নোট বাজারে দেখাই যাচ্ছিল  না। আর তাই শেষ পর্যন্ত  রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২০০০ টাকা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে একদিকে ঠিকই করেছে। কারণ এত বড় অংকের নোট হল কালো টাকা রাখার সবচেয়ে সহজ পন্থা। সেইজন্য বড় অঙ্কের টাকা বাজারে না রাখাই ভালো।" এরপর অভিরুপ সরকার ফের জুড়ে দেন, "বর্তমানে আমাদের মধ্যে অন লাইন লেনদেনের মাত্রা বেড়েছে। তাই বড় মাপের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ২০০০ টাকার কোনও গুরুত্বই রইল না।"



গত ১৯ মে একটি বিবৃতি জারি করে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছিল, কারও কাছে ২০০০ টাকার নোট থাকলে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তা ব্যাঙ্কে জমা করা যাবে। তাই এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। একবারে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা করা যাবে। যে কোনও ব্যাংকেই এই নোট জমা করে কিংবা বদলে ফেলে অন্য নোট নেওয়া যাবে। অর্থাৎ ২০০০ টাকার নোটকে বৈধ মুদ্রা বলেই গণ্য করা হবে। 


বাজার থেকে তুলে নেওয়া হতে পারে ২০০০ টাকার নোট, এই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। নতুন করে ছাপানোও বন্ধ হয়েছিল। এবার দেশবাসীকে এই নোট বদলে ফেলার দিনক্ষণ জানিয়ে দেওয়া হল। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত? আরবিআই জানিয়েছে, ২০১৬ সালে নোটবাতিলের সময় নতুন নোটের চাহিদা বেড়ে গিয়েছিল। সেই চাহিদা মেটাতেই এই নোট ছাপানো হয়েছিল। এরপর বেশ কয়েকটা বছর পেরিয়ে গিয়েছে। নোটগুলির আয়ুও প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। আরবিআই নিজের মুদ্রা পলিসি মেনেই বাজার থেকে ২ হাজার টাকার নোট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত  নেওয়া হয়েছে। 


২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর আচমকাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন যে পুরনো ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করা হচ্ছে। কালো টাকার রমরমা রুখতেই এহেন পদক্ষেপ। তার পরিবর্তে বাজারে আসে নতুন ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট। কিন্তু ২০০০ টাকার নোট ভাঙাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল সাধারণ মানুষকে। আর বাজারে আসার বছর আটেক পর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়ে দিল, আয়ু শেষ হতে চলেছে ২০০০ টাকার নোটের।



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)