EXPLAINED | Gambhir To Be Sacked: গম্ভীর থাকবেন কতক্ষণ, কোচ যাবেন `বিসর্জন`! হটসিটে বসার দৌড়ে ৩ ভারতীয় নক্ষত্র...
গতবছর টি-২০ বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার সঙ্গেই রাহুল দ্রাবিড় জাতীয় দলের কোচের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। গতবছর ৯ জুলাই প্রাক্তন বিসিসিআই সচিব জয় শাহ এক্সে পোস্ট করে জানিয়ে দেন যে, ভারতের পরবর্তী হেড কোচ হচ্ছেন গৌতম গম্ভীর। দেশের জোড়া বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন ওপেনার জুলাই মাসে শ্রীলঙ্কা সফর থেকে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। যতীন পরাঞ্জপে, অশোক মালহোত্রা এবং সুলক্ষণা নায়েকের ক্রিকেট পরামর্শদাতা কমিটি গম্ভীরেই সিলমোহর দিয়েছিল।তাঁর কোচিংয়ে তিনটি টি-২০ ও তিনটি ওডিআই খেলে ভারত! তবে গম্ভীর দায়িত্ব নেওয়ার ছ'মাসের ভিতরেই ভারতীয় ক্রিকেটে ঝড় উঠে গিয়েছে! একের পর এক ভরাডুবি! পরের পর ব্যর্থতায়, সাফল্য খুঁজতে হচ্ছে এখন!
মেন্টর হিসেবে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ট্রফি জেতানোর পরেই, গম্ভীরকে ভারতের কোচ করার নীলনকশা তৈরি করে ফেলেছিল বিসিসিআই। গম্ভীরের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কায় ভারত দারুণ শুরু করে। তাদের শুরুতেই তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে চুনকাম করে, তবে ওডিআই সিরিজ শ্রীলঙ্কা ২-০ জিতে নেয়। ২৭ বছরের প্রথমবার ভারতকে ওডিআই সিরিজ হারতে হয়েছিল। এরপর ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ জেতে। এরপর তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজেও পদ্মাপারের দেশকে ভারত চুনকাম করে। এরপরেই শুরু ঐতিহাসিক লজ্জা! ভারতের ঘরে ঢুকে নিউ জিল্যান্ড তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করে। এক-দুই নয় পাক্কা ১২ বছর পর ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ হারল ভারত। এখানেই শেষ নয়, ২৪ বছর পর ঘরের মাঠে চুনকাম হতে হল টিম ইন্ডিয়াকে। ১০ বছর পর বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি হাতছাড়া হয়েছে ভারতের! সিডনি টেস্ট ৬ উইকেটে জিতে অস্ট্রেলিয়া ৩-২ বিজিটি ২০২৪-২৫ জিতে নিয়েছে। যার অর্থ এক দশক টিম ইন্ডিয়ার দখলে থাকার পর অস্ট্রেলিয়ায় ফিরছে ট্রফি। তবে ভারতের জন্য আরও বড় ধাক্কা, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আশা পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়া। প্রথমবার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল হবে ভারতকে ছাড়া। বিজিটি হারার পরেই গম্ভীরের সিংহাসন টলমল করছে। মনে করা হচ্ছে গম্ভীরের জায়গায় আসতে পারেন দেশের তিন প্রাক্তন নক্ষত্র। যাঁদের কাঁধে উঠতে পারে আগামীর ভারতের দায়িত্ব।
যতীন পরাঞ্জপে, অশোক মালহোত্রা এবং সুলক্ষণা নায়েকের ক্রিকেট পরামর্শদাতা কমিটি, যখন গত জুলাইয়ে গম্ভীরকে ভারতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন, তখনই তাঁরা শর্টলিস্ট করেছিলেন জাতীয় মহিলা দলের প্রাক্তন কোচ ডব্লিউভি রমনকে। বিসিসিআই সম্ভবত রমনকে এবার বেছে নেবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচ হিসেবে রমনের দুর্দান্ত রেকর্ড। তাঁর কোচিংয়ে তামিলনাড়ুকে ২০০৮-০৯ মরসুমে বিজয় হাজারে ট্রফি জিতেছিল। ২০১৪ সালে আইপিএলজয়ী কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটিং কোচও ছিলেন রমন। ২০১৮-২০২১ ভারতের মহিলা দলের হেড কোচও ছিলেন তিনি। তাঁর কোচিংয়ে হরমনপ্রীতরা ২০২০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল। আইসিসি-র আয়োজিত টি-২০ আন্তর্জাতিকে ভারতের যা এখনও পর্যন্ত সেরা!
গৌতম গম্ভীরের কাছে কোচিংয়ের প্রস্তাব পাঠানোর আগে, বিসিসিআই ভিভিএস লক্ষ্মণের কাছেও গিয়েছিল। কিন্তু জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রধান, রোহিত শর্মাদের দায়িত্ব নিতে চাননি তখন। ভারতের প্রাক্তন স্টাইলিশ ব্যাটার রাহুল দ্রাবিড়ের সময়তেই একাধিকবার স্ট্যান্ড-ইন কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। নিজের কোচিং দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে এবার তিনি হতে পারেন ভারতের কোচ!
ভারতের ক্রাইসিস ম্যান রবি শাস্ত্রী, দেশ যখনই বিপদে পড়েছে, তখনই বিসিসিআই ৮৩-র বিশ্বকাপজয়ী শরণাপন্ন হয়েছে। ৬১ বছরের শাস্ত্রী ২০১৭-২০২১ পর্যন্ত ভারতীয় দলের সঙ্গে কাজ করেছেন। ২০০৭ সালে তিনি ছিলেন অন্তর্বর্তী হেড কোচ, ২০২৪-০৬ পর্যন্ত ছিলেন দলের টিম ডিরেক্টর। ২০১৭-২১ পর্যন্ত তিনিই ছিলেন হেড কোচ। শাস্ত্রীর কোচিংয়ে ভারত বিদেশের মাটিতে লাল বলে দুরন্ত সফল হয়েছিল। শাস্ত্রীর ইতিহাস বিবেচনা করে বিসিসিআই ফের একবার তাঁকে দায়িত্বে বহাল করতে পারে!
আপাতত গম্ভীর থাকছেন ভারতের হেড কোচ হিসেবেই। তবে তাঁর মেয়াদ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ০৯ মার্চ 'মিনি বিশ্বকাপ', আর এখানে ভারত ভালো করতে না পারলে বিসিসিআই কিন্তু গম্ভীরকে আর রেয়াত করবে না। কারণ জিজি-র বিরুদ্ধে এখনই ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়েছে। যেমন- খেলোয়াড়দের সঙ্গে গম্ভীরের জনসংযোগ ভালো নয়, গম্ভীরের কোচিং স্টাইলেও অনেক খেলোয়াড়রই অসন্তুষ্ট। গম্ভীরের অবস্থান এখন মোটেই নিরাপদ নয়। এখন এও জানা যাচ্ছে যে, কোচ হিসেবে মোটেই গম্ভীর পছন্দের তালিকায় প্রথমে ছিলেন না।