সময় থমকে! উত্তর দিনাজপুরে আস্ত গ্রাম, অথচ ৩৫ বছর ধরে থাকে না কেউ!

Wed, 07 Oct 2020-8:07 pm,

নিজস্ব প্রতিবেদন: এ যেন হলিউড ফিল্মের 'দ্য  লস্ট ওয়ার্ল্ড'। হ্যাঁ, এমনই এক গ্রামের দেখা মিলেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার ব্লকে। নাম জিরোপুর মৌজার শিয়ালমারি গ্রাম। খাতায়-কলমে, মানচিত্রে সেই শিয়ালমারি গ্রাম থাকলেও সেখানে আজ কোন মানুষ বসবাস করে না। কেন শিয়ালমারি মানুষহীন গ্রাম?  জানতে হলে ফিরে যেতে হবে প্রায় ৩৫ বছর আগে-

 

সালটা ১৯৮৬- র কাছাকাছি। ইটাহার ব্লকের জিরোপুর মৌজায় শিয়ালমারি এক বর্ধিষ্ণু গ্রাম ছিল। সেই সময় এলাকায় বিশু ডাকাতের দাপট ছিল । বিশু ডাকাত থাকত এই শিয়ালমারি গ্রামের আশেপাশেই। সন্ধ্যা হতেই প্রান্তিক গ্রাম শিয়ালমারিতে বিশু ডাকাতের অত্যাচার শুরু হত। কারও বাড়িতে গিয়ে জোর করে খাবার খাওয়া, কারও বাড়িতে গিয়ে তোলাবাজি , কোথাও আবার মহিলাদের হাত ধরে টানাটানি।

শিয়ালমারি গ্রামের নিত্যদিনের ঘটনা। বিশু ডাকাতের  অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে  শিয়ালমারি গ্রাম ধীরে ধীরে ফাঁকা হতে থাকে। গ্রামের বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে আশেপাশের গ্রামগুলোতে চলে যেতে থাকেন। খালি হয়ে যায় শিয়ালমারি গ্রাম। 

বর্তমানে শিয়ালমারি গ্রাম জুড়ে শুধুই শূন্যতা আর অতীতের স্মৃতি। বহুদিন হয়ে গেছে বিশু ডাকাত মারা গেছে। তবুও ঘরছাড়ারা ফিরে যাচ্ছেন না নিজের গ্রামে। কারণ  চারিদিকে জঙ্গল, গ্রামের কোন রাস্তা নেই, নেই বিদ্যুত্‍। প্রায় তিন দশক ধরে খাতায় কলমে সবকিছু থাকলেও  জনমানব শূন্য এই শিয়ালমারি গ্রাম। উন্নয়ন থমকে গেছে ঠিক আগের গ্রামে। 

 

স্মৃতি আজও হাতড়ে বেড়ায় শিয়ালমারি পূর্বতন বাসিন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন যদি উন্নয়ন হয় তাহলে তাঁরা ফিরে যাবেন পিতৃপুরুষের গ্রামে। 

উত্তর দিনাজপুরের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পুর্ণেন্দু দে জানান, যদি শিয়ালমারির বাসিন্দারা আবেদন করেন অবশ্যই পঞ্চায়েতের তরফ থেকে এলাকায় সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। কারণ এইরকম একটা গোটা গ্রাম এই থাকা উচিত নয়। এতে অনেকরকম সমস্যা তৈরি হয়। পঞ্চায়েতের এই প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর প্রায় ৩৫ বছর আগে হারানো ভিটেমাটি ফিরে পাওয়ার আশায় শিয়ালমারি গ্রামের পূর্বতন বাসিন্দারা।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link