EXPLAINED | Team India News: ফ্লাডগেট খুলে দিলেন অশ্বিন, অবসরে পরপর ৩ মেগাস্টার! ২০২৫-এ আমূল বদল টিম ইন্ডিয়ায়!
৩৮ বছরে 'সাইন অফ' করেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। আচমকাই মহারথীর অবসরের সিদ্ধান্তে অনেকেই চমকে গিয়েছেন। ভারত-অস্ট্রেলিয়া চলতি পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের মাঝপথেই ভারতীয় ক্রিকেটের 'আন্না' জানিয়ে দিয়েছেন যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কোনও ফরম্যাটেই তাঁকে আর কখনও দেখা যাবে না। ব্রিসবেন টেস্টের শেষে, ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে পাশে বসিয়ে এই ঘোষণা করেছেন কিংবদন্তি স্পিনার। যদিও বিদায়বেলায় অশ্বিন বলেছেন যে, তাঁর ভিতরে এখনও ক্রিকেট রয়েছে! অশ্বিনের আচমকা অবসর একাধিক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেট তোলপাড়। মনে করা হচ্ছে অশ্বিন অবসরের ফ্লাডগেট খুলে দিলেন। আগামী বছরের ভিতর আরও ৩ ভারতীয় মেগাস্টার চলে যাবেন অস্তাচলে। এমনটাই রিপোর্ট এখন। তাঁদের তিনজনই দেশকে টি-২০ বিশ্বকাপ জিতিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে, দেশের জার্সিতে আর টি-২০ না খেলার। এই প্রতিবেদনে তাঁদের কথাই তুলে ধরা হল।
বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির আগে দেশের মাঠে হওয়া ভারত-নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজই ভারতীয় ক্রিকেটের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল। ৩-০ হোম সিরিজে হার ভারতকে শুধুই চাপে ফেলেনি, তাদের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (ডব্লিউটিসি) ফাইনাল যোগ্যতার স্বপ্নেও বিরাট ধাক্কা দিয়েছে। টানা তৃতীয়বারের মতো ডব্লিউটিসি ফাইনাল খেলার জন্য ভারতকে ফেভারিট মনে করা হচ্ছিল কিন্তু নিউজিল্যান্ড সিরিজ সবকিছু বদলে দেয়। ভারত-অস্ট্রেলিয়া চলতি পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের ফল এখন ১-১। বৃষ্টিবিঘ্নিত ব্রিসবেনে তৃতীয় টেস্ট ড্র হয়ে গিয়েছে। সিরিজে ভারতের হাতে আর দুই টেস্ট রয়েছে। ভারতকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যেতে হলে, অস্ট্রেলিয়া বিরুদ্ধে চলতি সিরিজের শেষ দু'টি টেস্টের একটিতেও হারতে পারবে না ভারত। একটি ড্র করার অনুমতি আছে। তবে হার কিছুতেই নয়। শেষ ১৩ টেস্ট ইনিংসে রোহিত শর্মা মাত্র ১৫২ রান করেছেন। তাঁর গড় ১১.৮৩! মাত্র একটিই হাফ-সেঞ্চুরি রয়েছে। রোহিতের রানের খরা নিঃসন্দেহে তাঁর টেস্ট কেরিয়ার নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। রোহিত যদি বাকি দুই টেস্টে রান না পান, ভারতকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তুলতে না পারেন, তাহলে ধরে নেওয়া যেতেই পারে যে, রোহিত টি-২০আইয়ের পর ছেড়ে দেবেন লাল বলের ক্রিকেটও।
বরাবরই বিরাট কোহলির পয়মন্ত দেশ অস্ট্রেলিয়া। তিনি পারথে দুর্দান্ত শতরান করেছেন ঠিকই, কিন্তু তারপর থেকে তার ব্যাট নীরবই রয়েছে। একটিই ফ্য়াক্টর কোহলির পক্ষে কাজ করছে বলে মনে কার হচ্ছে তা হল, তার কোনও বিকল্প নেই এই মুহূর্তে। কিন্তু এরপরেও বিরাটের অবসর নিয়ে বিস্তর চর্চা চলছে। হতেই পারে যে, ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজের পর হয়তো তাঁকে আর লাল বলের ক্রিকেটে দেখা গেল না! কোনও সম্ভাবনাই অস্বীকার করার জায়গা নেই।
রোহিত-বিরাটের মতো জাদেজার ভবিষ্যত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তিনিও কিন্তু বিরাট-রোহিতের পথ অনুসরণ করেই টি-২০ বিশ্বকাপের পর দেশের জার্সিতে কুড়ি ওভারের সংস্করণকে বিদায় জানিয়ে ছিলেন। জাদেজার বিকল্পও রয়েছে গৌতম গম্ভীরের কাছে। প্রস্তুত আছেন অক্ষর প্য়াটেলও। তবে এই কথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে, ভারতীয় দলের তিন সুপারস্টারের ভাগ্য় ঝুলে রয়েছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের দিকে তাকিয়েই। ভারত ফাইনালে উঠতে না পারলে হয়তো তাঁদের আলবিদা বলতে হতে পারে। ২০২৫ সালে ভারতীয় ক্রিকেট আমূল বদলে যাবে সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এক স্পোর্টস ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রিপোর্টে আসন্ন একাধিক অবসরের প্রসঙ্গে রিপোর্ট পেশ করেছে। সেখানে সূত্রকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, 'অবসরের সিদ্ধান্ত কতটা পূর্বপরিকল্পিত বা স্বেচ্ছায় বা সূক্ষ্মভাবে প্রভাবিত তা নির্ধারণ করা কঠিন, তবে ভারতীয় দলে শীঘ্রই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্ভবত ২০২৫ সালের গ্রীষ্মে ইংল্যান্ডে তাদের পরবর্তী টেস্ট সিরিজ শুরু হওয়ার আগেই তা হয়ে যাবে। অতীতে, কৃতিত্ব বা খামতি সম্ভবত অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ দিয়েই দেখা হয়েছে। বছরের পর বছর অস্ট্রেলিয়া সফরই ক্রিকেটারদের কেরিয়ারের একটি যন্ত্রণাদায়ক পরিণতিতে দেওয়ার কারণে কুখ্যাতি অর্জন করেছে। কেউই খোলাখুলিভাবে স্বীকার করবে না যে, এটি ধাক্কা ছিল, তবে অশ্বিনের অবসরকে আসন্ন অবসরের সিরিজের প্রথম হিসেবে দেখা যেতে পারে। ২০০০৮ সালেও একাধিক সিনিয়র ক্রিকেটার দ্রুত পরপর অবসর নিয়েছিলেন। অবসর নেওয়ার সংকেত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাঠানো হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। রূপান্তরের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভারতীয় দল।'