এ দেশের নারীরা যৌন আকাঙ্খা বিসর্জন দিয়ে পুরুষ হয়ে যায়...

Wed, 21 Mar 2018-4:26 pm,

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের অস্তিত্ব কতটা অসহায়, তা হয়ত এই মুখগুলো দেখলেই বোঝা যায়। এদের আপাত দৃষ্টিতে পুরুষ বলে মনে হলেও, প্রকৃতির নিয়মে আসলে তাঁরা নারী। বাধ্য হয়েছেন পুরুষ হতে। 

আলবানিয়ায় নারীরা চাইলে পুরুষ বনে যেতে পারেন। যদিও যৌনঙ্গে কোনও অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই। মনে-প্রাণে পুরুষ হতে পারেন তাঁরা। সে দেশের পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তথাকথিত 'পুরুষোচিত' জীবন যাপন করতে পারেন তাঁরা।

সবথেকে বড় কথা, সে দেশে একজন পুরুষের উপর যেমন পরিবারের আর্থিক দায়িত্ব থাকে, ঠিত তেমন এইসব স্বেচ্ছায় 'পুরুষ হয়ে যাওয়া' নারীদেরও সেই দায়িত্ব বহন করতে হয়। কিন্তু আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে, কেন তাঁরা নারীত্ব বিসর্জন দিয়ে হঠাত্ পুরুষ হতে চায়?

উত্তর আলবানিয়ার পার্বত্য এলাকায় প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলাদের কোনও সমাজিক স্বাধীনতা নেই। বিয়ে হওয়ার পর তাঁদেরকে স্বামীর ‘সম্পত্তি’ হিসাবে মনে করা হয়। সন্তান পালন, ঘর সংসার দেখাশুনাই মুখ্য কাজ তাঁদের। 

সমাজ তো দূর, পরিবারের কোনও সিদ্ধান্তেও নারীদের কোনও অধিকার থাকে না। কিন্তু যে পরিবারে পুরুষ মারা যান কিংবা কোনও পুরুষই নেই সেখানে নারীদেরকেই এগিয়ে আসতে হয়। কিন্তু পুরুষ সমাজের সঙ্গে লড়াই করতে হলে আগে সেই নারীকে পুরুষ হতে হবে। এই ভাবনা থেকেই পরিস্থিতির চাপে নারীরা পুরুষ হতে চান।

এই নিয়ম 'লেকে ডুকাগজিনির কানুন' বলে পরিচিত। প্রায় পাঁচ’শ বছর ধরে এই নিয়ম প্রচলিত রয়েছে।

তবে, নারী থেকে পুরুষ কেবল নিজের ইচ্ছা মতো হওয়া যায় না। সমাজের অনুমতি নেওয়া দরকার। সমাজের মাতব্বরদের সামনে তাঁদের এই মর্মে অঙ্গীকার করতে হয় যে, পুরুষ হয়ে গেলেও সারাজীবন কুমারীত্ব অটুট থাকবে। বিয়ে করা যাবে না। সন্তান ধারণ করা যাবে না। একজন পুরুষ যে ভাবে জীবনযাপন করে সেভাবেই তাঁকে থাকতে হবে।

নারী থেকে পুরুষ যাঁরা হন, তাঁদেরকে ‘বুরনেশা’ বলা হয়। এখন সে দেশে অনেকেই স্বাধীনতা পেতে পুরুষ হতে চান।

আলবানিয়ায় মহিলারা এখন অনেক সুযোগ সুবিধা পেলেও এই সব এলাকা এখনও আঁধারে রয়েছে। নারীরা আছেন নারীর মতো। আর যাঁরা নিজের তথাকথিত কুমারীত্ব বজায় রেখে নিজেদের যৌন ইচ্ছা বিসর্জন দিতে পারেন, তাঁরাই কেবল পুরুষ হয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে জায়গা পেয়ে থাকেন।

মার্কিন চিত্রগ্রাহক জিল পিটারের তোলা বেশ কয়েকজনের ছবি প্রকাশ করলাম আমরা। মনে করা হচ্ছে এনারাই এই মুহূর্তে শেষ ‘বুরনেশা’। এখন শ’খানেক বুরনেশাকে পাওয়া যাবে যাঁরা কেতাদুরস্ত পুরুষ মানুষ, কিন্তু আড়ালে নারীত্ব বহন করে চলেছেন সারাজীবন!

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link