কৌশিক গাঙ্গুলির ছবিতে ডেবিউ, মামা-ভাগ্নীর পরিচয়ে লিভ-ইন! অয়ন শীলের ঘনিষ্ঠ এই `রহস্যময়ী` কে?
বরুণ সেনগুপ্ত: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইডির নজরে এক রহস্যময়ী নারী! এই রহস্যময়ী নারী আর কেউ-ই নয়। অয়ন শীলের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী শ্বেতা চক্রবর্তী। শ্বেতা চক্রবর্তীর বাড়ি নৈহাটির বিজয়নগরে। কামারহাটি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করতেন শ্বেতা। আবার মডেলিংও করতেন। বাবা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রাক্তন কর্মী। শ্বেতা অয়ন শীলের প্রোমোটারির ব্যবসা সামাল দিত। শ্বেতার সঙ্গে অয়ন শীলের জয়েন্ট অ্যাকাউন্টেরর হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাতে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেনও রয়েছে। ঘনিষ্ঠ বান্ধবী শ্বেতাকে দামী এসইউভি গাড়ি উপহারেও দিয়েছিলেন অয়ন শীল।
এছাড়াও ইডির তদন্তে বেশ কিছু জায়গায় ফ্ল্যাটের হদিশ মিলেছে। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে অয়ন শীল-শ্বেতার যোগ সামনে আসতেই পাড়ার মেয়ের এমন কাণ্ডে তাজ্জব এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দারা ভাবতেই পারছেন না, যে শ্বেতা এমন চক্রের সাথে জড়িয়ে! কেউ বলছেন, 'লোভে পাপ! পাপে মৃত্যু! শ্বেতার অবস্থাও একই হয়েছে।' আবার কেউ বলছেন, 'সবাই দেখি একটা করে সুন্দরী বান্ধবি রেখেছে। আর কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে!আমরা গরিব মানুষ! খেটে খাই!'
২০১৭ সাল থেকে অয়ন শীলের সাথে পরিচয় শ্বেতা চক্রবর্তীর। জানা যাচ্ছে অয়ন শীলের স্ত্রীর সুবাদেই মডেল শ্বেতার সাথে পরিচয় অয়নের। অয়ন শীল পেশায় প্রোমোটিং-এর ব্যবসা করেন। অয়ন শীলের প্রোমোটিংয়ের ব্যবসার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন শ্বেতা। অয়ন শীলের প্রোডাকশন হাউসের তৈরি কবাডি কবাডি সিনেমাতেও অভিনয় করেন শ্বেতা চক্রবর্তী। যে সিনেমার ডিরেক্টর ছিলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্য়ায়। ছবিতে ঋত্বিক, সোহিনী সহ আরও অনেক অভিনেতা ছিলেন। সেই সিনেমাতেই ডেবিউ করেছিলেন শ্বেতা।
অয়নের ৩২ অ্যাকাউন্টের মধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট শ্বেতার। শ্বেতার সেই অ্যাকাউন্ট থেকে পেমেন্ট করা একটি বিলাসবহুল গাড়ির রশিদ মিলেছে অয়ন শীলের বাড়িতে। অয়নের বাড়িতে মিলেছে শ্বেতা নামে থাকে একটি সম্পত্তির নথিও। যারপরই প্রশ্ন উঠছে, শ্বেতা যদি নিজের টাকা দিয়েই গাড়ি বা সম্পত্তি কিনে থাকেন, তবে তাঁর নথি অয়নের অফিসে কেন?
দীর্ঘদিন ধরে কামারহাটি পৌরসভার সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করেন শ্বেতা চক্রবর্তী। এখন অয়ন শীলের বাড়ি থেকে যে সমস্ত নথি উদ্ধার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের আধিকারিকেরা, সেখানে পুরসভাতেও নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছেন তদন্তকারী সংস্থা। তাতেই কামারহাটি পুরসভায় কর্মরত শ্বেতা চক্রবর্তীর খোঁজ পান তদন্তকারী অফিসারেরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য় শ্বেতাকেও তাই তলব করেছে ইডি দপ্তরে।
কামারহাটি পুরসভার ঠিক উল্টোদিকে জগন্নাথ নিকেতন নামে এক আবাসনে ফ্ল্যাট রয়েছে অয়ন শীল ও শ্বেতা চক্রবর্তীর। এক আবাসিক জানান, অয়ন শীল ও শ্বেতা চক্রবর্তী মামা-ভাগ্নীর পরিচয় দিয়ে এখানে থাকতেন। এক বছর আগে এসেছিলেন অয়ন শীল। আর গত কয়েক সপ্তাহ আগে একবার গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন শ্বেতা চক্রবর্তী। তারপর তার আর কোনও খোঁজখবর পাওয়া যায়নি।