আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন Baba ka dhaba-র বৃদ্ধ কান্তা প্রসাদ, আজও পিছু ছাড়ল না অভাব
নিজস্ব প্রতিবেদন: আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলেন বাবা কা ধাবা-র মালিক কান্তা প্রসাদ। বর্তমানে নিউ দিল্লির সফদারজঙ্গ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন, ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিজেকে হত্যা করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কেন হঠাৎ এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে গেলেন কান্তা প্রসাদ?
স্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁদের নতুন খাওয়ার দোকানের ভাড়া প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা। সেখানে তাঁদের রোজগার মাসে মাত্র ৩০,০০০ টাকা। চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছিল বৃদ্ধ কান্তার।
কে এই কান্তা প্রসাদ?
গত বছর লকডাউনে অক্টোবর মাসের কথা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ইউটিউবার গৌরব ওয়াসনের জন্য ভাইরাল হয়ে পড়েন ৮০ বছরের কান্তা প্রসাদ। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাছি তাড়াচ্ছে তাঁর দোকান। খদ্দের নেই, চোখের জলে দিন কাটছে বৃদ্ধ ধাবা ওয়ালার। যার ছবি পৌঁছে যায় সোশ্যাল মিডিয়ার আমজনতা থেকে তারকা মহলে। তাঁকে সাহায্য করতে শুরু হয় একের পর এক পোস্ট। আসে অনুদান। দোকানে উপচে পড়ে ভিড়।
দিনের যা রোজগার তাতে দু-বেলা খাবার খেয়ে দিন কাটানো অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। আশি বছর বয়সে এসে এত বড় কঠিন লড়াই লড়তে পারছিলেন না তিনি। দোকানে আশা এক খদ্দেরের কাছে নিজের দুঃখের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন বৃদ্ধ দোকানদার। সেই মুহূর্তের ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন খদ্দের তথা ওই ইউটিউবার।
কত টাকা রোজগার হচ্ছে দিনে? প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দেওয়ার আগে, বাক্স খুলে কটা ১০ টাকার নোট বের করে দেখান। তিনি এ কটা টাকাই রোজগার করতে পেরেছেন। স্ত্রীয়ের শরীরও ভালো নেই। ডাক্তার দেখাতেও পারছেন না। তাঁর সেই কথা ভিডিও মারফত ভারতের কোনায় কোনায় পৌঁছে যায়।
কিন্তু এরপরই গোটা ঘটনাটির মোড় ঘুরে যায়। বাবা কা ধাবার-কান্তা প্রসাদ তাঁর অনুদানের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন পুলিসের কাছে। তাও আবার ওই ইউটিউবারের বিরুদ্ধেই। জানা যায়, কারও এক উষ্কানিতেই এমনটা করেছিলেন তিনি। সে সময় তাঁর পুলিসের কাছে অভিযোগ ছিল অনুদানের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন গৌরব।
এরপর, পুলিস ওই ইউটিউবার গৌরব ওয়াসনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। দেখা হয় তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। কিন্তু গৌরবের বিরুদ্ধে তেমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে টাকা অনুদান হিসেবে পেয়েছিলেন, সবটাই কান্তা প্রসাদের হাতে তুলে দেন তিনি।
এরপর থেকে অবশ্য রমরমিয়ে চলতে থাকে বাবা কা ধাবা। ঝাঁ চকচকে নতুন রেস্টুরেন্টও খুলে ফেলেন তিনি। জানা গিয়েছে, দিন তিনেক আগেও গৌরব দেখা করতে গিয়েছিলেন বৃদ্ধ কান্তা প্রসাদ ও তাঁর স্ত্রীয়ের সঙ্গে।
কিন্তু পিছু ছাড়ে না অভাব অনটান। কয়েকদিন যেতেই ফিরে আসে সেই কষ্ট। অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন বাবা কা ধাবার বৃদ্ধ কান্তা প্রসাদ।