Babur: দোর্দণ্ডপ্রতাপ মুঘল সম্রাট বাবরের পিছনে কে ছিলেন প্রেরণাদাত্রী নারী?
কিন্তু খানজাদা? কে এই খানজাদা? ঐতিহাসিকেরা মাঝেমাঝেই বাবরের অতলস্পর্শী সাফল্যের পিছনে যাঁর অবদানের কথা বলেন?
তিনি বাবরের দিদি! উমর শেখ মির্জার বড় মেয়ে। বাবরের আত্মজীবনী 'বাবরনামা'য় রয়েছে তাঁর নিজের দিদি খানজাদার কথা। কী ভাবে খানজাদা নিজের পরিবারের জীবন ও সম্মান রক্ষার্থে স্বেচ্ছায় শত্রুশিবিরের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন, সে এক রোমহর্ষক কাহিনি।
বাবরকে বাঁচানোর জন্য খানজাদার এই অবদানকে বাবর তো বটেই, হুমায়ুন ও পরবর্তী প্রজন্মের সম্রাটরাও মান্যতা দিয়েছিলেন– আক্ষরিক অর্থেই খানজাদা হয়ে উঠেছিলেন তৈমুর বংশের নারীদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের চলমান প্রতীক হিন্দুস্তানের 'পাদশাহ বেগম'।
বাবর মির্জা ওমর শেখ বেগে'র পুত্র এবং তৈমুরী শাসক উলুগ বেগে'র প্রপৌত্র ছিলেন। তিনি পানিপথের প্রথম যুদ্ধে দিল্লির লোদী রাজবংশের সুলতান ইব্রহিম লোদিকে পরাজিত করে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর পুত্র মির্জা হুমায়ুন সিংহাসনে আরোহণ করেন। পানিপথের যুদ্ধে তিনিই প্রথম কামানের ব্যবহার করেন। তাঁর প্রখর রণকৌশলের কাছে হার মানেন ইব্রাহিম লোদী।
বাবরের মাতৃভাষা ছিল চাঘতাই, যা তাঁর কাছে তুর্কি ভাষা নামে পরিচিত ছিল। এছাড়া পার্সি ভাষাও তার দখলে ছিল। তিনি চাঘতাই ভাষাতেই তাঁর আত্মজীবনী 'বাবরনামা' লিখেছেন, যার ভাষা, বাক্যগঠন, শব্দ মূলত পারস্য ভাষারই অনুসারী।
শোনা যায়, খানজাদা নাকি তাঁর দশ বছরের অতৃপ্ত বৈবাহিক জীবনের শেষে ফিরে এসেছিলেন বাবরের কাছেই। আর তখন খানজাদার কাছে তাঁদের শত্রুশিবিরের অঢেল তথ্য। যা বাবরের কাজে লাগল। বাবর ক্রমশ বিশ্বের ইতিহাসে এক অসাধারণ সম্রাট বলে পরিচিত হলেন।
তৈমুর লঙের বংশধর বাবরের মৃত্যু নিয়েও রহস্য আছে, মিথ আছে। আছে কাব্যও। কথিত আছে, পুত্রের আরোগ্যের জন্য বাবর নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। পুত্র হুমায়ুন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে বাবর আল্লার কাছে তাঁর নিজের জীবনের বিনিময়ে পুত্রের আরোগ্য কামনা করেন। ক্রমান্বয়ে হুমায়ুন আরোগ্য লাভ করতে থাকেন এবং বাবর পীড়িত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ নিয়ে শঙ্খ ঘোষের অসাধারণ কবিতার কথাও ভুলতে পারে না বাঙালি।