Sakib Al Hasan: `হাসিনার দলে ছিলেন বলে সাকিব-মাশরাফি খুনি?`, প্রশ্ন তুললেন খোদ বাংলাদেশ কোচই...
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দেশের হয়ে ঘরের মাটিতে জীবনের শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। প্রানের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে খেলবেন বলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই পর্যন্ত পৌঁছেছিলেনও। কিন্তু দুদিনের মধ্যেই পালটে যায় সিদ্ধান্ত। নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে ঢাকা থেকে সাকিবকে আপাতত দেশে না ফিরতে পরামর্শ দেওয়া হয়। এ বার এই বিষয়ে মুখ খুললেন বাংলাদেশের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। শুধু সাকিবই নয়, তিনি প্রসঙ্গ তুলেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তামিম ইকবালেরও।
সাকিবের ঘরের মাঠে না খেলতে পারা নিয়ে সালাউদ্দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, 'দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি কখনও এত রাগ বা কষ্ট পাইনি, আজ কেমন যেন লাগছে, আমরা মানুষ কি কখনও নিজেরা ভুল করি না, কেউ অনুতপ্ত হলে তাঁকে একটা সুযোগ দেওয়া উচিত, কিন্তু আমরা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছি মানুষ হিসেবে, দয়ামায়া জিনিসটা আমাদের মধ্যে থেকে উঠে গিয়েছে।'
সাকিব-মাশরাফিদের অবদান তুলে ধরে তিনি আরও লেখেন, 'একটা মানুষ দেশের জন্য ১৭টা বছর কিছু না কিছু করেছে, আজ ক্রিকেট–বিশ্ব আমাদের একটু সম্মান করে কাদের জন্য, তারা ক্রিকেট মাঠে নামতে পারবে না, এই কান্না তো সবাই দেখবে না, রাজনীতি করেছে বলে এরা খুনি??? এদের সঙ্গে মিশেছেন, এরা কত মানুষের ভাত–কাপড়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে জানেন আপনি? এরা কত অসহায় মানুষের চিকিৎসা করিয়েছে, সেটা কি জানেন?'
তিনি আরও লেখেন, 'তারা স্ট্যাটাস না দেওয়ার কারণে আজ শত্রু। যখন মাশরাফি ৫টা অপারেশন করে দেশের জন্য লড়াই করেছে, তা কি দেখেছেন? সাকিব যে আঙুলে চিড় নিয়ে বোলিং করে গেছে, তামিম এক হাতে ব্যাটিং করে গেছে, কাদের জন্য?'
দেশের ক্রিকেটের এই তারকারা মাঠ থেকে বিদায় নিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করে সালাউদ্দিন আরও লিখেছেন, 'দেশকে সবাই কমবেশি ভালোবাসে। এদের ভালোবাসাটা হয়তো দেখা যায়ও না। এদের কাছ থেকে দেখেছি। এরা মানুষের উপকার ছাড়া কারও ক্ষতি করেনি, এরা খুনি না।'
সালাউদ্দিন তাঁর স্ট্যাটাসের শেষে লিখেছেন, 'খুব কষ্ট পাচ্ছি, মাঠ থেকে এদের বিদায় দেখতে পাব না। মানুষকে মাফ করুন। আল্লাহ আমাদের অনেক অপরাধ মাফ করে দেবেন। আমরা সবাই কমবেশি অপরাধী। সম্মান কাউকে দিলে আপনিও সম্মানিত হবেন।'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সরব ছিলেন না সাকিব। এ জন্য কিছুদিন আগে দুঃখও প্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি রাজনীতিতে নাম লেখানোর কারণও ব্যাখ্যা করেন সাকিব। তাঁর আগে মাশরাফিও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিজের নীরবতার কারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন। আওয়ামী লিগ সরকারের সংসদ সদস্য ছিলেন মাশরাফিও।
সাকিবকে যেন দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলতে না দেওয়া হয়, এই দাবি নিয়ে তোলপাড় হয় ওপার বাংলা। গত কয়েক দিন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাকিবের বিরুদ্ধে কিছু মানুষ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মিছিল করেছেন, দেয়াললিখন লিখেছেন। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।