Bangladesh Protest: কোথায় শেখ হাসিনা? তিনি কি এখনও ভারতেই? জেনে নিন তাঁর পরবর্তী পরিকল্পনার `গোপন` তথ্য...
সেই ১৯৬০-এর দশকে তরুণী শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্য়ালয়ে ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়েছিলেন। এর জেরে তৎকালীন পাক-সরকার জেলে ভরেছিল শেখ হাসিনা। এদিকে ১৯৭৫ সালের অগস্টে শেখ মুজিবর রহমানকে মৃত্যুবরণ করতে হল আততায়ীর হাতে। মুজিবর-সহ সেনার হাতে নিহত হলেন স্ত্রী ও তিন ছেলে। হাসিনা দেশে ছিলেন না বলে বেঁচে গেলেন হয়তো! কিন্তু ঘটনার অভিঘাতে ভয়ংকর ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। এর পর টানা ছ'টি বছর তিনি নির্বাসনেই ছিলেন। এর মধ্যেই আওয়ামী লিগের নেতা নির্বাচিত হন।
বিরোধী দলনেত্রী হিসেবে হাসিনা শাসকদল খালেদা জিয়ার বিএনপি বা বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপির অভিযোগ তোলেন। সংসদ বয়কট করেন। তাঁর এই মুভমেন্ট বিরোধীদের সংহতও যেমন করে, তেমনই দেশে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয়। আর এরই ফলশ্রুতিতে হাসিনা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের জুনে।
২০০১ সালে তাঁর প্রথম টার্ম শেষ হয়। খালেদার কাছে হেরে যান হাসিনা। তবে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে হাসিনাই প্রথম যিনি পাঁচ বছরের পুরো টার্মই কাটাতে পারেন। ২০০১ সালেই ইতিহাস তৈরি করেন হাসিনা। ২০০৮ সালে ফের জেতেন হাসিনা। ২০১৪ সালেও তিনি তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। চতুর্থবারের জন্যও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন হাসিনা, ২০১৮ সালে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠে হিংসা ও ভোটে কারচুপির অভিযোগ। ২০২৪ সালের ৫ অগস্ট দুপুর পর্যন্ত হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। দুপুরে তাঁকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে হলেও ততদিনে বিরল রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন তিনি।
গতকাল, সোমবারই একটি কপ্টারে দেশ ছাড়েন হাসিনা। কপ্টারটি হাসিনাকে নিয়ে ভারতে উড়ে এসেছে। প্রথমে সেটি ত্রিপুরা যায়, পরে দিল্লির দিকে যাত্রা করে-- এমনই দাবি ছিল সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের। তবে, ঠিক কোথায় হাসিনা থাকবেন, তা তখনও অজানা ছিল। এখনও অজানা।
কোনও কোনও মহল থেকে মনে করা হচ্ছে, হাসিনা দিল্লিতে থাকতে পারেন, লন্ডনেও চলে যেতে পারেন। গতকাল বিকেল প্রায় ৫টা ৩৬ মিনিট নাগাদ হাসিনার বিমান উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানবন্দরে নেমেছিল। সেখানে তখন তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন বিমানবাহিনীর আধিকারিকেরা। জানা গিয়েছিল, হিন্ডন বিমানবন্দরে তাঁর বিমানটিতে রিফুয়েলিং চলছিল। আজ, মঙ্গলবারই তিনি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দিতে পারেন।
কিন্তু শোনা যাচ্ছে, নিজেদের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে লন্ডন নিজেই ঘেঁটে আছে। এই অবস্থায় তারা বাংলাদেশের ঝামেলা নেবে না।
এই পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছে, ভারতই ভরসা হাসিনার। এবং এই প্রশ্নও ছড়িয়েছে যে, হাসিনা হয়তো এখনও ভারতেই আছেন। ইতিমধ্যেই সর্বদল বৈঠকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। এবং বাংলাদেশ ইস্যুতে সর্বতোভাবে কেন্দ্র সরকারের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতারাই। বাংলাদেশ ইস্যুতে তৃণমূলও ভারত সরকারের পাশেই রয়েছে। তবে হাসিনা বা বাংলাদেশ নিয়ে যে পদক্ষেপ করা হবে, তা যেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আগাম জানানো হয়। সর্বদল বৈঠকে এই মর্মে কথা বলেছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তা না হয় হল। কিন্তু বাংলাদেশের কী হবে? কে হবেন অশান্ত বাংলাদেশের পরবর্তী কর্ণধার? নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস? অন্তত তেমনই কিন্তু অনুমান।