21 July : এক নজরে একুশে
তখন প্রবল বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি মাথায় করেই ২১ জুলাই-এর মঞ্চে বক্তৃতা রাখেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, এমন সভা আমি দেখিনি। যত লোক এসেছেন তার দশগুণ মানুষ ঢুকতে পারেননি। বৃষ্টি আমাদের কাছে শুভ। আজ আপনাদের চোখে মুখে যে জেদ আমি লক্ষ্য করছি তা অভূতপূর্ব। এত বৃষ্টির মধ্য়েও কেউ আসন ছেড়ে যাননি।
২১ জুলাই-এর সভায় যোগ দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার বৃষ্টি মাথায় করে ধর্মতলামুখী হন বহু মানুষ। এদিন ২১ জুলাই-এর মঞ্চে মমতা বলেন, 'বৃষ্টি দেখে বিজেপি, সিপিএম হেসেছিল। ভেবেছিল তৃণমূলের মিটিংই শেষ হয়ে গেল! চব্বিশে মানুষের বৃষ্টিতে ভেসে চলে যাবে বিজেপি।’
সকালে ঘুম ভাঙার আগেই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন সংবাদপত্র। টার্গেট ছিল সময়ের আগেই কাজ শেষ করে ২১ জুলাইয়ের সভায় পৌঁছতে হবে। সাইকেলের ক্যারিয়ারে অবশিষ্ট সংবাদপত্র এবং সামনে প্ল্যাকার্ডে প্রতিবাদের কন্ঠ। এমনই একটি মিছিলের আয়োজন করে পশ্চিমবঙ্গ সংবাদপত্র বিক্রেতা সমিতি মানিকতলা শাখা। তাঁদের দাবি যুদ্ধ নয় শান্তি চাই। একই সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশের মানুষকে এক হওয়ার ডাকও দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কথায়, তৃণমূল সরকারের জনমোহিনী প্রকল্প সারাদেশে চালু করা উচিত। মন্দির, মসজিদ অনেক গড়া হয়েছে এবার গড়া হোক দেশ।
গত অক্টোবর মাস থেকে বারংবার বৃদ্ধি পেয়েছে গ্যাস সিলিন্ডার অর্থাৎ গার্হস্থ্য এলপিজির দাম। ২১ শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে সেই দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধেই সোচ্চার হলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ডেকে নিলেন তারকা সাংসদ দেবকে। প্রতীকী সিলিন্ডার হাতে নিয়ে গার্হস্থ্য এলপিজির দামবৃদ্ধির প্রতিবাদ করেন অভিনেতা সাংসদও।
মুড়িতে জিএসটি বসানোর প্রতিবাদ জানাতে একুশের মঞ্চকেই বেছে নেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর সেই প্রতিবাদও ছিল অভিনব। মঞ্চে দাঁড়িয়েই তৃণমূল নেত্রী নির্দেশ দেন এক থালা মুড়ি নিয়ে আসতে। বর্ধমানের আউশগ্রাম থানার দিগনগর-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তেলতা গ্রাম থেকে এসেছিল ৩০ জনের একটি দল। সেই দলেই ছিলেন দেবাশিষ মুখার্জি, নিরঞ্জন পাল, কার্তিক বাউরিরা। তাঁরাই সঙ্গে করে মুড়ি নিয়ে এসেছিলেন টিফিন করার জন্য। সেই মুড়ির প্যাকেট-ই পৌঁছয় মঞ্চে। তারপর লাল ভেলভেটে মোড়া তত্ত্ব সাজানোর ট্রে-তে ঢালা হয় সেই মুড়ি। সেই মুড়ির ট্রে হাতে নিয়েই বিজেপিকে কড়া আক্রমণ করেন মমতা।
একুশের সমাবেশে আসা মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ শোনা তো বটেই বাড়তি লাভ যদি তাঁর বাড়িটা দেখা যায়। সেই উদ্দেশেই জেলা থেকে আসা মানুষজন সকাল থেকেই ভিড় জমালেন কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কাছে। তাঁরা একবার তৃণমূল নেত্রীর ঘর দেখতে চান। যেন তীর্থক্ষেত্র হয়ে ওঠে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর সেই বাড়ি।