গভীরে যাও... আরও গভীরে; ১৪০০ কোটি বছর আগের জগতে ছুটবে দৃষ্টি
আরও গভীরে পৌঁছে ব্রহ্মাণ্ডকে জানা। এর জন্য মহাকাশে এবার হাব্ল-এর চেয়েও কয়েকগুণ শক্তিশালী টেলিস্কোপ পাঠাচ্ছে নাসা। নাম— জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি)। জানা গিয়েছে, আগামী ২২ ডিসেম্বর শক্তিশালী এই টেলিস্কোপ মহাকাশে পাড়ি জমাবে 'আরিয়েন ৫ ইসিএ' রকেটে চেপে। অত্যন্ত শক্তিশালী সেই রকেট উৎক্ষেপণ করা হবে দক্ষিণ আমেরিকার ফরাসি গায়ানা থেকে।
১৯৯০ সালে নাসা মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য হাব্ল স্পেস টেলিস্কোপ পাঠিয়েছিল। ৩১ বছর আগের ঘটনা। এর পর তিন দশকে মহাকাশবিজ্ঞান এগিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। সেই বিন্দু থেকেই আরও এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এবার ব্রহ্মাণ্ডের আরও গভীরে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করা তাই জরুরি হয়ে উঠছে বিজ্ঞানীদের।
সেই উচ্চতর লক্ষ্যেই বানানো হয়েছে এই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। টেলিস্কোপটি বানানোর এই প্রকল্পে নাসার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি, কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি।
মহাকাশ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী অন্তত এক দশক ধরে এই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপই হবে নাসা, এসা, সিএসএ, ইসরো ইত্যাদির মহাকাশ পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার প্রধান অবলম্বন। নাসা'ও বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল। তারা এটিকে তাই 'প্রিমিয়ার অবজারভেটরি ইন স্পেস' বলে উল্লেখ করছে। নাসা জানিয়েছে, মহাকাশে যে জায়গায় এই অবলোহিত রশ্মির টেলিস্কোপটিকে বসানো হবে সেই জায়গাটি পৃথিবী থেকে ১০ লক্ষ মাইল বা ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। উৎক্ষেপণের পর সেই পথ পাড়ি দিতে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের এক মাস সময় লাগবে। আর সেখানে পৌঁছে তার আয়না ও সানশিল্ড ইত্যাদি খুলতে ও অন্যান্য যন্ত্র চালু করতে সময় লাগবে আরও অন্তত মাসছয়েক।
নাসা জানিয়েছে, এই টেলিস্কোপ তাকাবে ১৪০০ কোটি বছর আগের জগতে। প্রায় ১৪০০ বছর আগে ঘটা বিগ ব্যাং বা মহা-বিস্ফোরণের পর থেকে এখনকার সময় পর্যন্ত ঘটে চলা বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তুর উৎপত্তি-বিকাশ-ধ্বংসের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে।
আর এর ফলে এই টেলিস্কোপ সৌরমণ্ডলের জন্মের দিনগুলির কথাও জানতে ও জানাতে পারবে। ভিন নক্ষত্রদের মুলুকে প্রাণ টিকে থাকার পরিবেশ রয়েছে কিনা, জানা যাবে তা-ও। প্রথম প্রজন্মের ছায়াপথগুলি কী ভাবে তৈরি হয়ে উঠেছিল, সেই ইতিহাসও বিজ্ঞানীদের কাছে তুলে ধরতে পারবে এই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ।