`লাইনে আরও ৪...সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকতে পারেন রাজ্যপাল`, বিস্ফোরক দাবি সৌমিত্রর
নিজস্ব প্রতিবেদন : বিস্ফোরক বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। দাবি করলেন, "সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে যেকোনও সময় রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকতে পারেন।" এদিন জলপাইগুড়িতে বিজেপি যুব মোর্চার জেলা কার্যকারিণী সভা ছিল। সেই সভায় যোগ দেন বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সেখানেই এমন দাবি করেন তিনি।
'বঞ্চিত উত্তরবঙ্গ। উদাসীন রাজ্য সরকার।' এই স্লোগানকে সামনে রেখে আগামী ৭ ডিসেম্বর উত্তরকন্যা ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়েছেন বিজেপি যুব মোর্চার লক্ষাধিক সদস্য। তার আগে জলপাইগুড়ি জেলার যুব মোর্চার সভাপতি ও পদাধিকারী নেতাদের ভোকাল টনিক দিতে শনিবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ির দয়াল ভবনে এক জরুরি বৈঠক সারেন তিনি। এরপর সাংবাদিক সম্মেলন তিনি তোপ দাগেন, "উত্তরবঙ্গের তৃণমূল নেতারা এখানকার সাধারণ মানুষের জন্য কিছুই করেনি। এই দীর্ঘ সময়ে তাঁরা খালি নিজেদের পকেট ভরেছেন। এসবের প্রতিবাদে আগামী ৭ ডিসেম্বর আমরা লক্ষাধিক যুব নিয়ে উত্তরকন্যা ঘেরাও করব।"
এরপরই সৌমিত্র খাঁয়ের বিস্ফোরক দাবি, "আগামী এক মাসের মধ্যে তৃণমূল দলটা আর থাকবে না। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে যেকোনও সময় রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকতে পারেন। আপনারা দেখতে পাবেন, রাজ্যপাল আচমকাই হয়তো মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে বলবেন, আপনার ১৪৯ ম্যাজিক ফিগারটি দেখান। সেই সম্ভাবনার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।"
যার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি সাংসদকে প্রশ্ন করা হয়, "শুভেন্দুর মতো আর কোনও হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা লাইনে আছে কি?" যাঁর উত্তরে তিনি বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেস দলের তিন মূল নেতা হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারী। এরমধ্যে মুকুলদা বিজেপিতে এসে গিয়েছেন। তিনি আমাদের নেতা। শুভেন্দু অধিকারীর দিক থেকেও ইতিবাচক সাড়া আমরা লক্ষ্য করতে পারছি। হয়তো আর কয়েকদিনের মধ্যে তাঁকেও আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে দেখতে পাব। এছাড়া সুব্রত মুখোপাধ্যায়, গৌতম দেব, রবি ঘোষ, সৌরভ চক্রবর্তী সহ অনেকেই লাইন দিয়ে আছেন। তাঁরা অস্তিত্ব রক্ষার্থে যেকোনও সময়ে ঝাঁপ দিতে পারেন। তবে তাঁদের নেওয়ার ব্যাপারে সবকিছুই দলে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।"
এই ঘটনায় পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, "তিনি সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়ে এখন মধুচন্দ্রিমা কাটাচ্ছেন। তিনি ভুলে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষকে সাথে নিয়ে দীর্ঘ লড়াই, আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বাম সরকারকে হঠিয়ে এই সরকারকে প্রতিষ্ঠা হয়েছে। মানুষ সাথে আছে। তাই এত সহজে এই সরকারকে হঠানো যাবে না। তাঁর মত ২-৪ জন সুযোগসন্ধানী এদিক-ওদিক ছিটকে যেতে পারে! কিন্তু বাকি যাঁদের নাম বলছেন, তাঁরা কেউই বিজেপিতে যাবেন না।"
প্রসঙ্গত, গতকালই মন্ত্রিত্ব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিতেই তুঙ্গে উঠেছে তাঁর দলবদলের জল্পনার কথা। জোরালো হয়েছে ঘাসফুল থেকে পদ্মফুলে যোগ দেওয়ার জল্পনার প্রসঙ্গ। পাশাপাশি, গতকালই কোচবিহার সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সৌমিত্র খাঁয়ের মন্তব্যে শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।