Cancer Statistics : মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ক্যানসার বেশি হয়, কেনো?
শরীরের নির্দিষ্ট অংশের কোশ যখন অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পায়, তখন তাকে ক্যানসার বলে। এই ক্যানসার কোশ আশপাশের অঙ্গসহ সুস্থ টিস্যুকেও আক্রমণ করতে পারে, ধ্বংসও করতে পারে। প্রতি দুজনের মধ্যে একজন তাঁর জীবদ্দশায় ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। প্রায় ২০০ রকমের ক্যানসার আছে যার মধ্যে স্তন, ফুস্ফুস, মূত্রথলি ও অন্ত্রের ক্যানসারে মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়।তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ক্যানসার হওয়ার সম্ভবনা বেশি। এর নির্দিষ্ট কোন কারণ যদিও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সবথেকে বেশি ক্যানসারে আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে ভারত তৃতীয় স্থানে আছে। ন্যাশনাল ক্যানসার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রামের রিপোর্ট অনুসারে ভারতে প্রতি বছর ১৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। দূষণ, অনিয়মিত জীবন-যাপন, অতিরিক্ত তামাক-অ্যালকোহল সেবন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বৃদ্ধি করছে। কিন্তু মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ক্যানসারের হার কেন বেশি? এর সঠিক যুক্তি এখনও পাওয়া যায়নি। তবে চিকিৎসকদের মতে লিঙ্গের পার্থক্য কীভাবে প্রভাব ফেলছে, তা জানা গেলে ক্যানসারের চিকিৎসায় অনেক বেশি সুবিধা হতে পারে।
২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি রিপোর্ট অনুসারে প্রোস্টেট, ফুসফুস এবং কোলোরেক্টাল ক্যানসার পুরুষদের বেশি হয়। আবার মহিলাদের স্তন, ফুসফুস এবং কোলোরেক্টাল ক্যানসার সর্বাধিক হয়। ক্যানসারে মৃত্যুর হারও মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে বেশি (১৮৯.৫ প্রতি ১০০,০০০ পুরুষ এবং ১৩৫.৭ প্রতি ১০০,০০০ মহিলা)।
জাতীয় ক্যানসার ইন্সটিটিউটের গবেষক, সারা এস জ্যাকসন এবং তাঁর সহকর্মীরা, ৫০-৭১ বছর বয়সী ১৭১,২৭৪ জন পুরুষ এবং ১২২,৮২৬ জন মহিলাকে এই বিষয়ক গবেষণার জন্য বেছে নেন। তাঁরা মোট ২১ ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁরা এই ২১ ধরনের ক্যানসার কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা খতিয়ে দেখেন।
গবেষণা থেকে দেখা যায় একমাত্র থাইরয়েড এবং গলব্লাডারের ক্যানসারের ক্ষেত্রেই মহিলাদের ঝুঁকি পুরুষদের থেকে বেশি। বাকি সবক্ষেত্রেই পুরুষদের ঝুঁকি বেশি (১.৩-থেকে ১০.৮ গুণ)। পুরুষদের মধ্যে খাদ্যনালীর ক্যানসার (১০.৮-গুণ বেশি ঝুঁকি), স্বরযন্ত্র (৩.৫-গুণ বেশি ঝুঁকি), গ্যাস্ট্রিক কার্ডিয়া (৩.৫-গুণ বেশি ঝুঁকি) এবং মূত্রাশয়ের ক্যানসারের (৩.৩-গুণ বেশি ঝুঁকি) সম্ভাবনা অনেক বেশি লক্ষ্য করা হয়েছে।
গবেষণা থেকে অনুমান করা হচ্ছে পুরুষদের কার্সিনোজেনিক এক্সপোজার বেশি হওয়ায় ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। গবেষণার ফলাফল থেকে স্পষ্ট যে লিঙ্গের জৈবিক পার্থক্য - যেমন শারীরবৃত্তীয়, ইমিউনোলজিক্য়াল, জেনেটিক বা অন্যান্য পার্থক্যগুলি ক্যানসারের ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করে।