`মহাদেব শিব এসেছেন!` করোনা তাড়াতে কুসংস্কারে ভর করে `শিল-নোড়া পুজো`, দশগুণ বাড়িয়ে দিল আতঙ্ক
নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গোমূত্র পান, কাঠকয়লা দিয়ে কপালে টিপ দেওয়ার পর এবার শিল-নোড়া 'পুজো'! ভাইরাস মোকাবিলায় মানুষের মনে কুসংস্কার যেন কাটছেই না!
হুগলির শ্রীরামপুরে চন্দ্রমোহন রায় লেনে রবিবার সন্ধ্যায় দেখা গেল, করোনা তাড়াতে শিলের উপর নোড়া দাঁড় করিয়ে পুজোপাঠ চলছে!
প্রথমে চন্দ্রমোহন রায় লেনে ঘোষ বাড়িতে শিল-নোড়া 'পুজো' করা হয়। এলাকায় সেই খবর চাউর হতেই সবাই ভিড় জমায় সেখানে।
অন্ধবিশ্বাসে অনেককে প্রণাম করতে দেখা যায় সেই শিল-নোড়!। কাউকে কাউকে আবার মোবাইলে সেই ছবি ক্যামেরাবন্দি করতেও দেখা যায়।
করোনা মোকাবিলায় কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের কোনও জায়গা নেই। সতর্কতা মেনে চলতে হবে। বার বার চিকিৎসক থেকে বিজ্ঞানীরা একথা বলছেন।
সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রাখতে হবে। ভিড় করা যাবে না। লকডাউন মেনে চলতে হবে। সুস্থ থাকতে নিজেকে ঘরবন্দি থাকতে হবে। করোনা মোকাবিলায় এটাই একমাত্র উপায়।
কিন্তু তারপরেও শিল-নোড়া 'পুজো'র ছবি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে মানুষের মধ্যে এখনও সচেতনতার অভাব কতখানি।
ঘোষ বাড়ির গৃহবধূ চন্দনা দাস দাবি করেছেন, "প্রধানমন্ত্রীর ডাকে রাত ৯টায় মোমবাতি জ্বালানো হয়। বাড়িতে তখন রান্না হচ্ছিল। মোমবাতি জ্বালানো হয়ে যাওয়ার পর শিল-নোড়া ধুতে যাই। ধোওয়ার সময় দেখি নোড়াটি শিলের উপর দাঁড়িয়ে গিয়েছে। হেলালেও হেলছে না! সবাই অবাক হয়ে যায়। বাড়ির লোক বলে, স্বয়ং মহাদেব এসেছেন! এরপরই দুধ দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজো করা হয়।"
এই খবর সামনে আসার পরই এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য চন্দন দেবনাথ। তিনি বলেন, "মাধ্যাকর্ষণ শক্তির ফলেই এটা হয়। এর পিছনে কোনও দৈব বলে কিছু নেই। পুরোটাই অন্ধবিশ্বাস।"
করোনা মোকাবিলায় শ্রীরামপুর ছাড়া চুঁচু্ড়ার বিভিন্ন জায়গাতেও মানুষকে অন্ধবিশ্বাসে ভর করে শিল-নোড়া 'পুজো' করে বলে জানা গিয়েছে।
করোনা তাড়াতে এই কুসংস্কারের ছবি সামনে আসতেই নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এভাবে ভিড় জমানোয় সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ছড়িয়েছে।