Cyclone Biparjoy: অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে `বিপর্যয়`, উত্তাল সমুদ্র! উপকূলে চরম সতর্কতা
অয়ন ঘোষাল: তীব্র গতিতে গুজরাত উপকূলের দিকে ধেয়ে আসতে চলেছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন দুপুরের পর থেকে বিকেলের মধ্যে যে কোনও সময়ে ল্যান্ডফলের আশঙ্কা। যদি আরও দীর্ঘক্ষণ সে সমুদ্রে শক্তি সঞ্চয় করে, তাহলে সম্ভাব্য ল্যান্ডফলের সময় পিছিয়ে শুক্রবার ১৬ জুন সকাল হতে পারে। গুজরাতের কচ্ছ জেলার জাখাউ বন্দরের কাছে বিপর্যয় আছড়ে পড়বে বলে এখনও পর্যন্ত পূর্বাভাস মৌসম ভবনের।
যদিও আছড়ে পড়ার বহু আগে সোমবার থেকেই ‘বিপর্যয়’-এর প্রভাব শুরু হয়ে গিয়েছে কচ্ছ ও সৌরাষ্ট্র উপকূল-সহ গুজরাতের বিস্তীর্ণ এলাকায়। এমনকি সম্ভাব্য ল্যান্ডফল লোকেশনের বহুদূরে মুম্বইয়ের কোলাবা সৈকতে সোমবার বিকেল থেকে তৈরি হয়েছে জলোচ্ছ্বাস পরিস্থিতি। বিপর্যয় পরিস্থিতি সামাল দিতে এদিন থেকেই উপকূলবর্তী এলাকা খালি করতে শুরু করেছে গুজরাত প্রশাসন। ইতিমধ্যে উপকূলের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দাকে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে।
এদিকে, গুজরাটের প্রায় সমস্ত জেলাতেই লাল ও কমলা সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন (IMD)। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, আগামী বৃহস্পতিবার দুপুরের পর যে কোনও সময়ে গুজরাতের কচ্ছ জেলার জাখাউ বন্দরের কাছে আছড়ে পড়বে অত্যন্ত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। ল্যান্ডফলের সময় ‘বিপর্যয়’-এর সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠতে পারে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার থেকে ১৫০ কিলোমিটার। প্রবল বেগে হাওয়ার সঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন মৌসম ভবনের আহমেদাবাদ কেন্দ্রের অধিকর্তা মনোরমা মোহান্তি।
সোমবার সকাল থেকেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। ফলে এদিন সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ উপকূলে কমলা সতর্কতা এবং বুধ ও বৃহস্পতিবার লাল সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। মৎস্যজীবীদেরও আগামী তিনদিন সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বিপর্যয় এড়াতে আগামী বৃহস্পতিবার কচ্ছ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সমস্ত স্কুল, কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে উপকূলবর্তী এলাকায় নামানো হয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (SDRF)। কচ্ছ ও সৌরাষ্ট্র উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। কচ্ছ জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে ১০ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। সেনা, নৌবাহিনী, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (SDRF) ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (NDRF) সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
কচ্ছ উপকূলে ‘বিপর্যয়’ আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলেও ভালসাদ, গির সোমনাথ, ভাবনগর, আমরেলি-সহ অন্যান্য জেলাতেও সোমবার রাত থেকে বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসন কতটা প্রস্তুত, সে ব্যাপারে জানতে সোমবার দিল্লি থেকে ভার্চুয়ালি জরুরি বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মৌসম ভবনের আধিকারিক, গুজরাত প্রশাসনের শীর্ষকর্তা, এনডিআরএফ, এসডিআরএফের কর্তাদের সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
পাশাপাশি, পশ্চিম রেলের সিপিআরও জানিয়েছেন, আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এখনও পর্যন্ত ৬৭টি ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। গুজরাতের উপকূল বরাবর সমুদ্রপথে প্যাট্রলিং শুরু করেছে ভারতীয় উপকূলরক্ষীবাহিনী। মৎসজীবীদের সতর্ক করা হয়েছে এর মধ্যেই। যাঁরা মাছ ধরতে আগেই সমুদ্রে গিয়েছিলেন, তাঁদের ফেরানোর তোড়জোড় তুঙ্গে। মৌসম ভবনের এখনও পর্যন্ত পূর্বাভাস, গুজরাতের মান্ডভি ও পাকিস্তানের করাচির মাঝামাঝি অংশ দিয়ে, সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছের উপর হয়ে বয়ে যাবে 'বিপর্যয়'। ১৫ জুন দুপুরের পরে যেকোনো সময়ে তার ল্যান্ডফল হওয়ার কথা।