Underwater Sculpture Park: সাগরতলে গাছের নীচে দাঁড়িয়ে মানুষ
সাগরতলে মুক্তো মেলে। এই তো চিরকালের বয়ান। এখন অবশ্য আর সাগরতলে শুধু মুক্তো নয়, মিলে যাচ্ছে আস্ত এক মিউজিয়ামও!
হ্যাঁ, এমনই অসম্ভব এক জাদুঘর রয়েছে ভূমধ্যসাগরের তলায়। সাইপ্রাসের উপকূলীয় অঞ্চল আইয়া নাপা'র (Ayia Napa) পেরনেরা সৈকতে গড়ে তোলা হয়েছে এটি। 'দ্য মিউজিয়াম অব আন্ডারওয়ার্ল্ড স্কালপচার ইন সাইপ্রাস' (মুসান) নামের জাদুঘরটি সাড়া ফেলে দিয়েছে।
একটি বাগান। সেখানে সারি সারি গাছ। একটি বড় গাছের ছায়ায় একটু জিরিয়ে নিচ্ছেন এক ব্যক্তি। শহরে-গ্রামে এই দৃশ্য লভ্য। কিন্তু তাই বলে সাগরতলে? এই অসাধ্যসাধন করেছেন চিত্রকর জেসন ডিকেয়ারস টেলর (Jason deCaires Taylor)। মানুষ এবং প্রকৃতির পারস্পরিক সম্পর্কই এই জাদুঘরে তুলে ধরা হয়েছে।
সাগরজলের নীচে গড়ে তোলা এই জাদুঘরটির পিছনের ভাবনা বিষেয়ে শিল্পী টেলর বলেছেন-- প্রকৃতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর বাসস্থান ধ্বংস, পরিবেশ দূষণের মতো বিষয়ে মানুষ যাতে সচেতন হয়, সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই এটা তৈরির চেষ্টা করেছি আমি।
এ কথা সত্য যে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মানবজাতি এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। তাই মানুষের নানা ভাস্কর্যের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
এতে ৯৩টি আর্টওয়ার্ক আছে। এখানে সামুদ্রিক জীবন (marine life) দেখানো হয়েছে। কিছু গাছ আছে স্রেফ ভাসছে! আসলে একটি আর্টওয়ার্ক তার চারপাশের সঙ্গে কী ভাবে সম্পর্ক রচনা করছে, সেটা দেখা বা দেখানোও একটা বড় উদ্দেশ্য এই মিউজিয়মের। এই জাদুঘরে এমন গাছের ভাস্কর্যও রয়েছে, যার ওজন ১৩ টনেরও বেশি!
আসলে সামুদ্রিক জীবনও বহুদিন ধরেই বিঘ্নিত। ভূমধ্যসাগরের ক্ষেত্রে গত ২০ বছরে এই ক্ষতিটা সাঙ্ঘাতিক মাত্রার। ফলে সামুদ্রিক জীবনকে আবার তার মূলগত রূপে ফিরিয়ে দেওয়ার ভাবনাটাও এখানে গুরুত্ব পেয়েছে।
এই জাদুঘরে যে অরণ্যসংসার তুলে ধরা হয়েছে তার একটা ফোকাল পয়েন্টও আছে-- সেটা হল জীববৈচিত্র (biodiversity)।
এই জাদুঘরের নির্মাণ বাবদ ইতিমধ্যে ১১ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে। এর আগে মেক্সিকো ও গ্রানাডায় জলের নীচে গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় একই ধরনের ভাস্কর্য জাদুঘর।