Nitin Chandrakant Desai: স্বপ্নের স্টুডিয়ো গড়াই কাল? বিপুল দেনার দায়ে ক্লান্ত ছিলেন নিতিন
কারজাটে নিজের এনডি স্টুডিয়োতেই আত্মঘাতী 'লগানে'র আর্ট ডিরেক্টর। মুম্বই থেকে মাত্র ৯০ মিনিটের পথ দূরত্বে কারজাটে অবস্থিত এনডি স্টুডিও। সেখানেই মিলল তাঁর নিথর দেহ। কানাঘুষো, খবর দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক অনটন এমনকি স্টুডিও ভাল যাচ্ছিল না। সেই কারণেই এই পথে পা বাড়ান তিনি।
পিটিআইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেসাই ঋণে জর্জরিত ছিলেন। এমনকী পাওনাদারকে ২৫২ কোটি টাকা ঋণ দিতেও পারেননি। এরপরই গত সপ্তাহে দেউলিয়া আদালত তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন গ্রহণ করে।
দেসাইয়ের সংস্থা এনডি'স আর্ট ওয়ার্ল্ড প্রাইভেট লিমিটেড ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে ইসিএল ফাইন্যান্সের কাছ থেকে দুটি ঋণ নেয়। যার পরিমাণ ১৮৫ কোটি টাকা। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ঋণ পরিশোধ নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। NCLT-র নির্দেশে বলা হয়েছে, ২০২০-এর ৩০জুন পর্যন্ত মোট ঋণ খেলাপির পরিমাণ ছিল ২৫২.৪৮ কোটি টাকা।
নোটিস পাস হওয়ার আগে তার জবাবে দেসাইয়ের কোম্পানির তরফে জানান হয় ৭ মে, ২০২১ সালে স্টুডিয়োতে আগুন লাগে। যার ফলে সম্পত্তির ক্ষতি হয়। তারা আরও দাবি করে যে অগ্নিকাণ্ডের দিনেই পাওনা টাকা জমা দেওয়ার নোটিস পাঠানো হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কয়েক মাস আগে এনডি স্টুডিওর দখল নিতে রায়গড়ের জেলা কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আর্থিক পাওনাদারেরা। তবে কেন এই চরম পদক্ষেপ নিলেন শিল্প পরিচালক, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
মুম্বইয়ের গ্ল্যামার জগতে নিতিনের কদর বাড়ে ‘১৯৪২: আ লাভ স্টোরি’ হিট হওয়ার পর থেকে। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাননি বলিউডের নামজাদা আর্ট ডিরেক্টর। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ‘খামোশি: দ্য মিউজিক্যাল’, ‘করীব’, ‘সালাম বম্বে’, ‘দ্য লেজেন্ড অফ ভগৎ সিং’-এর মতো বহু হিট সিনেমা।
পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার। তাঁর সৃষ্টি দিয়েই সেজে উঠত বলিউডের বিগ বাজেট সব ছবি। ‘লগন’, ‘যোধা আকবরের’ মত সেট তিনি নিজের দক্ষতায় সাজিয়েছিলেন। ২০০৫ সালে কারজাটে এনডি স্টুডিও খুলেছিলেন। ৫২ একর এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই জায়গা।
‘দেবদাস’, ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ আর ‘ডক্টর বাবাসাহেব আম্বেদকর’ সিনেমার জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন নিতিন। কেবল বড়পর্দায় নয়, ছোটপর্দার জন্যও একাধিক সেট তৈরি করেছিলেন নীতিন। 'স্লামডগ মিলিওনিয়ার' ছবির জন্য কোন বনেগা ক্রোড়পতির একটি সেট ও তাজমহলের ভিতরের একটি সেট তৈরি করেছিলেন তিনি।
দীর্ঘ সময় আর্ট ডিরেকটর ও প্রোডাকশন ডিজাইনার হিসেবে কাজ করার পর, দেসাই ছবি পরিচালনা ও প্রযোজনাতেও হাত দেন। ২০০৩ সালে তিনি 'দেশ দেবী মা আশাপুরা' ছবিটি প্রযোজনা করেন। শুধু সিনেমা নয়, দেসাই টিভি সিরিয়ালও প্রযোজনা করেছিলেন। দেসাইয়ের প্রযোজনায় মারাঠি সিরিয়াল 'রাজা শিবছত্রপতি' ব্লকব্লাস্টার হয়।
সেট ডিজাইন থেকে প্রোডাকশন যে দক্ষতার সঙ্গে সামলাতেন সবকিছু। কাজ করেছেন, নানা বিখ্যাত পরিচালকের সঙ্গে। সেই তাঁকেই স্টুডিওতেই তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।