Puja 2021: অদ্বৈত আচার্যের সময় থেকেই চলে আসছে এই কাত্যায়নী দুর্গাপুজো!
শান্তিপুর মানেই তাঁতের শহর। শান্তিপুর মানেই ভাঙা রাস। তবে রাস উৎসবের পাশাপাশি এ শহরের আনাচে কানাচে লুকিয়ে রয়েছে প্রাচীন সব দুর্গাপুজোর ইতিহাস। এখানকার গোস্বামী বাড়িগুলিতে রয়েছে দুর্গাপুজোকে ঘিরে বিভিন্ন লোককথা।
যেমন শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়ির দুর্গাপুজো। শতাব্দীপ্রাচীন এই দুর্গাপুজোয় দেবীর নাম কাত্যায়নী। কবে থেকে শুরু হয়েছিল এই পুজো তার ঠিক সময়কাল জানা যায় না। তবে অদ্বৈত আচার্যের সময় থেকেই এই পুজোর প্রচলন বলে মনে করা হয়।
এই গোস্বামী বাড়ির প্রায় কয়েক শতাব্দী প্রাচীন একটি কৃষ্ণমূর্তি চুরি যায়। চিন্তিত হয়ে পড়েন পরিবারের সকলে। অনেক খোঁজাখুজির পর মূর্তি না পেয়ে বাড়ির মহিলারা শুরু করেন কাত্যায়নী ব্রত। ব্রত চলাকালীন তিনদিনের মাথায় স্বপ্নাদেশ মেলে শান্তিপুর থেকে খানিকটা দূরে নগরের মধ্যে রয়েছে এই মূর্তি। খবর পেয়ে পরিবারের লোকেরা গিয়ে উদ্ধার করেন মূর্তি।
পরিবারের অন্যতম সদস্য সত্যনারায়ণ গোস্বামী বলেন, পুরাণে কথিত আছে, চুরি হওয়া জিনিস উদ্ধার করতে গেলে কাত্যায়নী ব্রত করার প্রয়োজন। সেই মোতাবেক বাড়ির মহিলারা এই ব্রত শুরু করেন এবং শুরু করার পরেই মূর্তিটি ফিরে পান। এর পর থেকেই এ বাড়িতে শুরু হয় কাত্যায়নী দুর্গাপুজো।
বৈষ্ণবরা যেহেতু শান্তির উপাসক, তাই দেবী দুর্গার হাতে এখানে কোনও অস্ত্র থাকে না। দশ হাতের মধ্যে আট হাত ছোট এবং দুটি হাত বড়। হাতগুলি এখানে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। লক্ষ্মী গণেশ কার্তিক সরস্বতীর ছবি থাকে। এখানে ব্যবহার করা হয় শ্বেতবর্ণ সিংহ।
গোস্বামী বাড়ির সূত্রে জানা যায়, কোন পুঁথিগত নিয়মের বলে সেই সময়ে এই দুর্গাপুজো শুরু হয়নি। সম্পূর্ণ নিজস্ব ভাবনার মধ্যে দিয়েই এ বাড়ির পূর্বপুরুষ এই কাত্যায়নী দেবী দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। পুজোর চারদিনে ৩৬ রকমের ভোগ দিয়ে পুজো দেওয়া হয় এখানে। বাড়ির দীক্ষিত মহিলারাই এই পুজোর সব আচার-অনুষ্ঠানে যুক্ত থাকেন।