Durga Puja 2021: দ্বিতীয় স্বপ্নে দেবী বললেন, এখানে আমারও আরাধনা কর! শুরু হল পুজো
প্রথমে লক্ষ্মীপুজো, তারপর সেই লক্ষ্মীপুজোর হাত ধরেই শুরু দুর্গাপুজো। হাওড়ার আমতার জয়পুরের অমরাগড়ির রায় পরিবারের এই পুজো এখন তিনশো বছর পেরিয়েছে।
কথিত আছে, ১১২৬ সালে বর্ধমান রাজপরিবারের বংশধর শান্তিমোহন রায় বাণিজ্য করতে যাচ্ছিলেন রূপনারায়ণ নদী দিয়ে। বাণিজ্য করতে যাওয়ার পথে তিনি আমতার জয়পুরের এই এলাকায় নোঙর করেন রাত্রিযাপনের জন্য। তখন এ অঞ্চল দিয়েই বইত রূপনারায়ণ (এখন তা সরে গিয়েছে)। সেদিন নদীতীরে রাত্রিবাসের সময়ে শান্তিমোহন স্বপ্নাদেশ পান-- এই এলাকায় গজলক্ষী পুজো করতে হবে। এর পরই গজমাতা দেবীর মন্দির তৈরি করে সেখানে লক্ষ্মীপুজোর সূচনা করেন শান্তিমোহন। কিন্তু ঘটনার এখানেই শেষ হয় না। শান্তিমোহন আবারও এক স্বপ্নাদেশ পান। সেই স্বপ্নে দেবী তাঁকে বলেম-- 'ওই একই জায়গায় আমারও আরাধনা করো।' অর্থাৎ, দুর্গার আরাধনা করার নির্দেশ আসে। শুরু হয় সেই পুজোও।
তখন থেকেই ধীরে ধীরে আমতার ওই অঞ্চলে বসতি গড়ে তোলেন শান্তিমোহন। কালের করালগ্রাসে চলে গেছে গজমাতা মন্দির বা পুরনো রায়বাড়ি। আজ সেগুলি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত। তবুও তার স্মৃতি আজও অমলিন।
ইদানীং এস্টেটের মাধ্যমে পুজো হয়। তৈরি হয়েছে রায় পরিবারের নতুন বাড়ি ও দুর্গামঞ্চ। পুজোর রীতিনীতি আচার-অনুষ্ঠানে কোনও পরিবর্তন হয়নি। এই পুজোর বিশেষত্ব হল, এখানে মা দুর্গার চামুণ্ডা অর্থাৎ রুদ্রমূর্তির পুজো হয়।
রায়বাড়ির যে কোনও উৎসব শুরু হয় প্রতিপদ থেকে। সেই মতো মহালয়ার পরদিন থেকেই শুরু হয় এই বাড়ির দুর্গাপুজো। পাশাপাশি উৎসব উপলক্ষে বাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়ণ করা হয় বাড়ির মহিলাদের হাতে তৈরি নারকেল নাড়ু দিয়ে।
পুজোর জৌলুস অনেকটাই কমেছে। বহুদিন আগেই বিশেষ কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বলিপ্রথাও। কর্ম ও ব্যবসাসূত্রে পরিবারের যে সব সদস্য বাইরে থাকেন, তাঁরা পুজোয় যোগ দিতে আসেন।
পাশাপাশি লোক খাওয়ানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থিক সঙ্কটের কারণে পুজোর জাঁকজমক অনেকটাই কমেছে। কিন্তু ঐতিহ্য, রীতিনীতি ও আন্তরিকতায় কোনও খামতি নেই।