Durga Puja 2021: মুখ কালো, গায়ের রং বাদামি! এই রূপেই মা পূজিত হচ্ছেন ক্যানিংয়ের ভট্টাচার্য পরিবারে

Soumitra Sen Thu, 30 Sep 2021-5:25 pm,

৪৩৬ বছরের দুর্গাপুজো ওপার বাংলার পুজোকে এপার বাংলায় ধরে রেখেছেন ক্যানিংয়ের বনেদি বাড়ির ভট্টাচার্য পরিবার। এপার বাংলায় তাদের ৮০ তম বর্ষ এ বছরের পুজো। মায়ের মুখ কালো আর গায়ের রং বাদামি রূপে পূজিত হচ্ছে ক্যানিংয়ের ভট্টাচার্য পরিবারে দুর্গাপুজো। মায়ের স্বপ্নাদেশে এভাবেই পুজো করে আসছেন এই পরিবারের সদস্যরা।

 

জানা যায়, অতীতে বনেদি বাড়ির ভট্টাচার্য পরিবার বসবাস করত বাংলাদেশের বিক্রমপুরের বাইনখাড়া গ্রামে। সেখানে ভট্টাচার্য পরিবাররা ধুমধাম করে এই দুর্গা পুজ করত। কিন্তু ২৩০ বছর আগে  হঠাৎ একদিন পুজোর সময় ঘটে যায় অঘটন। দুর্গামন্দিরের পাশে থাকে মনসা মন্দির। আর পরিবারের রীতি অনুযায়ী আগে মনসা মন্দিরে পুজো হবে, তার পরে হবে দুর্গার পূজা। সেই রীতি অনুযায়ী ঠাকুরমশাই মনসা মন্দিরে পুজো সেরে ফিরে আসার পর দুর্গা মন্দিরে যখন মায়ের পুজো শুরু করেন, সেই সময় হঠাৎ একটি কাক মনসামন্দিরের প্রদীপের সলতে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় সলতে গিয়ে পড়ে দুর্গামন্দিরে খড়ের চালে। এরপর সেই সলতের আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায় গোটা মন্দির এবং প্রতিমা।

তারপর পরিবারের সদস্যরা ভাবে মা হয়তো আর পুজো চাইছে না। সেই কারণে পুজো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় ভট্টাচার্য পরিবার। কিন্তু পরের বছরের পুজোর আগেই ওই পরিবারের  সদস্যকে স্বপ্নাদেশে মা জানান, তাঁর পুজো করতে হবে। কিন্তু মায়ের মুখের রং হবে কালো ও গায়ের রং হবে বাদামি। সেই বছর থেকেই  সেইভাবে মায়ের মুখের রং কালো ও গায়ের রং বাদামি হিসেবেই প্রতিমা তৈরি ও পুজো হয়ে আসছে ভট্টাচার্য পরিবারে।

আরও জানা যায়, বেশ কিছু বছর ধরে এই ভাবে দুর্গাপুজো হওয়ার পরে কোনও কারণবশত বাংলাদেশ থেকে ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্যরা চলে আসে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ক্যানিংয়ে। ক্যানিং এক নম্বর দিঘিরপাড় এলাকায় ভট্টাচার্য পরিবাররা নতুন ভাবে বসবাস করতে থাকেন। আর সেখানেই দুর্গা মন্দির স্থাপন করেন। আর বাংলাদেশ থেকে নদীপথে দুর্গা মায়ের কাঠামো নিয়ে চলে আসে। আর সেই কাঠামোতেই দুর্গাপুজো হয় একই রীতি মেনে।

পরিবারের রীতি অনুযায়ী জন্মাষ্টমীর দিনে প্রতিমার ৪৩৬ বছরের কাঠামোর গায়ে মায়ের মাটি উঠে যায়। আর মহালয় দিনে মায়ের চক্ষুদান হয়।

পুজোয় আগের মতো জাঁকজমক না হলেও পুজোয় রীতিনীতি ভট্টাচার্য পরিবাররা একই ভাবে পালন করে আসছে। পুজোর পাঁচদিনের মধ্যে বলিদান থাকে। সেই বলির মধ্যে রাখা হয় চালকুমড়োর সঙ্গে ফল। মহালয়ার দিনে ১০০ নারিকেলের নাড়ু তৈরি হয়। সেই নাড়ু পাঁচদিন ধরে চলা মায়ের পুজোয় ফলমিষ্টি ভোগে দেওয়া হয়। পিতল দিয়ে তৈরি মায়ের সমস্ত অস্ত্র ৪৩৬ বছরের পুরনো। সেই অস্ত্রই পরিয়ে দেওয়া হয় মায়ের হাতে। জানা যায়, এই পুজো দেখতে ক্যানিং এসেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার, এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথের পরিবারও। এখনও এ পুজোয় দূরদূরান্ত থেকে অনেকে আসেন। 

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link