Durga Puja 2021: একদা সুভাষচন্দ্রও এসেছিলেন এই ঘোষবাড়িতে

Soumitra Sen Thu, 23 Sep 2021-10:03 pm,

আদতে অজয় ও দামোদর নদের মধ্যবর্তী গোপভূমে ছিল ঘোষ জমিদারদের আদি বসবাস। তাঁদের সেই বাড়িতে দুর্গা পুজোও হত। কিন্তু বর্গি হানা শুরু হলে এই বাড়ির ভবানীচরণ ঘোষ কষ্ঠি পাথরের রাধাকৃষ্ণ মূর্তি নিয়ে চুঁচুড়ায় চলে আসেন। সময়টা ১৭৫০ সাল। 

 

হুগলির চুঁচুড়ায় এসে বসবাস শুরু ঘোষেরা। নতুন ভদ্রাসনে রাধাকৃষ্ণের পুজোর পাশাপাশি দোল ও জন্মাষ্টমী উৎসব হত তাঁদের বাড়ি। কৃষ্ণের জন্য বড় দালান তৈরি হয়। দুর্গাদালানও তৈরি হয় ১৭৯১ সালে। গোপভূমে শুরু করা পূর্বপুরুষদের দুর্গা পুজো এখানে ভবানীচরণের হাত ধরেই হতে থাকে। প্রায় চারশো বছর বয়স এ পুজোর। দুর্গাপুজো ছাড়াও বাসন্তী পুজো, রথযাত্রা ইত্যাদিও আয়োজিত হয় ঘোষ বাড়িতে।

ভবানীচরণের উত্তরসূরি আশুতোষ ঘোষ দুটি বিবাহ করেছিলেন। তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর বাপের বাড়িতেও দুর্গা পুজো হত। সেই পুজোই পরে আশুতোষের বাড়িতে চলে আসে। ঘোষেদের ছোট বাড়িতে চলতে থাকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির পুজো। সেই পুজোর বয়সও প্রায় তিনশো বছর। বর্তমানে দুটি দুর্গা পুজোই হয় একই রীতি মেনে। ভাদ্রমাসের শেষ দিনে কাঠামোয় খড় বাঁধা দিয়ে শুরু হয় প্রতিমা গড়ার কাজ। 

 

এ বাড়ির পুজোয় দেওয়া হয় ১ মণ চালের নৈবেদ্য, ১০০৮টি বেলপাতার আহূতি। ঘোষবাড়ির পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য কুমারী পুজো। কুমারী পুজো এখানে সন্ধিপুজোয় না হয়ে হয় দশমীতে। দশমীর দিন কুমারী পুজো করে তার মধ্যে মা দুর্গাকে প্রতিষ্ঠা করে তার পর মাটির মূর্তি বিসর্জন দেওয়া হয়। পরিবারের পূর্বপুরুষরা মনে করতেন, দেবী দুর্গা তাঁদের ঘরেরই মেয়ে, তাঁর বিসর্জন হয় না। তাই তাঁকে কুমারীর মধ্যে ধরে রাখা হয়। আজও সেই রীতিই মেনে চলছে বর্তমান প্রজন্ম।

ব্রিটিশরাও ঘোষবাড়ির পুজো দেখতে আসত। এ বাড়িতে একদা এসেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও। ১৯৩৯ সালে বলাইলাল ঘোষ হুগলি চুঁচুড়া মিউনিসিপ্যালিটির কমিশনার ছিলেন। তাঁর আতিথ্যেই নেতাজি ঘোষবাড়িতে এসেছিলেন। নেতাজি যে ইজিচেয়ারে বসেছিলেন, সেটি আজও আছে এ বাড়িতে।

এক সময় চুঁচুড়ায় গঙ্গাপাড়ে বিরাট এলাকা জুড়ে জমিদারি ছিল ঘোষেদের। কালের নিয়মে জমিদারি গেছে। এখন পরিবারের সদস্যরা কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল, কেউ অধ্যাপক হয়ে প্রতিষ্ঠিত। 

 

আগের চেয়ে লোকবল কমেছে। দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ার জন্য মাথা খুঁজে পাওয়াই কঠিন। তবে বর্তমান প্রজন্মের ছেলেরা নতুন উদ্যমে পুরোনো ঐতিহ্যকে ধরে রাখার চেষ্টা করে চলেছে। 

 

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link