কোভিড-H3N2 এর জোড়া সংক্রমণে আতঙ্ক, উপসর্গ দেখে চিনবেন কীভাবে? কোনটি বেশি বিপজ্জনক?
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশে অত্যন্ত সংক্রামক টাইপ A ইনফ্লুয়েঞ্জা- H3N2 ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কোভিডের সংক্রমণও। ১২৯ দিন পর দেশে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১০৭১ জন। এখন দুই ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষেত্রেই শরীরে সর্দি-জ্বরের উপসর্গ দেখা দেয়। ফলে প্রশ্ন উঠছে, কী করে বুঝবেন কোন ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে? কোভিড নাকি H3N2 ভাইরাস?
প্রসঙ্গত, দুধরনের ভাইরাস-ই 'রেসপিরেটরি ইলনেস' ক্যাটেগরির। পাশাপাশি, এই দুই ভাইরাস-ই বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়। তবে কিছু উপসর্গে মিল থাকলেও, দুই ভাইরাস দেহে সংক্রমণ ঘটায় ভিন্নভাবে। কোভিড যেখানে আপার ও লোয়ার রেসপিরেটরি ট্র্যাকে সংক্রমণ ঘটায়, সেখানে H3N2 ভাইরাসের সংক্রমণে শুধু আপার এয়ারওয়ে উপসর্গ দেখা যায়। যেমন, নাগাড়ে কফ, মাথাব্যথা, জ্বর, সাইনাসের ব্যথা। জ্বর কমে গেলেও, কফ থেকে যায় ২ থেকে ৩ সপ্তাহ। সেখানে কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে জ্বর ও কফ থাকতে পারে সপ্তাহের পর সপ্তাহ। যার ফলে নাগাড়ে কাশি ও গলাব্যথা হয়।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ইনকিউবেশন পিরিয়ড খুবই স্বল্প। সাধারণ ভাইরাল সংক্রমণের মত-ই। কোভিডের থেকে অনেক তাড়াতাড়ি শরীরে H3N2 সংক্রমণের উপসর্গ দেখা যায়। H3N2 ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১ থেকে ৪ দিন। আর রোগী এক্ষেত্রে আপার রেসপিরেটরি উপসর্গগুলি লক্ষ্য করতে পারে। অন্য়দিকে কোভিডের ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১ থেকে ১৪ দিন। শরীরে দুই ভাইরাসের সংক্রমণই ধরা পড়ে সোয়াব টেস্টে।
কোভিড আপার ও লোয়ার দুই রেসপিরেটরি ট্র্যাকেই সংক্রমণ ঘটায়। যার ফলে ভীষণরকম বুকে ব্যথা, শরীরে অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়া, স্বাদ-গন্ধ চলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট প্রভৃতি উপসর্গগুলি দেখা যায়। অন্যদিকে H3N2 ভাইরাস সংক্রামিত রোগীদের ক্ষেত্রে জ্বর, কফ ও পেশিতে যন্ত্রণা হয়।
প্রথমে না থাকলেও, পরবর্তীতে কোভিডের সংক্রমণের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন ভ্যাকসিন এখন বাজারে রয়েছে। যেগুলি নির্দিষ্ট পরিমাপ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে সেই ডোজ নিতে হয়। অন্যদিকে, H3N2-র সংক্রমণ মোকাবিলার জন্য রয়েছে ফ্লু ভ্যাকসিন। উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালে আমেরিকায় প্রথম H3N2 ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। তখন থেকে পরিবেশেই রয়েছে এই ভাইরাস। আর কোভিডের সংক্রমণ প্রথম ঘটে চিনের ইউহান প্রদেশে ২০১৯-এ।
প্রশ্ন হচ্ছে, কোভিড ও H3N2 ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মধ্যে কোনটি বেশি বিপজ্জনক? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, H3N2 ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ যেমন মাইল্ড হতে পারে, তেমনই আবার ভয়ানকও হতে পারে। যাতে জীবন সংশয় পর্যন্ত ঘটতে পারে। মারণক্ষমতার দিক দিয়ে দুই ভাইরাস-ই সমান। কারণ দুই ভাইরাসের সংক্রমণেই হতে পারে প্রাণঘাতী নিউমোনিয়া। বিপজ্জনকভাবে কমে যেতে পারে শরীরে অক্সিজেনের লেভেল। যদি সময়ে চিকিত্সা না হয়, তবে তা বিপদ ডেকে আনতে পারে। যদিও বিশেষজ্ঞরা আবার এটাও বলছেন যে, H3N2 ব্যাপকভাবে সংক্রামক হলেও তার মর্টালিটি রেট কোভিডের থেকে তুলনামূলকভাবে কম।