Halder Group: চালে-তেলে স্পর্ধার ১০০ বছর হালদারের! বিশ্বের দরবারে আজ বুক চিতিয়ে বাঙালিয়ানা
বাঙালি নাকি ব্য়বসা করতে পারে না! এই বদনাম ঘুচিয়ে যারা বঙ্গজ ঔদ্ধত্য়ে বিশ্বের দরবারে নিজেদের শো-কেস করছে, তাদের মধ্য়ে অন্য়তম হালদার গ্রুপ । ১৯২৪ সালে বাংলায় মাত্র একটি কারখানা নিয়ে পথচলা শুরু করেছিল হালদার। আজ ১০০ বছর পর এই চাল এবং ভোজ্য তেল উত্পাদন কোম্পানির পৌঁছে গিয়েছে বিশ্বের ১৭টি দেশ! সিঙ্গাপুর, বেনিন, লোমে, ঘানা, ক্যামেরুন, রাশিয়া এবং বাংলাদেশে এই বাঙালি সংস্থা বুক ফুলিয়ে ব্য়বসা করেছে। গত শুক্রবার বাইপাসের ধারের এক পাঁচতারা হোটেলে হালদার গোষ্ঠী তাদের শতবর্ষ উদযাপন করল।
অনুষ্ঠানে প্রথমসারির শিল্পপতি থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক সহযোগী, অংশীদার এবং সংস্থার কর্মচারীরা ছিলেন। হালদার গ্রুপের উত্তরাধিকারকে সম্মান জানানোর সঙ্গেই আগামীর রূপরেখাও লেখা হল। এই বাংলার প্রাণবন্ত শিল্প, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত ও খাওয়াদাওয়া যেমন এই সন্ধ্য়ার অংশ ছিল, তেমনই ছিল এক দুরন্ত প্যানেল ডিসকাশন। শিল্পপতিদের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল কৃষির ভবিষ্যত। ২০৪৭ সালের মধ্য়ে কৃষিতে কীভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবদানের প্রভাব পড়বে, সে দিকেও আলোকপাত করলেন তাঁরা। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা প্রদান করার কথা বললেন শিল্পদুনিয়ার মানুষরা, যাতে ভবিষ্যত প্রজন্মের খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টি তৈরির অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত ভিত্তিগুলি বজায় থাকে।
প্রভাত বললেন, 'আমাদের শতবর্ষ কোনও মাইলফলকের চেয়েও বেশি। আমাদের এই যাত্রা যারা রূপদান করেছে, তাদের সকলের স্থিতিস্থাপকতা, আত্মনিবেদন এবং একটাই ভিশনের কথা বলছে। ১৯২৪ সালে বাংলায় মাত্র একটি কারখানা দিয়ে পথচলা শুরু করেছি। আজ গ্লোবাল এন্টারপ্রাইজ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমাদের শতবর্ষ উদযাপন শুধুই আমাদের বৃদ্ধি নয়। সেই প্রজন্মের কথাও বলছে যাদের কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠায় এই উত্তরাধিকার গড়ে উঠেছে। আমরা এগিয়ে যাব এবং পথ দেখাব।'
কেশব বললেন, 'এই শতবর্ষ উদযাপন শুধুই সময়ের চিহ্নিতকরণ নয়। তার চেয়েও বেশি। মূল্যবোধ এবং যে দৃষ্টিভঙ্গি আমরা বহন করে চলেছি, তা সংখ্য়া দিয়ে পরিমাপ সম্ভব নয়। দেশে এবং বিশ্বে আমরা সম্পর্ক তৈরি করেছি, বিশ্বাস অর্জন করেছি। ১৭টি দেশে পৌঁছে গিয়েও আমাদের ফোকাস কিন্তু বদলায়নি। আমাদের সংস্কৃতি এবং নীতি ধরে রাখাই হালদার গ্রুপকে সংজ্ঞায়িত করে। আজ আমরা এমন এক সংস্থা যারা মানুষ, সম্প্রদায় এবং বিশ্বকে নিয়ে বেড়ে ওঠে।'
চন্দ্রশেখর বললেন, 'হালদার গ্রুপের শতবর্ষের উদযাপনের অংশ হতে পেরে রোমাঞ্চিত। সারা বিশ্বের কৃষি এবং ব্যবসার ভবিষ্যত এক্সপ্লোর করছি আমরা। গত এক দশকে এই অঞ্চলে উদ্যোক্তাদের বিকাশ ঘটেছে। উদ্ভাবন এবং সম্প্রদায়ের চেতনা দ্বারা তা উদ্দীপিত হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানটি ভিশন, অধ্যবসায়ের। নিছক উদযাপনের বাইরে গিয়ে এটি আমাদের মনে করিয়ে দিল যে, বৃহত্তর সম্ভাবনাগুলি তৈরি হয় আমাদের ঐতিহ্যকে সম্মান করেই। এভাবেই এগিয়ে যেতে হয়। এসবই সেলিব্রেশেনের উপর।'
হালদার গ্রুপ আগামী প্রজন্মের কাছে বাংলার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আলোকবর্তিকা হিসাবে নিজেদের আসন পাকা করেছে। সুস্থ জীবনধারাকে উত্সাহিত করার সঙ্গেই স্থায়িত্ব এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রচারেও নিবেদিত। সিদ্ধ চাল, সাদা চাল, ভিয়েতনামি চালের মধ্য়ে ভোজমতী, ভোজ, মতি, হীরা, তুমি, ডিভা বেশ জনপ্রিয়। ভোজ্য় তেলের মধ্য়ে ওদানা ও ওমানাও নজর কেড়েছে।