Kali Puja 2024: সেই নারীকে আক্রমণ করতেই তিনি স্বয়ং কালী রূপ ধারণ করলেন! পড়ুন ডাকাতে কালীর অবিশ্বাস্য কাহিনি...
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রাচীন কাল থেকেই কালীপুজো ও তন্ত্রসাধনার সঙ্গে ডাকাতির এক সুনিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। সেই আদিকাল থেকেই ডাকাতদল ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে কালীপুজো করেতেন। এক সময় রাতের গভীর অন্ধকারে ডাকাতদের গোপন আস্তানায় চলত মা কালীর আরাধনা। কথিত আছে, পুজোয় বলি দেওয়া হত পাঁঠা থেকে মানুষ, সবই।
কথিত আছে, এক কালে বর্ধমানের আউশ গ্রাম ও তার আশেপাশের গ্রামের লোকজন রাত কাটাতেন ভয়ে ভয়ে। মেটে পাড়ার ডাকাতদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন গ্রামবাসীরা। এক এক করে স্থানীয় সমস্ত জমিদারেরা একজোট হয়ে পাল্টা হামলা করেন ডাকাত দলের উপরে। তখন নাকি মা কালী তাদের রক্ষা করেন। এরপরই সেখানে বেড়ে যায় কালী পুজোর রমরমা।
কলকাতার বহু প্রাচীন ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি পুজো। কথিত আছে ১৭০৩ সালে এই মন্দির তৈরি হয়েছিল। তখন ব্রিটিশ পিরিয়ড। সেই সময় এই সমস্ত এলাকা ছিল জঙ্গলে ঢাকা। শোনা যায়, গ্রামে সেই সময় থাকতেন ধনী জমিদাররা। তাই বারবার গ্রামের ভেতর ঢুকত ডাকাতদল। এইমত পরিস্থিতিতে ডাকাতদের হাত থেকে বাঁচতে সেই সময় মন্দিরের ঘণ্টা বাজান হত। সেখান থেকে এই মন্দিরের নাম হয় ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি।
পূর্ব বর্ধমানের পান্ডুক গ্রামে ডাকাত সর্দার প্রহ্লাদের হাতে প্রতিষ্ঠিত এই বামা কালী মন্দির। লোকমুখে শোনা যায়, কোন এক সময়ে একবার কেতু গ্রামের রাম-সীতা মন্দিরে ডাকাতি করতে গিয়ে এক মহিলাকে আক্রমণ করে ডাকাত দলের এক জন। জানা যায়, এর পরেই সেই মহিলা কালী রূপ ধারণ করেন। এই ঘটনার পরেই ডাকাত সর্দার স্থাপন করেন বামা কালীর মন্দির।
কুখ্যাত ডাকাত মনোহর বাগদি এই মন্দির বানিয়েছিলেন। এমন তার দৌরাত্ম যে স্থানীয় জমিদারদের পাশাপাশি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকেও নাজেহাল করে ছেড়েছিল। ১৮৯১ সালে এই মন্দির বানানো হলেও মনে করা হয় মন্দিরের কালীমূর্তি কষ্ঠি পাথরের তৈরি যা মন্দিরের থেকেও বেশি পুরনো।
সিঙ্গুরের কালী পুজোর ইতিহাসে রয়েছে এই পুজো। স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশের বিরোধিতা করতে জমিদার বাড়িতে চলত ডাকাতি। সেই সময় এলাকার ত্রাস হয়ে ওঠেন গগন ডাকাত। কথিত আছে, এক সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণ দেবকে হুগলিতে দেখতে যাচ্ছিলেন সারদা মা। গগন ডাকাতের কবলে পড়েন তাঁরা। তখনই নাকি আশ্চর্য ভাবে সারদা মায়ের মধ্যে মা কালীকে দেখতে পান গগন ডাকাত। তারপর থেকেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন কালী মন্দির।
হুগলির জিরাটে কেলে ডাকাত প্রতিষ্ঠা করেন এই ডাকাত কালীর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকার পুজোর নামও কালীগড় থেকে কেলেগড় হয়ে গিয়েছে। শোনা যায়, এই এলাকার জমিদার কালিচাঁদ নাকি রাতে মায়ের পুজো করে ডাকাতি করতে বেরোতেন।
রঘু ডাকাতের নাম প্রায় সবাই শুনেছেন। হুগলির বাঁশবেড়িয়া অঞ্চলের ত্রাস ছিলেন রঘু ডাকাত। তাঁর নাম ছিল কালীভক্ত হিসেবেও। বাসুদেবপুরে মা কালী ও ত্রিবেণীতে ডাকাত কালীর পুজো শুরু তাঁর হাতেই।
এই দেবী কালী নন, দুর্গা। কিন্তু ডাকাতদের দেবী। তাঁকে আরাধনা করা ডাকাতের নাম চিতু বা চিত্তেশ্বরী রায়। ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে চিতু ডাকাত ষোড়শোপচারে দেবীর পুজো করতেন।