সিন্ধু চুক্তি মেনে পাকিস্তানকে পাঠানো জলে হেরফের হচ্ছে না, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের হকিকত?

Thu, 21 Feb 2019-11:56 pm,

উরি হামলার পর প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, রক্ত আর জল একসঙ্গে বইতে পারে না। তখন সিন্ধু জল চুক্তি বাতিলের কথাও উঠে আসে। এ বার পুলওয়ামা-কাণ্ডের পর জল নিয়েই কড়া পদক্ষেপ করল দিল্লি। তিনটি নদীর জল যমুনায় ফেলা হবে বলে উত্তরপ্রদেশের একটি অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেছেন নিতিন গডকড়ী। প্রশ্ন উঠছিল, তাহলে কি সিন্ধু জলচুক্তি ভঙ্গ করতে চলেছে ভারত সরকার? না এমন কিছুই হচ্ছে না।    

এ দিন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ী টুইটে জানান, ''প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের ভাগের জল পাকিস্তানে যাওয়া আমরা বন্ধ করে দেব। পূর্বের নদীগুলির জলধারা আমরা জম্মু-কাশ্মীর ও পঞ্জাবের দিকে নিয়ে যাব। ইরাবতীতে বাঁধ তৈরি কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। উঝ নদীর ওপর বাঁধ তৈরি হয়ে গেলে জম্মু-কাশ্মীরের জন্য জল ধরে রাখা যাবে। বাকি জল ইরাবতী-বিপাশা সংযোগ পথে অন্য রাজ্যে চলে যাবে''। 

১৯৬০ সালে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় সিন্ধু জল চুক্তি সই করে ভারত-পাকিস্তান। চুক্তি অনুযায়ী পূর্বের ৩ নদী অর্থাত্ পঞ্জাবের উপর দিয়ে বয়ে চলা ইরাবতী, বিপাশা, শতদ্রুর জলে ভারতের নিয়ন্ত্রণ। আর পশ্চিমের ৩ নদী সিন্ধু, চন্দ্রভাগা, বিতস্তার জলে নিয়ন্ত্রণ পাকিস্তানের। 

মানস সরোবর থেকে উত্‍পন্ন হয়ে কাশ্মীরে মধ্য দিয়ে পাকিস্তানে গিয়ে পড়েছে সিন্ধু নদী। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পাকিস্তানের মাঝ বরাবর প্রবাহিত হয়ে আরব সাগরে শেষ হয়েছে যাত্রা। সিন্ধু জল চুক্তি অনুযায়ী, ইরাবতী, বিপাশা, শতদ্রুর জল ভারত ব্যবহার করে।

ইরাবতী, বিপাশা, শতদ্রুর প্রায় ৯৩-৯৪% জল ভারত কাজে লাগানোর পর বাকি জল চলে যায় পাকিস্তানে। ইরাবতী, বিপাশা, শতদ্রুর অব্যবহৃত জলের পাকিস্তানে চলে যাওয়া আটকাতে চাইছে দিল্লি। 

 

ফলে সিন্ধু চুক্তি ভঙ্গ করার পথে হাঁটছে না ভারত সরকার। চুক্তি অনুযায়ী চলছে তারা। শুধুমাত্র অতিরিক্ত জল আটকানো হচ্ছে।  

জল নষ্ট যাতে না হয়, সেজন্য ইরাবতীর ওপর শাহপুর-কান্দি বাঁধ, উঝ নদীর ওপর বাঁধ এবং পঞ্জাবে ইরাবতী-বিপাশার সংযোগ তৈরির কাজে হাত দিয়েছে ভারত। এইসব প্রকল্পেই এদিন গতি আনার ওপর জোর দিয়েছেন গড়কড়ী। 

জলসেচ প্রকল্পের জেরে লাভবান হবে পঞ্জাবের ৫০০০ হেক্টর ও জম্মু-কাশ্মীরের ৩২,১৭২ হেক্টর জমি। অদক্ষ শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কর্মদিবস তৈরি হবে ৬.২ লক্ষ। দক্ষ শ্রমিকদের জন্য ১.৬৭ লক্ষ কর্মদিবস।       

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link