Masterchef Australia: ক্যাঙ্গারুর দেশজয় ভারতীয় Justin-এর, তৃতীয় বাঙালি Kishwer Chowdhury
নিজস্ব প্রতিবেদন- ক্যাঙারুর দেশে বাজিমাত ভারতীয় বংশোদ্ভূত জাস্টিন নারায়ণের। মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার ১৩ সিজনের ফাইনাল জিতে নিলেন জাস্টিন নারায়ণ। দ্বিতীয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসাবে এই নজির গড়লেন তিনি। এর আগে ২০১৮ সালে ভারতীয় বংশোদ্ভূত শশী চেলিয়া এই খেতাব জিতেছিলেন। ২৭ বছর বয়সী জাস্টিন ফাইনালে পরাজিত করলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশওয়ার চৌধুরী ও পিট ক্যাম্পবেল-কে। মঙ্গলবার মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার ইনস্টাগ্রাম পেজ থেকে ঘোষণা করা হয় প্রতিযোগিতার বিজয়ীর নাম। জাস্টিন এই প্রতিযোগিতার সেরা নির্বাচিত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন ভারতীয়রা।
১৩ বছর বয়স থেকে রান্নার প্রতি ঝোঁক জাস্টিনের। তিনি স্বপ্ন দেখেন একটা রেঁস্তোরা খোলবার। মাস্টারশেফের এই খেতাব তাঁকে তাঁর স্বপ্নপূরণের কাছাকাছি নিয়ে যাবে, এমনটাই আশা জাস্টিনের। পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন শেফ আরও জানিয়েছেন, অর্থ রোজগার করে তিনি ভারতের দরিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী শিশুদের জন্য খাদ্য আর শিক্ষার বন্দোবস্ত করতে চান।
দর্শকদের ফেভারিট ছিলেন পিট ক্যাম্পবেল। সোমবারের এই প্রতিযোগিতায় তিনিই এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু ফিনালেতে এসে মারাত্মক ভুল করেন তিনি। কোয়েলের মাংস রান্না করেছিলেন পিট। কিন্তু মাংসটি ঠিকভাবে সিদ্ধ না হওয়ায় এক বিচারক তাঁর উপর খুবই রেগে যান। প্রতিযোগিতায় সেরার শিরোপা পাওয়া থেকে সেই মুহূর্তেই ছিটকে যান পিট ক্যাম্পবেল।
জাস্টিন জিতলেও মনখারাপ বাঙালির। কিশওয়ারের ধাপে ধাপে এই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে দুই বাংলার প্রার্থনা ছিল একইসঙ্গে। কারণ, প্রায় প্রতি পর্বে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাংলার খাদ্য সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছেন কিশওয়ার। সঙ্গে বাঙালির ভুলতে বসা সব রেসিপি। তাই কিশওয়ার সেরার শিরোপা পেলে খুশি হত বাঙালি। সেরা তিনে স্থান পাওয়ার পর বাংলাদেশের প্রচুর ভালোবাসা আর শুভেচ্ছাবার্তা পৌঁছে গেছে কিশওয়ারের কাছে।
অর্ধেক ভারতীয় ও অর্ধেক ফিজিয়ান জাস্টিনের রান্নায় দুই দেশেরই খাবারের স্বাদ মিলেমিশে একাকার। ভারতীয় চিকেন ট্যাকোস, চার্কোল চিকেন উইথ টোম (Charcoal Chicken with Toum), ভারতীয় চিকেন কারি, আচারের স্যালাড-এর মতো রান্না করে ধাপেধাপে মাস্টারশেফের মঞ্চে বিচারকদের মন জিতে নিয়েছেন জাস্টিন।
পেশায় ট্যাটু শিল্পী, মাত্র ৬ বছর আগে রান্নায় হঠাৎই আগ্রহ তৈরি হয় পিট ক্যাম্পবেলের। স্ত্রীর সঙ্গে ইউরোপ ভ্রমণে বেরিয়ে বিভিন্ন দেশের রান্নার টেকনিক ও স্বাদ মেলানোয় ব্যুৎপত্তি তৈরি করেছেন এই রাঁধউনি। রান্নার প্রতি প্যাশন তাঁকে টেনে নিয়ে গেছে এই প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ ধাপ অবধি।
পান্তা ভাত আর আলু ভর্তা, সঙ্গে মাছ ভাজা, মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার ফাইনালে এমন সাহস কেউ করবেন কি আর? বিচারকরা যদিও বলেছেন, এমন সুস্বাদু খাবার কেবলমাত্র বাঙালি হেঁশেলেই হওয়া সম্ভব। কখনও খিচুড়ি-বেগুন ভর্তা, কখনও বিপদের মুখে দেশি মাটন আর মোটা পরোটা, কিশওয়ার চৌধুরী ঠিক জানেন কীভাবে বিচারকদের পেট দিয়ে মন জিততে হয়। প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েও এমন বাংলাদেশি ডিশ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় রেঁধে দারুণ খুশি কিশওয়ার।
এই ১০ প্রতিযোগী উঠেছিলেন প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে।