৪৯ দিনের কঠিন লড়াই, অবশেষে জীবিত উদ্ধার সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া কিশোর
একটা দুটো দিন নয়. ৪৯ দিন ধরে সে একা সমুদ্রে। কীভাবে বেঁচে ছিল ইন্দোনেশিয়ার সেই কিশোর? ৪৯ দিন ধরে সে ভেবেছে, এই বুঝি জীবনের অবসান হল! কিন্তু ওই যে কথায় আছে, রাখে হরি মারে কে!
৪৯ দিন আগে সমুদ্রে হারিয়ে গিয়েছিল ১৯ বছর বয়সী আলদি। কাঠের ভেলার উপর চড়ে মাছ ধরতে বেড়িয়েছিল সে। স্থানীয় ভাষায় এই ধরণের মাছ ধরার ফাঁদ রমপং নামে পরিচিত। ইন্দোনেশিয়ার এক দ্বীপের উপকূল থেকে ১২৫ কিমি দূরে অবস্থিত ছিল সেই ভেলাটি। আচমকাই দড়ি খুলে ভেসে যায় ভেলাটি।
তার পর রাস্তা হারিয়ে ফেলে আলদি। টানা ৪৯ দিন ধরে জাবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে শেষমেশ জিতে ফিরলেন ইন্দোনেশিয়ার এই কিশোর। আলদিকে উদ্ধার করেছে পানামার একটি জাহাজ। যদিও আলদি বলছেন, তাঁর ভেলার পাশ দিয়ে একাধিক জাহাজ গেলেও কেউ তাঁকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি। এমনকী, সে বারবার অনুরোধ করার পর জাহাজগুলি তাঁকে উপেক্ষা করে চলে গিয়েছে।
আলদি বলছিলেন, ''ভাবতেই পারিনি, কখনও আবার বেঁচে ফিরতে পারব। খালি মা-বাবার কথা মনে পড়ত। ভেলায় আমার সঙ্গে একটা বাইবেল থাকত। সারাদিন ওটাই পড়তাম। সারাদিন কান্না পেত। একটা সময় আত্মহত্যার কথাও ভেবেছি।''
কী করে এতদিন বেঁচে রইলেন তিনি? আলদি জানালেন, ''যতদিন ভেলায় আগুণ ছিল ততদিন মাছ ধরে পুড়িয়ে খেয়েছি। তার পর কাঁচা মাছ খেয়ে থেকেছি। কখনও কখনও জলের পোকাও ধরে খেয়েছি। নোনা জল খেয়ে শরীর খারাপ লাগত। কিন্তু এছাড়া উপায় ছিল না।''
যদিও এর আগেও সমুদ্রে তিনবার হারিয়েছে সে। তবে এবার ৪৯ দিনের লড়াইটা তাঁর কাছেও অবাস্তব মনে হয়েছে। আলদি এবার ঠিক করেছেন, সমুদ্রে আর মাছ ধরার কাজ করবেন না।