Jean-Luc Godard: শুধু জাম্প-কাট সৃষ্টির জন্যই তাঁর কাছে চিরঋণী থাকবে বিশ্বসিনেমা
২০০২ সালে 'সাইট অ্যান্ড সাউন্ড' ম্যাগাজিনে আয়োজিত ভোটে সমালোচকদের ভোটে সর্বকালের সেরা দশ পরিচালকের তালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেন গোদার। বলা হয়, বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের যে কোনও চলচ্চিত্রনির্মাতার সমালোচনামূলক বিশ্লেষণের অন্যতম উপজীব্য ছিল তার সৃজন।
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রে এসেছিল নিউ ওয়েভ বা নব তরঙ্গে। ১৯৬০-এর দশকে সিনেমা তৈরির পদ্ধতিতে নতুনত্ব এনেছিলেন পরিচালক। হাতে ধরা বা হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরায় নাগরিক যাপন উঠে এসেছিল গোদারের ছবিতে।
জার্মান নাট্যকার বের্টোল্ট ব্রেখট ছিলেন গোদারের অনুপ্রেরণা। ব্রেখটোর 'এপিক থিয়েটার' ফরম্যাটকেই চলচ্চিত্রের পর্দায় রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন গোদার। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকাংশেই তিনি এ ক্ষেত্রে সফল হয়েছিলেন।
১৯৩০ সালের ৩ ডিসেম্বর জন্ম গোদারের। মাত্র চার বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে সুইটজারল্যান্ডে চলে যান। জেনেভা লেকের ধারেই কাটে তাঁর শৈশব এবং কৈশোর। যুদ্ধ-পরবর্তী ফ্রান্সে ফিরে যান যুবক গোদার। প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন তিনি। কলেজজীবনে থাকাকালীনই গোদারের সিনেমাশিল্পের প্রতি আকর্ষণ বাড়তে শুরু করে।
গোদারের চলচ্চিত্র বহু বিখ্যাত পরিচালকদের অনুপ্রাণিত করেছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন মার্টিন স্করসেসি, কোয়েন্টিন ট্যারান্টিনো, ব্রায়ান ডি পালমা, স্টিভেন সোডারবার্গ, রবার্ট অল্টম্যান, জিম জারমুশ, বেরনার্দো বেরতোলুচ্চি, পিয়ের পাওলো পাসোলিনি। মৃণাল সেনকেও তাঁর নিজস্ব চলচ্চিত্রভাষা খুঁজে পেতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন গোদার।
গোদারের তৈরি নতুন ধারার ছবিগুলিকে 'আভাঁ গার্দ ফিল্ম' হিসেবেই অ্যাখ্যা দেওয়া হয়। তাঁর উল্লেখ্যযোগ্য ছবিগুলি হল-- 'আ উওম্যান ইজ আ উওম্যান', 'মাই লাইফ টু লিভ', 'দ্য লিটল সোলজার', 'লা চিনইজ', 'উইক-এন্ড' ইত্যাদি। ২০১৮ সালে তাঁর পরিচালিত আভাঁ গার্ড ছবি 'দ্য ইমেজ বুক' পাম ডি'ওর পুরস্কার পায়। যদিও সেই পুরস্কার গ্রহণ করেননি তিনি। চওড়া কপাল, এক-মাথা কাঁচা-পাকা এলোমেলো চুল, কালো রঙের মোটা ফ্রেমের চশমা-- গোদারের নিজের এই ছবিই যেন একটা কাল্ট ইমেজ হয়ে রয়ে গিয়েছে!