হিন্দু রাষ্ট্র মন্তব্যে কী বোঝাতে চেয়েছেন? ব্যাখ্যা দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি
তাঁর হিন্দু রাষ্ট্র মন্তব্য নিয়ে আছড়ে পড়েছে সমালোচনার ঝড়। কিন্তু নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন মেঘালয় হাইকোর্টের বিচারপতি সুদীপরঞ্জন সেন। জানিয়ে দিলেন, কোনও রাজনৈতিক আদর্শের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মন্তব্য করেননি।
একটি মামলায় বিচারপতি সেন মন্তব্য করেছিলেন, স্বাধীনতার পরই ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানো উচিত ছিল।
তিনি আরও বলেছিলেন, ভারতকে ইসলামিক রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করা উচিত নয়। সেই দিনটা ভারত তথা বিশ্বের অন্ধকারতম ক্ষণ হবে।
প্রাক্তন বিচারপতিরা সুদীপরঞ্জন সেনের মন্তব্যের পর তাঁকে বরখাস্তের দাবি তুলেছেন। সিপিএম বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, বিচারপতি সেনের মন্তব্য থেকে আরএসএসের ভাবনাচিন্তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
বিচারপতি সেন তাঁর রায়ে লেখেন, '১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হয়েছিল। সেই মতো পাকিস্তান নিজেকে ইসলামিক রাষ্ট্র ঘোষণা করেছে। ভারতকেও হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করা উচিত।' বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, 'ভারতকে ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করা উচিত নয়। আমার মনে হয় এই পরিস্থিতির গুরুত্ব একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজিই বুঝতে পারেন। ভারতের ইসলামিকরণ রুখতে তাঁর উপযুক্ত পদক্ষেপ করা উচিত। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাঁকে সমর্থন করা উচিত।'
একই সঙ্গে প্রতিবেশী ইসলামিক দেশগুলি থেকে আগত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আইন আনতে অনুরোধ করেন তিনি। বিচারপতি সেনের রায়ে উল্লেখ করেছেন, এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও সাংসদদের পদক্ষেপ করতে হবে।
আত্মপক্ষসমর্থনে বিচারপতি সেনের ব্যাখ্যা, ''আমাদের সংবিধানের অন্যতম মৌলিক কাঠামো হল ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্ম, জাতি, সম্প্রদায় ও ভাষার ভিত্তিতে দেশকে ভাগ করা উচিত নয়। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে কোনও মন্তব্য নেই। ইতিহাস তুলে ধরেছি। কেউ ইতিহাস বদলাতে পারবে না''। ইতিহাস বলতে ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগকেই বোঝাতে চেয়েছেন বিচারপতি সেন।