Kaushiki Amavasya 2021: শুভশক্তির তরঙ্গ বয়ে চলে কৌশিকী অমাবস্যার `তারা-রাত্রি` জুড়ে
বলা হয়, কৌশিকী দেবী চণ্ডীর একটি রূপ। বলা হয়, দেবী যখন শুম্ভ-নিশুম্ভ বধ করতে যান সে সময়েই কৌশিকীর উৎপত্তি। অম্বিকা পার্বতীর শরীরের কোষ থেকে উৎপন্ন হয়েছিলেন বলেই তিনি 'কৌশিকী'। দেহের কোষ থেকে সম্পূর্ণ অন্য নারীর জন্ম। তিনি শুম্ভ-নিশুম্ভের সংহার করেন। শক্তিরই অন্য রূপ কৌশিকী।
এ বিষয়ে আরেকটি মত আছে। পার্বতী কৃষ্ণবর্ণা ছিলেন। পার্বতীর সঙ্গে বিয়ে হল শিবের। শিব একদিন স্ত্রীর সঙ্গে মজা করছিলেন। বললেন-- পার্বতী, তুমি যখন আমার সঙ্গে আলিঙ্গনবদ্ধ থাকো, তখন শুভ্র চন্দনবৃক্ষে কৃষ্ণবর্ণসর্প ঘুরে বেড়ালে যেমন দেখতে লাগে, তেমন দেখতে লাগে। এ পরিহাস শুনে খুবই দুঃখ পেলেন পার্বতী। তিনি শিবকে বললেন, আমি ব্রহ্মার তপস্যা করব এবং গৌরবর্ণ ধারণ করব। ব্রহ্মার বর পেয়ে দেবী গৌরবর্ণ ধারণ করলেন। এবং পুরনো কোষ ত্যাগ করলেন। পরিত্যক্ত এই কোষ থেকেই সৃষ্টি হল দেবী কৌশিকীর। সেই কারণেই তিনি কৃষ্ণবর্ণা।
দেবী কৌশিকীর আরাধনা অমাবস্যা তিথিতেই প্রচলিত। কথিত, কৌশিকী অমাবস্যার দিনই তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপা। কৌশিকী অমাবস্যার দিন তারাপীঠের মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল বৃক্ষতলে বামাক্ষ্যাপা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন।
এই কৌশিকী অমাবস্যার দিনটিকেই তান্ত্রিকরা তন্ত্র সাধনার জন্য বেছে নেন। সাধনা চলে রাত জুড়ে। অনেকেই বলেন কৌশিকী অমাবস্যা এক পুণ্যতিথি। এদিনে নাকি কিছুক্ষণের জন্য ভক্তের সামনে খুলে যায় স্বর্গের দরজা। তন্ত্রের মাধ্যমেই সিদ্ধিলাভের আসায় সারা রাত ধরে শ্মশানে তন্ত্র সাধনায় মগ্ন হন সাধকরা।
ভক্ত যদি যথার্থ শ্রম ও সাধনায় অগ্রসর হতে পারেন তবে এই পুণ্যতিথিতে তাঁর 'কুলকুণ্ডলিনী শক্তি' জাগ্রত হয় বলে মনে করা হয়।
দিনটি যে শুধু হিন্দুতন্ত্রেই চর্চিত, তা কিন্তু নয়, বৌদ্ধসাধনাতেও এ দিনটির তাৎপর্য আছে। তন্ত্রমতে, কৌশিকী অমাবস্যার রাতটিকে 'তারা-রাত্রি'ও বলে। এ রাত্রে এক বিশেষ ক্ষণে ভক্তের কাছে স্বর্গের দরজা খুলে যায়। এক বিশেষ শক্তির তরঙ্গ বয়ে যায়। সেই তরঙ্গ-স্পর্শে ধন্য হন ভক্ত।