Deganga Military Camp: রাত হলেই কেউ কাঁদছে, কেউ নাচছে! দেগঙ্গার `ভূত বাংলো` ঘিরে আতঙ্ক
নিজস্ব প্রতিবেদন : রাত হলেই ভেসে আসে কান্নার আওয়াজ, কখনও ভেসে আসে ঘুঙুরের আওয়াজ, আরও কত না শব্দ! না কোনও ভূতের সিনেমার কথা নয়। বাস্তবে এমন ঘটনাই নাকি ঘটছে দেগঙ্গায় পরিত্যক্ত মিলিটারি ক্যাম্পে! এমনই দাবি এলাকার মানুষের। যারফলে রাত হলেই আর ক্যাম্পের ধারেকাছে ঘেঁষে না স্থানীয় মানুষ। দিনের আলো না ফোঁটা পর্যন্ত আতঙ্কের মধ্যে থাকে বাসিন্দারা।
১৯২০ সালে দেগঙ্গা বিশ্বনাথপুরে ছিল সেনাবাহিনীর থাকার জন্য ক্যাম্প। তারপর সেনাবাহিনী চলে গেলেও এই বিশাল বাড়িতে থাকত বাংলাদেশি উদ্বাস্তুরা। তাঁরা এই বাড়িতে বসবাস করতেন। অনেক উদ্বাস্তুর এখানে মৃত্যুও হয়েছে। কয়েকজন উদ্বাস্তু যাঁরা শেষপর্যন্ত ছিলেন, তাঁরাও বছর দশেক আগে চলে গিয়েছেন। ফলে এখন পরিত্যক্ত পোড়োবাড়ি হিসেবেই পড়ে আছে ক্যাম্পটি।
স্থানীয়দের দাবি, এই বিশাল বাড়িটি থেকে রাত হলেই ভেসে আসে বিভিন্ন ভূতুড়ে আওয়াজ। এককথায় বলা যায় বাড়িটি এখন 'ভূত বাংলো' হয়ে গিয়েছে। রাত হলেই ভেসে আসে বিভিন্ন মানুষের কান্নার আওয়াজ, ভেসে আসে নূপুরের আওয়াজ, আবার কখনও ভেসে আসে হেঁটে যাওয়ার শব্দ। কখনওবা ভেসে আসে পুকুরের জলে ঝাঁপিয়ে পড়ার আওয়াজ। এমনই দাবি এলাকাবাসীর।
প্রতিবেশীদের দাবি, রাত হলেই এই 'ভূত বাংলো' থেকে ভেসে আসে বিভিন্ন ধরনের আজগুবি আজগুবি সব আওয়াজ। কিন্তু বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। রাতে দোতলার ঘর থেকে কখনও ধান ঝাড়ার শব্দ পাওয়া যায়! কখনও আবার আবছা আলোতে দেখা যায় কেউ হেঁটে যাচ্ছে! এদিকে আবার পুকুরের জলে ঢেউ খেলতে দেখা যায়, আবার কোনও ঝড়-হাওয়া ছাড়াই দরজা-জানালা দুমদাম করে বন্ধ হওয়ার আওয়াজও পাওয়া যায়!
দেগঙ্গা বিশ্বনাথপুরের এই মিলিটারি ক্যাম্প ১৯২০ সালে তৈরি হয়েছিল ৬৫ বিঘা জমির উপর। সুবিশাল এই ক্যাম্পে থাকত সেনাবাহিনী। তারপর একে একে ভারতবর্ষ, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, সেনাবাহিনীও চলে গিয়েছে। প্রায় ৪০ বছর এখানে প্রচুর উদ্বাস্তু পরিবার থাকলেও, তারাও এক-এক করে চলে গিয়েছে। এখন স্থানীয়দের দাবি, 'ভূত বাংলো'র ভয়ঙ্কর সব আওয়াজে বাচ্চারা ভয়ে জবুথবু হয়ে যাচ্ছে। অমাবস্যা-পূর্ণিমার রাতে নাকি আরও ভয়ঙ্ককর হয় এই মিলিটারি ক্যাম্প!
কিন্তু কী আছে ক্যাম্পের মধ্যে? 'ভূত বাংলো'র এই গা ছমছমে পরিবেশের নেপথ্যে কী? রাত যত বাড়ে ততই অচেনা-অজানা আওয়াজ কেন ভেসে আসে এই ক্যাম্প অফিস থেকে? বিজ্ঞান মঞ্চের দাবি, ভূতুড়ে কোনও ব্যাপারই নয়। এটি গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়। কেউ হয়তো সাধারণ মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল নিচ্ছে। ভূত বলে কিছু নেই। এটা মানুষের ভ্রান্ত ধারণা।