স্বপ্ন দেখছেন দিদি, প্রধানমন্ত্রীর পদ নিলামে বিক্রি নেই, আসানসোলে মোদীর ভাষণ ১৫ পয়েন্টে
আমার প্রিয় বাংলার ভাই-বোনেরা। আপনারা নতুন আশা, নতুন ভরসা নিয়ে এই সভায় এসেছেন। আপনাদের মনে নতুন বাংলা গড়ার স্বপ্ন। আপনাদের সাদর অভিনন্দন ও প্রণাম। বঙ্গভূমি থেকে পরিবর্তনের ঝড় দেখে চিন্তায় পড়েছেন বড় বড় রাজনৈতিক পণ্ডিতরা। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ মহাবিলাবটের দলকে ঝটকা দিতে চলেছেন। নতুন ইতিহাস তৈরি হবে।
গণতন্ত্রকে হাইজ্যাক করতে চাইছে তৃণমূল। তাদের সবক শেখাবে পশ্চিমবঙ্গ। প্রকাশ্যে বুথ লুঠের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরে হামলার জন্য নিজের কর্মীদের উস্কানি দেন, তাদের ক্ষমতাচ্যুত করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
স্পিড ব্রেকার দিদি নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করছেন, মোদীকে গালি দিচ্ছেন। মমতার ভয় আরও বেড়ে যায়, যখন বলি, যারা ভ্রষ্ট, তারাই মোদীর জন্যে কষ্টে।
এখানকার ভোটদাতাদের সামনে শির ঝুঁকিয়ে প্রণাম করি। প্রথম দুদফায় যেভাবে বুথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন, আপনারা ধন্যবাদের পাত্র। তৃণমূলের অত্যাচারের বিরুদ্ধে যে লড়াই করছেন, তার পরিণাম মিলছে।
২০১৪ সালের আগে কংগ্রেস সরকার দুর্নীতির রেকর্ড করে দিয়েছে। দুর্নীতির ব্যাপারে কংগ্রেসকে টক্কর দিচ্ছে তৃণমূল। দুর্নীতি হোক বা অপরাধ- দুটিই তৃণমূলের আমলে চলছে। বাকি সব কিছুর জন্য স্পিডব্রেকার দিদি রয়েছেন। কয়লার কালো টাকায় চলে তৃণমূল। নারদা-সারদা ও রোজভ্যালি- এগুলি শুধু দুর্নীতি নয়, গরিবদের সঙ্গে বড় অপরাধ করা হয়েছে। কোথায় দুর্নীতির সুতো যাচ্ছে, তাও স্পষ্ট। প্রকাশ্যে গরিব মানুষের টাকা লুঠেরাদের পাশে দাঁড়িয়ে গিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
পাকিস্তানে কত সন্ত্রাসবাদী মারা গিয়েছে, তার প্রমাণ চাই ওনার। কিন্তু গরিবের টাকা কারা মারল, তা প্রমাণ খুঁজুন। দেশকে উন্নয়ন মডেল দিতে চাইছেন মমতা। মডেল হল- তৃণমূল তোলাবাজি ট্যাক্স। বালি মাফিয়া, আয়রন মাফিয়া ও জমি মাফিয়ারা চালাচ্ছে সরকার। অনুপ্রবেশকারীদের আসতে দাও, তারপর পশ্চিমবঙ্গে সম্পত্তির লুঠের ওদের অংশ দাও। যুবকদের জন্য স্পিডব্রেকার দিদির একটা উন্নয়ন মডেল আছে। এখানে চাকরি নেই। চাকরি পেলে বেতন মেলে না। বেতন পেলে বাড়ে না। বেতন বাড়লে ডিএ পান না। দিদির মডেল দেশকে চাই?
বীর সন্তানরা অত্যাচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে। এটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমি, সূর্য সেনের ভূমি, যতীন্দ্রনাথ দাসের ভূমি, নজরুল ইসলামের ভূমি, এটা নেতাজি সুভাষচন্দ্রেরও ভূমি। নতুন ভোটাররা নতুন রাজনীতির সূচনা করবেন। হিংসা, আতঙ্ক, অনুপ্রবেশ ও মাফিয়াদের রাজত্ব চায় না তারা। তাদের এমন পশ্চিমবঙ্গ চায়, যেখানে উন্নয়নের ফল্গুধারা বইবে। এখানে শিশুদের শিক্ষা, যুবকদের আয়, বয়স্করা ওষুধ পাবেন।
হাতেগোনা আসনে লড়াই করে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন আমাদের দিদি। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী পদের লড়াই হলে কংগ্রেস ও দিদি যে মাল লুঠেছেন তা নিয়ে চলে আসতেন। দিদি প্রধানমন্ত্রীর পদ নিলামে নেই। সারদা-নারদায় টাকায় কিনতে পারবেন না। ১৩০ কোটি দেশবাসীর আশীর্বাদে পাওয়া যায় এই পদ।
সন্ত্রাসবাদীদের কাছে প্রমাণ চাইবেন নাকি। কলকাতায় হাত ধরে নাচছিলেন আপনারা। জম্মু-কাশ্মীরের বাপ-বেটা এসেছিল ওখানে। কলকাতায় যাঁরা নাচানাচি করছিলেন, তাঁরা আলাদা প্রধানমন্ত্রী চাইছেন। দো প্রধান, দো বিধান, দো নিশান চলবে না, সে জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। দিদি আপনিও এটা চান?
পশ্চিমবঙ্গ জানতে চায়, এয়ার স্ট্রাইক ও সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সময় পাকিস্তানের পক্ষে কেন কেঁদেছিলেন দিদি? এটা আসানসোল পুরসভার ভোট নয়। ১৩০ কোটির ভাগ্য নির্ধারণের নির্বাচন। দেশের নিরাপত্তার বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। মমতা দিদি আপনাকে এই সব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।
মমতার পায়ের তলার জমি সরে গিয়েছে। ওনার সূর্য অস্তাচলে। সেটা উনিও জানেন, সভায় লোক আসছেন না, সে কারণে বিদেশ থেকে অভিনেতা আনতে হচ্ছে। করুণা হচ্ছে আপনার উপরে। আরে দিদি, আপনার কী হাল করে দিয়েছে বাংলার মানুষ!
দিদি আগে অনুপ্রবেশকারী ঢুকিয়ে ভোটব্যাঙ্ক বানিয়েছেন। এবার প্রচারকও বিদেশ থেকে আসছে। কিন্তু আপনাদের চৌকিদার সজাগ। অনু্প্রবেশকারীদের নিয়ে আর পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি চলবে না। ভাড়ার গুণ্ডাবাহিনীর শাসনও শেষ হবে।
নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সরকার চায় ভারত। পরিবারিক সরকার চায় না। ওরা কি আপনাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে? নতুন ভারতের সংকল্প কে পূরণ করতে পারবে? সমস্বরে আওয়াজ আসে, 'মোদী, মোদী, মোদী'। মোদী একা পারবে না, আপনাদের একটা ভোট করতে পারে। মজবুত সরকার চাই কিনা। নতুন ভারত সবাই মিলে তৈরি করব। ১৩০ কোটি ভারতবাসীর কথা বলি। সবকা সাথ সবকা বিকাশের কথা বলি।
২৩ মে নির্বাচনের ফলপ্রকাশ হলে কী হবে? ভিড় থেকে আওয়াজ আসে, 'ফির একবার মোদী সরকার'। তখন শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন আনার পূর্ণ চেষ্টা করব। রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বাড়বে যাতে আয়ুষ্মান যোজনা এখানে লাগু করে। রাজ্যের এক কোটির অধিক গরিব পরিবার বিনামূল্যে চিকিত্সা পাবে। মোদী সরকার আসলে ব্যবসায়ীদের জন্য জাতীয় ব্যাপারি আয়োগ তৈরি হবে। ২০২২ সালের মধ্যে প্রতিটা গরিবদের নিজস্ব বাড়ি হবে।
বিজেপির বিরুদ্ধে রটাচ্ছে কংগ্রেস-সিপিএম-তৃণমূল। সতর্ক থাকুন। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটদান করুন। গতবার আপনাদের কাছে ভোট চেয়েছিলাম। আপনারা কথা রেখেছেন। আপনাদের ভাবনাকে সম্মান দিয়েছি। বাবুল সুপ্রিয় লড়াই করেছেন আপনাদের জন্যে। আরও একবার আশীর্বাদ দিন। বিশ্বাস রাখুন, আপনারা পদ্মে ছাপ দেবেন ওই ভোট সোজা মোদীর খাতায় যাবে। চৌকিদার পাবে। চৌকিদারকে আরও মজবুত করবে।