#ফিরেদেখা২০২১: অলিম্পিক্সের ইতিহাসে ভারতের সেরা পারফরম্যান্স
২০০৮ সালের বেজিং অলিম্পিক্সে ব্যক্তিগত বিভাগে মাত্র একটি সোনা জিতেছিলেন অভিনব বিন্দ্রা। ভারতের দ্বিতীয় অ্যাথলিট হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টে এ বার টোকিও অলিম্পিক্সে ফের সোনা জিতলেন নীরজ। জ্যাভেলিন থ্রো থেকে ভারতে এল ট্র্যাক অন্ড ফিল্ডের প্রথম পদক। কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে এক নম্বরে থেকে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছিলেন তিনি। এরপর গত ৭ অগস্ট সোনার পদক নিশ্চিত করেন নীরজ। ফাইনালে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ৮৭.৫৮ মিটার ছুড়ে পদক জিতলেন তিনি।
লক্ষ্য ছিল সোনা জয়। কিন্তু অন্যমনস্কতার জন্য শেষ পর্যন্ত রুপো নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তাঁর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখলেই সেটা বোঝা যাচ্ছিল। ফ্রি-স্টাইল কুস্তির ৫৭ কেজি বিভাগের ফাইনালে পরাজিত হন রবি। গোল্ড মেডেল বাউটে দু'বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জাভুর উগুয়েভের কাছে ৪-৭ ব্যবধানে হেরে যান তিনি। তবে সেই ম্যাচ হারলেও অলিম্পিক্সে ৫৭ কেজি ফ্রিস্টাইল বিভাগে রুপো জিতেছেন রবি কুমার দাহিয়া।
মীরাবাঈ চানুর পারফরম্যান্স দেখে হেসে উঠেছিল আসমুদ্র হিমাচল। এ বারের টোকিও অলিম্পিক্সে দেশকে প্রথম পদক এনে দিয়েছিলেন মণিপুরের ২৭ বছরের এই অ্যাথলিট। মহিলাদের ৪৯ কেজি বিভাগে রুপো জিতেছিলেন ভারোত্তলক। প্রথম স্ন্যাচে ৮৪ ও দ্বিতীয় স্ন্যাচে ৮৭ কেজি ওজন তোলেন তিনি। তৃতীয় প্রচেষ্টায় ৮৯ কেজির জন্য ঝাঁপিয়েছিলেন। তবে সফল হননি। স্ন্যাচে ৮৪, ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১১০ মোট ১৯৪ কেজি ভারোত্তলন করে ব্রোঞ্জ জেতেন তিনি।
২০১৬ সালের রিও অলিম্পিক্সে রুপো জিতেছিলেন। স্বভাবতই এই শাটলারকে নিয়ে অনেক আশা তৈরি হয়েছিল। তবে টোকিও অলিম্পিক্সে তাঁর সোনা ও রুপো জয়ের স্বপ্ন অধরা রয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ব্রোঞ্জ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকেন সিন্ধু। ব্রোঞ্জ মেডেল ম্যাচে সিন্ধুর প্রতিপক্ষ ছিলেন চিনের হি বিংজিয়াও। সেই ম্যাচে ৫৩ মিনিটের লড়াইয়ে তিনি ২১-১৩, ২১-১৫ স্ট্রেট গেমে পরাজিত করেন বিংজিয়াওকে এবং ব্রোঞ্জ নিয়ে দেশে ফিরে আসেন অলিম্পিক্সে জোড়া পদকজয়ী এই অ্যাথলিট।
বিশ্বচ্যাম্পিয়নের কাছে হেরে ব্রোঞ্জ পদকেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে লভলিনা বড়গোহাঁইকে। মেয়েদের বক্সিংয়ের ওয়েল্টারওয়েট (৬৪-৬৯ কেজি) বিভাগের সেমি ফাইনালে তুরস্কের বুসেনাজ সুরমেনেলির কাছে ০-৫ ব্যবধানে পরাজিত হন ভারতীয় বক্সার। তবে সেই ম্যাচে হেরে গেলেও পুরো প্রতিযোগিতায় দারুণ পারফরম্যান্স করেছিলেন অসমের এই ২৪ বছরের এই বক্সার। আর তাঁর এই সাফল্যের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল বাংলার নাম। কারণ টোকিও অলিম্পিক্সে লভলিনার কোচ ছিলেন আলি কামার।
টোকিও অলিম্পিক্সের কুস্তিতে ভারতের অন্যতম পদক সম্ভাবনা ছিলেন বজরং পুনিয়া। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর হাতে এল রূপো। পুরুষদের ফ্রি-স্টাইল কুস্তির ৬৫ কেজি বিভাগের সেমি ফাইনালে হেরে যাওয়ায় সোনা ও রুপোর দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন। তবে ব্রোঞ্জ জিতে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করলেন এই কুস্তিগীর।
৪১ বছর পরে ফের এ বার অলিম্পিক্সে পদক জিতল ভারতের হকি দল। ৫ অগস্ট টোকিও অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জিতলেন মনপ্রীত সিং-শ্রীজেশরা। লড়াকু মানসিকতার জন্য অলিম্পিক্সে ৪১ বছরের পদক খরা কাটল ভারতের। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে দেড় মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল খেয়ে কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিনিক্স পাখির মতো উঠে এল ভারত। ৪১ বছর পরে অলিম্পিক্সে পদক জেতে ভারতীয় হকি দল।