Malbazar: ছোট্ট চা বাগান থেকে সোজা লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয়ে, সবাইকে চমকে দিলেন শ্রমিক কন্যা
নাগরাকাটার এক ছোট্ট চা বাগান থেকে অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন চা শ্রমিক কন্যা। উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনের ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেন গীতিকা এক্কা। কঠিন প্রতিযোগিতা পেরিয়ে গীতিকা এখন এমএসসি করবেন ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
গীতিকাদের বাড়ি নাগরাকাটার ভগত্পুর চা বাগানের কবর লাইনে। বাবা গণেশ এক্কা সেখানকার প্রাক্তন শ্রমিক। মা কমলা এক্কা প্রাইমারি স্কুল শিক্ষিকা। কালিম্পংয়ের একটি স্কুল থেকে ২০১৩ মাধ্যমিক পাস করেন গীতিকা। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ফল খুব একটা আশানুরূপ ফল হয়নি। তাতে ভেঙে পড়েননি তিনি। ২০১৫ সালে উচ্চমাধ্যমিকের কলা বিভাগে ৮৬ শতাংশ নম্বর পান গীতিকা। এরপর প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সুযোগ পান নয়াদিল্লির পুশার ইনস্টিটিউট অফ হোটেল ম্যানেজমেন্ট, নিউট্রিশন অ্যান্ড ক্যাটারিং-এর কোর্সে।
3
২০১৮ সালে সেখান থেকে বিএসসি করার পর শুরু হয় আরও কঠিন লড়াই। প্রবেশিকা পরীক্ষার একাধিক ধাপ পেরিয়ে এবার গীতিকার গন্তব্য সাত সমুদ্র তেরো নদী পারের কিংস্টন লেন। সেখানকার ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট রিলেশন বিষয়ের ওপর এমএসসি পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
২৬ সেপ্টেম্বর দমদমের নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাঁর সাড়ে ৯ ঘণ্টার যাত্রা শুরু। আগামী তিন বছর লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলই গীতিকার ঠিকানা। পাসপোর্ট-ভিসা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে।
এমন সাফল্য এল কীভাবে? গীতিকা বলেন, চা বাগানের অনেক ছেলেমেয়ে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। এটা যেন তারা কোনওভাবেই না করে। সেই বার্তা দিতে চাই। পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হলেও তাতে ভেঙে পড়ার কিছু নেই। লন্ডন থেকে ফিরে এসে উত্তরবঙ্গেই পর্যটন নিয়ে কাজ করতে চাই।
গীতিকার বাবা গণেশ এক্কা বলেন, চা বাগানেই বাস করছি। নিজেদের যত কষ্টই হোক ছেলেমেয়েরা লেখাপড়াটা যাতে করতে পারে, সেই চিন্তা থেকে দূরে সরে আসিনি। অন্য অভিভাবকদেরও একই বার্তা দিতে চাই।