পুলওয়ামা: নিজেকে সিআরপিএফ পরিচয় দেওয়া এই বাঙালি যুবক আদতে ঠগ
অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের সামনে পুলওয়ামা হামলার স্মৃতিচারণা করেছিলেন জয় গঙ্গোপাধ্যায়। আর সেটাই কাল হয়ে গেল। জি ২৪ ঘণ্টার তত্পরতায় ধরা পড়ে গেলেন জয়।
স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে ফন্দি এঁটেছিলেন জয় গঙ্গোপাধ্যায়। নিজেকে সিআরপিএফ জওয়ান হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি। সংবাদ মাধ্যমে গুছিয়ে গল্পও বলেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
আসানসোলের হীরাপুরে জয় গঙ্গোপাধ্যায়ের শ্বশুরবাড়ি। তিনি দাবি করেছিলেন, পুলওয়ামা হামলার আগের দিনই স্ত্রীর সঙ্গে ফোন কথা হয়। তখনই তিনি জানিয়েছিলেন, পরেরদিন সকালেই কাশ্মীর থেকে শ্রীনগরে যাওয়ার কথা। পরেরদিন দুপুরে টিভিতে সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গি হামলার খবর দেখার পরই বিপদ আঁচ করতে পেরেছিলেন স্ত্রী শ্রাবণী। স্বামীর চিন্তায় বারবার সংজ্ঞা হারাচ্ছিলেন, সঙ্গে ধূম জ্বর। তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে জ্বর না কমায় তাঁকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
জয় গঙ্গোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ের ৩ নম্বর গাড়িতে হয়েছিল জঙ্গি হানা। আর ৫ নম্বরে ছিলেন আসানসোলের তিনি। চোখের সামনে সহকর্মীদের ছিন্নভিন্ন হতে দেখেও ঠান্ডা মাথায় সাধারণ নাগরিকদের গাড়ি নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কাজে লেগে পড়েছিলেন তাঁরা। স্ত্রীর অসুস্থতার খবর পেয়ে আসানসোলে আসেন।
কিন্তু জি ২৪ ঘণ্টার তত্পরতায় বেরিয়ে আসল সত্য। জয় গঙ্গোপাধ্যায় আদতে সিআরপিএফ জওয়ান নন। তাঁর বাড়ি বাঁকুড়ার সোনামুখিতে।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নিজেকে সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলেন ওই যুবক।
বিনা হেলমেটে বাইক চালানোর সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে নিজেকে সেনাকর্মী বলে পরিচয় দিয়ে হুম্বিতম্বি করেছিলেন জয় গঙ্গোপাধ্যায়। পরে জানা যায়, মিথ্যা বলছেন তিনি। বাড়িতেও নানা কথা বলে বেড়িয়েছেন জয়।
জয়ের মা মঞ্জু গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ''ছেলে মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসতেন। নিজেকে সিবিআই কর্মী বলে পরিচয় দিতেন। সরস্বতী পুজোয় শেষবার বাড়িতে এসেছিলেন। পরেরদিন কলকাতা রওনা দেন। তারপর থেকে আর কোনও যোগাযোগ নেই''।
জয়ের ভাই সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ''দাদা কী কাজ করে জানি না। আগে মাঝে মধ্যে সংসারে অর্থ সাহায্য করলেও মাস চারেক আগে বিয়ে করার পর থেকে আর কোনও টাকা পাঠাত না''।