মহিলাদের স্বেচ্ছায় কেশ দানে মন্দিরের আয় কত জানেন?
চুল নিয়ে চুলোচুলিতে এ দেশ অনেকটাই এগিয়ে। চুল রপ্তানিকারী দেশের তালিকায় বিশ্বে প্রথম স্থানে ভারত। আমার আপনার চুল বিদেশে বিক্রি হচ্ছে কোটি কোটি টাকায়। কিন্তু কী ভাবে?
উদাহরণ হিসাবে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুমুলার ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের কথাই ধরা যাক। এখানে প্রতিদিন কয়েক হাজার ভক্ত আসেন বিষ্ণু মূর্তিকে দর্শন করতে। মন বাঞ্ছ পূর্ণ করার জন্য নিজের মাথার চুল দান করেন তাঁরা।
পুরুষ, মহিলা, শিশু নির্বিশেষে সবাই সম্পূর্ণভাবে মাথার চুল কামিয়ে ফেলেন। তাঁদের বিশ্বাস, এই মন্দিরে মাথার চুল দান করলে সকল মন-বাঞ্ছ পূর্ণ হবে।
কিন্তু প্রতিদিন জমা হওয়া এত চুল কী করে মন্দির কর্তৃপক্ষ? মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, প্রায় ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ মানুষ এখানে চুল দান করেন।
প্রথম দিকে এই চুল নদীতে ফেলে দেওয়া হত। কিন্তু পরবর্তীকালে এই চুল রাখার জন্য বড় বড় স্টোর রুম বানানো হয়েছে। বিশ্ব বাজারের বিপুল চাহিদা থাকায় এখন এই চুল নিলামে বিক্রি করা হয়।
মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, প্রতি বছর এই চুল বিক্রি করে ৩০ থেকে ৬০ লক্ষ ডলার আয় করে তারা। সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে চুল আমদানি হয় এবং তা থেকে কোটি টাকা আয় করে কর্তৃপক্ষ।
কয়েক লক্ষ মানুষের মাথা কামাতে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ নাপিত নিযুক্ত থাকে এই মন্দিরে। জানা যাচ্ছে, ভারতীয় কেশের বেশ কদর রয়েছে বিদেশে।
কারণ, এখানে যে সব যারা চুল দান করেন তাঁরা প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসেন। এঁদের বেশির ভাগের কেশই প্রাকৃতিক উপায়ে পরিচর্যা করা হয়ে থাকে। এমনিতেই ভারতীয়দের কেশ নরম, সিল্কি, লম্বা এবং ঘন কালো হয়। আর বিদেশের বাজারে এমন কেশ লোভনীয়। নিট ফল, মন্দিরের লক্ষীলাভ।
কখনও কখনও ৮০০ ডলার প্রতি কেজি হিসাবেও বিক্রি হয় এই চুল।
এখানে দান করা লম্বা কেশ (১৮ ইঞ্চির অধিক) প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ ডলারে বিক্রি হয়।
ভারতীয় কেশের অধিকাংশটাই কেনে গ্রেট লেংথস ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ইতালিয় সংস্থা। এখান থেকে কেশ কিনে প্রায় ৬০ টির বেশি দেশে রপ্তানি করে তারা।
শুধুই ভেঙ্কটেশ্বর মন্দির নয় এমন অনেক ধর্মীয় স্থান রয়েছে যেখানে কেশ দান করার রীতি রয়েছে। এই সব মিলিয়ে প্রতি বছর ভারত থেকে প্রায় ১০ কোটি ডলার কেশ বিক্রি হয় বলে জানা যাচ্ছে।