দেশের প্রতি টান নেই, `গৃহযুদ্ধ-রক্তগঙ্গা` মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মমতাকে খোঁচা মোদীর
অসমের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছিলেন অমিত শাহ। এবার তৃণমূল নেত্রীকে তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে ২০০৫ সালে সংসদে অনুপ্রবেশকারী প্রসঙ্গে মমতার ভূমিকার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন নরেন্দ্র মোদী।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারে নমো বলেন, ''যাঁরা নিজেদের উপরে ভরসা হারিয়েছেন, জনসমর্থন হারানোর ভয় পাচ্ছেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের উপরেও বিশ্বাস নেই, তাঁরাই দেশকে টুকড়ে টুকড়ে, রক্তগঙ্গা ও গৃহযুদ্ধের মতো মন্তব্য করছেন। দেশের প্রতি তাঁদের টান নেই।''
মমতার নাম নিয়ে মোদী স্মরণ করিয়ে দেন, ২০০৫ সালে সংসদে কী করেছিলেন তিনি, সেটা মনে করা উচিত ওনার। তখন মমতা জি অবস্থান সঠিক ছিল, নয়তো এখন ওনার অবস্থান সঠিক?
নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ''এনআরসি নিয়ে রাজনীতি করছে কংগ্রেস। তিন দশক আগে সাধারণ মানুষের চাপে অসম চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিলেন রাজীব গান্ধী। তারপর থেকে একাধিকবার কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছে অসম, তবে তারা কিছুই করেনি। মানুষকে বিভ্রান্ত করে গিয়েছে। সমস্যা জেনেও ভোটব্যাঙ্কের কারণে বাড়তে দিয়েছে কংগ্রেস''।
বৈধ ভারতীয় নাগরিকদের দেশছাড়া হতে হবে না বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর আশ্বাস, কোনও নাগরিক দেশ ছেড়ে যাবেন না। নাগরিকত্ব প্রমাণের সমস্তরকম সুযোগ দেওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতেই নাগরিকপঞ্জির প্রতিশ্রুতি পূরণ করব।'
অসমের নাগরিকপঞ্জির প্রক্রিয়া রাজনীতির স্বার্থে করছেন না বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়,''এর পিছনে রাজনীতি নেই, বরং মানুষের জন্য করছি। কেউ রাজনীতি করার চেষ্টা করলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। মানুষের ইচ্ছা মতো কাজ করা আমাদের দায়িত্ব। সেজন্যই তাঁরা আমাদের জনাদেশ দিয়েছেন''।
গত ৩০ জুলাই প্রকাশিত হয়েছে অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি। ওই পঞ্জি থেকে বাদ পড়েছেন প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ। তারপরই সোচ্চার হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন, দেশের অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চলছে। এর ফলে 'গৃহযুদ্ধ' লাগলে 'রক্তগঙ্গা' বইতে পারে। শিলচরে নিজের প্রতিনিধি দলকেও পাঠান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের ঢুকতে বাধা দেয় অসম পুলিস।
দিনভর টানাপোড়েনের পর পরেরদিন কলকাতায় ফিরে আসে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, দেশে সুপার জরুরি অবস্থা চলছে।