Mumbai Crime: খুন হওয়া লাশের চপ্পলেই সমাধান জটিল রহস্যর! কীভাবে হল এই অসাধ্যসাধন?
চলতি মাসেই নদীর পার থেকে পাওয়া গিয়েছিল একটি মহিলার দেহ। এক ঝলকে দেখে পুলিসের অনুমান ছিল গলায় ফাঁস লাগিয়ে প্রথমে খুন, পরে তা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়৷ উদ্ধার হওয়া দেহের পরিচয় নিয়েই প্রাথমিক দ্বন্দ্বে ছিল পুলিস। তদন্ত শুরু করলেও রহস্যর গিঁট যেন খুলছিলই না।
নভি মুম্বইয়ের এই ঘটনাটি নিয়ে পুলিসেরও চিন্তা ছিল। কিন্তু সমাধান সূত্র যেন ছিল নাগালেরও বাইরে। সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যেতে পারে এই মর্মে তদন্ত এগোলেও দেখা যায় ওই এলাকাটি একেবারেই নির্জন, পাণ্ডববর্জিত জনপদ। কোথাও কোনও সিসিটিভিই নেই। ফলে কে বা কারা এসে দেহটি ফেলে দিয়ে যায় তা বোঝার উপায়ও নেই।
এই কেসের সমাধান করতে নিয়োগ করা হয় সিনিয়র ইনস্পেক্টর রবীন্দ্র পাটিলকে। অ্যাসিস্টেন্স পুলিস ইনস্পেক্টরদের দলের নেতৃত্ব দিয়ে এই কেসের রহস্য সমাধান করার দায়িত্ব পড়ে তাঁর কাঁধে। প্রথমে কোনও মহিলার নিখোঁজ মহিলার সঙ্গে মিল আছে কি না উদ্ধার হওয়া দেহের তা দেখা হয়। এরপর তদন্তকারী অফিসারের চোখে পড়ে যে উদ্ধার লাশের পায়ে রয়েছে একটি স্যান্ডেল। যেখানে লেখা রয়েছে দোকানের নাম।
এরপর চলে চপ্পলের দোকানের খোঁজ। দোকানের সন্ধান মিলতেই বিক্রেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিস। জানা যায় ওই মহিলাকে তিনি চেনেন। তাঁর দোকান থেকেই ওই চপ্পলটি কেনেন মহিলা। পাওয়া যায় দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও। এবার যেন অকূলে কূল পায় পুলিস। ওই মহিলার পাশে দেখা যায় এক ব্যক্তিকেও৷ এরপর চলে চিহ্নিতকরণের কাজ। জানা যায় ওই ব্যক্তিটি এক জুতোর দোকানের মালিক নাম রিয়াজ খান। আর মহিলার নাম ঊর্বশী বৈষ্ণব।
রিয়াজের তিনটি বিয়েও রয়েছে। যদিও ঊর্বশী সঙ্গেও প্রেম করছিলেন তিনি। এরপর ঊর্বশী তাকে বিয়ে করার কথা বলতেই বেঁকেই বসেন তিনি। নানা ছলেবলে বিয়ের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতেন রিয়াজ, এমনটাই পুলিস সূত্রে খবর। তবে সম্প্রতি নাছোড়বান্দা হয়ে গিয়েছিলেন ঊর্বশী। বিয়ে না করলে রিয়াজের বাড়িতে গিয়ে সব বিষয় জানানো এবং পুলিসে অভিযোগ করারও হুমকি দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
আর এরপরই ঊর্বশীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রিয়াজ। এই কাজে তিনি সাহায্য নেন বন্ধু ইমরান শেখের। ইমরানের দেনা ছিল বেশ কিছু টাকা। রিয়াজকে সাহায্য করলে সেই দেনা মিটিয়ে দেবেন এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় বলে দাবি করেন ইমরান। এরপর গাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হয় ঊর্বশীকে। তারপর নদীতে ফেলা হয় দেহ। যদিও পরের দিনই তা ভেসে ওঠে। লাশের পায়ে থাকা চপ্পল থেকেই যে এই মৃত্যু রহস্যর সমাধান হবে তা ভাবেননি কেউই।