জামাইষষ্ঠীর আসল কারণ জানলে দুঃখ পেতে পারেন জামাইরা!
নিজস্ব প্রতিবেদন: জামাইষষ্ঠী, কখনই জামাইদের জন্য নয়! অবাক হচ্ছেন, পুরাণ কিন্তু তাই বলছে। মূলত মেয়ের মঙ্গলকামনাতেই বিয়ের পর বাপের বাড়িতে আয়োজিত হয় এই অনুষ্ঠান। কিন্তু, এতে জামাইয়ের বেজায় মন খারাপ হতে পারে, তখন যদি মেয়েকে কটূকথা বলে, তাঁকে পাছে যদি দুঃখ দেয়, তাই তাঁকেও আমন্ত্রণ জানিয়ে আদর যত্ন করা হত, খাইয়ে উপহার দিয়ে তুষ্ট রাখতেন সেকালের শাশুড়িরা।
জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে মা ষষ্ঠীর পুজো করা হয়। ইনি হলেন, সন্তানাদির দেবী। তাই বিয়ের পর কন্যা যাতে সন্তাবতী হয়, সেই আশীর্বাদ পেতে মঙ্গলকামনায় পুজো করা হয়। পাশাপাশি মেয়ে যাতে সুখে সংসার করতে পারে, সেই আশা নিয়েও এই পুজো করা হয়।
কিন্তু, এই ষষ্ঠী পুজোর আগে জামাই শব্দের যোগে, পরবর্তীকালে তা জামাইদের উদ্দেশ্যে উদযাপন হিসেবে মনে করা হয়। কিন্তু আদতে তা নয়! মাতৃত্ব, সন্তান ধারণ, বংশবৃদ্ধি ও সুখে দাম্পত্য জীবন যাতে কাটাতে পারে, সেই উপলক্ষে পুজো দেন মেয়ের মায়েরা।
এই জামাইষষ্ঠীর পিছনে আরও একটি ইতিহাস আছে, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বেশ কিছু জাতের মধ্যে সংস্কার ছিল কন্যা যতদিন না পুত্রের মা হচ্ছেন, ততদিন কন্যার বাবা বা মা কেউ তাঁর বাড়ি যেতে পারবেন না। মেয়েকে দেখতেও পর্যন্ত পারবেন না। এদিকে যদি কন্যা সন্তান হত বা সন্তানধারণে সমস্যা দেখা দিত, তখন তো আরওই দেখতে পেতেন না মেয়েকে। এমনই নিয়ম ছিল শ্বশুর বাড়ির। কিন্তু এই সমস্যার একদিন বিহিত হল।
সে সময়ের সমাজের বিধানদাতা জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লা ষষ্ঠীকে পুজো করার রীতি চালু করলেন। নাম হল জামাই ষষ্ঠী। যেখানে মেয়ে জামাইকে নিমন্ত্রণ করে আদর যত্ন করা হবে। মূলত, জামাইকে বেশি করে সমাদর করা হবে কারণ সে যেন তাঁদের মেয়েকে সুখে রাখে। পাশাপাশি এই নিয়মের কারণে বছরে একবার করে মেয়ের মুখ দর্শনও করতে পারতেন মা বাবারা।
কিন্তু, এখন জামাইষষ্ঠীর পিছনে এত ভাবনাচিন্তা নেই। নিছকই বারো মাসে তেরো পার্বণ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয় জামাইষষ্ঠী। খাওয়াদাওয়া, আড্ডা, উপহারে মেতে ওঠেন জামাই, মেয়ে, বাপের বাড়ি তথা জামাইয়ের শ্বশুরবাড়ি।