`দাঁড়াও পথিকবর`: এই ২৯ জুনেই প্রয়াণ মহাকবি শ্রীমধুসূদনের!

Soumitra Sen Tue, 29 Jun 2021-9:08 pm,

'দাঁড়াও পথিকবর, জন্ম যদি তব/ বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে/ (জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি/ বিরাম) মহীর পদে মহা নিদ্রাবৃত/ দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন!/ যশোরে সাগরদাঁড়ি কপোতাক্ষ-তীরে/ জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি/ রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী'! বাঙালি মাত্রেই জানেন এ কবিতা। 

এই অমোঘ উচ্চারণ মহাকবি মধুসূদনের। তাঁর সমাধিস্থলে ফলকে এ কবিতাটি উত্‍কীর্ণ রয়েছে।  আজ, ২৯ জুন তাঁর মৃত্যু দিন। ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের আজকের দিনে আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে প্রয়াত হন তিনি। তাঁকে কলকাতার সার্কুলার রোডে সমাধিস্থ করা হয়। দেড়শো বছর হতে চলল প্রয়াত হয়েছেন বাঙালির মহাকবি।  

অসাধারণ প্রতিভাবান এই কবি ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। উনিশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি। নাট্যকার ও প্রহসন রচয়িতা হিসেবেও অমর তিনি। তাঁকে বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পুরোধাপুরুষ গণ্য করা হয়। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের পিতৃপুরুষ তিনি।

মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। তার সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত 'মেঘনাদবধ কাব্য'। মধুসূদন ইংরেজ কবি লর্ড বায়রনের সাহিত্য এবং জীবন দ্বারা বিশেষ অনুপ্রাণিত ছিলেন। তাঁর মহান সৃষ্টি মেঘনাদবধ মহাকাব্যের ভাবনা ও  প্রকাশভঙ্গির মধ্যেও তাঁর 'কবিগুরু'র প্রভাব থাকলেও সেখানে তাঁর আত্মস্বাক্ষর ছিল উজ্জ্বল। 

হবে নাই-বা কেন? অমিত প্রতিভাধর মধুসূদন নিজেকে কবিতা ও মৃত্যুর জন্য যেন তিলে তিলে তৈরি করেছিলেন। দুঃসহ অভাব, দারিদ্র্য, সংসারের টানাটানি আর এরই পাশে তাঁর একাগ্র কাব্যসাধনা। জীবনের সমস্ত যন্ত্রণা ও অভাববোধ যেন মণিমুক্তোর দ্যুতি ছড়াত তাঁর পঙক্তিতে। তা ছাড়া মেধাবী এই কবি ছিলেন বহু ভাষাবিদ। নানা ভাষার সাহিত্য থেকে আহরণ করেছিলেন নানা রত্ন। শিশুকালে গ্রামের টোল থেকে তার ফারসি ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে ভাষাশিক্ষার শুরু। পরে তিনি ইংরেজি ছাড়াও ল্যাটিন, গ্রিক, হিব্রু, তেলগু, তামিল ইত্যাদি ভাষা আয়ত্ত করেন। তিনি এমনকি ফরাসি ও ইতালীয় ভাষাও জানতেন। এই সব কিছু দিয়েই গড়ে তুলেছিলেন তাঁর কাব্যপ্রতিমা।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link