আরও `কাঙাল` হচ্ছে ভারতের পড়শি দেশ
আর্থিক সংকটে ভুগছে পাকিস্তান। যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারে দেশের অর্থ ব্যবস্থা। আর্থিক বৃদ্ধি কমছে, অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাজকোষ ঘাটতি ও দেনা। একইসঙ্গে ফুরিয়ে আসছে বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার।
পাকিস্তানে আর্থিক বৃদ্ধি ৫.২ শতাংশে থাকতে পারে বলে সম্ভাবনা। অর্থ বর্ষের শুরুতে আর্থিক বৃদ্ধি ৬.১ শতাংশে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছিল।
গত আর্থিক বছরে পাকিস্তানের আর্থিক বৃদ্ধি ছিল ৫.৮ শতাংশে। গত ১৩ বছরে এটাই ছিল সবচেয়ে ভাল পরিসংখ্যান। চলতি অর্থবর্ষে তা আবারও কমে যাওয়ার আশঙ্কা।
আন্তর্জাতিক বাজারে পাকিস্তানি মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়ে চলেছে। ডলারের নিরিখে পাকিস্তানি টাকার দাম ১২০ টাকায় পৌঁছেছে।
গত সাত মাসে ২০ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে পাকিস্তানি রূপির। গত অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি জিডিপি-র ৫.৮ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি ২ ট্রিলিয়ন রূপি ছাড়িয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল থেকে ধার নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ। ১৯৮০ সালের পর থেকে এনিয়ে ১৩ দফা হাত পাততে চলেছে পাকিস্তান।
নিঃশেষ হয়ে আসছে বিদেশিমুদ্রার ভাণ্ডারও। একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানের কাছে এখন ১০.৩ কোটি ডলার বা ৬৯,৫০৪ কোটি টাকার বিদেশমুদ্রার ভাণ্ডার রয়েছে। গতবছর তা ছিল ১,১০,৬৬৭ কোটি টাকা।
পাকিস্তানের কাছে যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা রয়েছে, তা দিয়ে আর ১০ সপ্তাহ চালানো সম্ভব। বিদেশে কর্মরত পাকিস্তানিরা যে টাকা দেশে পাঠান, তার পরিমাণও কমে গিয়েছে। চিন-পাক করিডর নির্মাণে যুক্ত কোম্পানিগুলির বিল মেটাতেও প্রচুর বিদেশিমুদ্রা খরচ হচ্ছে পাক সরকারের।
ডোনাল্ড ট্রাম্প রাষ্ট্রপতি হওয়ার পাকিস্তানকে আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ করে দিয়েছেন। তার উপরে পাকিস্তানের উপরে চিনের ধারের বোঝাও চাপছে। চলতি অর্থ বর্ষেই চিনের কাছ থেকে ৫ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নিয়েছে পাকিস্তান।
দায়িত্ব নিয়েই ব্যয় সংকোচনে জোর দিয়েছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তানের উপরে ২৮ হাজার কোটি টাকার দেনা। এতটা ঋণের বোঝা কোনওকালেই ছিল না। আইএমএফও বলছে, পাকিস্তানের উপরে ঋণের বোঝা বাড়ছে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালে ৫০ শতাংশ দেনার ভার বেড়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে পাকিস্তানকে ৬.৭ ডলার আর্থিক প্যাকেজ দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার।
চিনের কারণে পাকিস্তানের অবস্থা আরও সঙ্গিন হচ্ছে বলে দাবি করেছে ডনের একটি প্রতিবেদন। তাদের মতে, চিনের করিডর গড়তে খরচ করতে হচ্ছে পাকিস্তান। এরইসঙ্গে অপরিশোধিত তেলের দামবৃদ্ধিও পাকিস্তানকে সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের মোষ নিলামে তুলেছেন ইমরান খান। নওয়াজ শরিফের জমানার মোষগুলি বিক্রি করে পাক সরকারের আয় হয়েছে ২৩লক্ষ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অতিরিক্ত ১০২টি গাড়ি, চারটি হেলিকপ্টারও নিলামে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে নতুন পাক সরকার। গাড়িগুলির মধ্যে বুলেটপ্রুফ যানও রয়েছে।