লকডাউনের প্রভাব পড়ছে মনে, অদ্ভুত স্বপ্ন দেখছেন লাখো মানুষ!
করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমাতে বহু্ দেশে এখন লকডাউন চলছে। মানুশ ঘরবন্দি। সারাদিন বাড়িতে। আর তাই এই বন্দিদশার প্রভাব পড়ছে মনে! বিশ্বজুড়ে লকডাউন হওয়ার পর গবেষকরা বেশ কিছু মানুষের স্বপ্নের তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করেছিলেন। ফিলিপিন্স থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, তাঁরা অনেকেই অস্বাভাবিক এবং অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেছেন।
ফিলিপিন্সের বাসিন্দা এলিসা অ্যাঞ্জেলি বলেছেন, আমি দেখলাম, মধ্যরাতে আমাকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে একজন চিকিৎসক আমার হাতে অপারেশন করছেন। কয়েক মুহূর্ত পর মনে হল আমার শুধু যেন একটি হাত রয়েছে। আরও দেখলাম, ডাক্তার আমার একটি হাত নিয়ে খেলছেন। কিছুদিন পর থেকে জিনিসপত্র হারানোর স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম। আমার টাকা হারিয়েছে। না হলে আমার ল্যাপটপ হারিয়েছে। প্রায় রোজই স্বপ্ন দেখছি
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির মনোবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডেইরড্রে ব্যারেট গত মার্চ মাস থেকে মানুষের স্বপ্নের তথ্য সংগ্রহ করছেন। তিনি জানিয়েছেন, লকডাউনের কারণে মানুষের স্বপ্নের ধরণ বদলেছে। তাঁর বক্তব্য, কোনও বড় ধরনের চাপ তৈরি হলে মানুষের অদ্ভুত, উদ্বেগের স্বপ্ন দেখার প্রবণতা বেড়ে যায়।
অধ্যাপক ডেইরড্রে ব্যারেট এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মানুষের স্বপ্ন নিয়ে গবেষণা করেছেন। আমেরিকার নাইন ইলেভেন, ইরাক দখলের পর কুয়েতি নাগরিকদের ওপর প্রভাব এবং নাৎসি ক্যাম্পে বন্দি অবস্থায় থাকা ব্রিটিশ সৈনিকদের মানসিক অবস্থার উপর তিনি গবেষণা করেছিলেন। ব্যারেট জানিয়েছেন, যুদ্ধের সময়ে অনেক খণ্ড খণ্ড অদ্ভুত চিত্র মানুষ স্বপ্নের মাধ্যমে দেখতে পায়। তবে মহামারীর সময় মানুষ অন্যরকম স্বপ্ন দেখে।
ডেইরড্রে বলেছেন, করোনা অদৃশ্য শত্রু। ফলে এমন অনেকে রয়েছেন যাঁরা পোকার মধ্যে সাতার কাটছেন, সুনামিতে ভেসে যাচ্ছেন, হ্যারিকেন, টর্নেডো, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বলে স্বপ্ন দেখেছেন এই সময়। তবে এর পিছনে আরেকটি কারণও থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। মানুষ এখন বেশি সময় ধরে ঘুমোচ্ছে। ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি ওঠার তাড়া নেই। ফলে গভীর ঘুমের জন্যও স্বপ্নের ধরণ পাল্টাতে পারে।