চক্ষুদান মানে চোখ খুবলে নেওয়া নয়! সঠিক প্রচার নেই ভারতে
নিজস্ব প্রতিবেদন:আপনার চোখে দৃষ্টি পাবে অন্যজন। এই মহত কাজটি অনেকেই মৃত্যুর আগে নির্দ্বিধায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। কিন্তু অনেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিস্তর ভাবনাচিন্তা করে। শেষ পর্যন্ত আর হয়ে ওঠে না। মনের চিলেকোঠাতেই আড়াল হয়ে থেকে যায় সেই মহত কাজের বাসনা। এই বিস্তর ভাবনাচিন্তা বেশ কিছু মিথ ও ভুল ধারনার উপর ভর করে তৈরি।
উল্লেখ্য, ভারতে চোখ দানের প্রয়োজন রয়েছে। তবে এর পাশাপাশি, আসল প্রক্রিয়া, উপকারিতা, কল্পনা, মিথ এবং ঘটনাগুলি সম্পর্কে ভুলধারণা রয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে যে ভারতে আনুমানিক ১৫ মিলিয়ন মানুষ দৃষ্টিহীন এবং ৩০ মিলিয়ন দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে লড়ে চলেছে। ডাক্তার হর্ষবর্ধন ঘোড়পাদে বলেছেন ভারতে চোখের দান সম্পর্কে সচেতনতা প্রচার হয়না। কারণ এর চারপাশে বহু মিথ রয়েছে; চোখ দান সম্পর্কে মানুষকে আরও সচেতন করা উচিত।
চোখ দানের পিছনে যে ভুল ধারণা রয়েছে দেশেজুড়ে তা হল -
১) চোখের দান করলে পরের জন্মে চোখ হবে না। মুখের আদল নষ্ট হয়ে যাবে। মৃত্যুর পরও যে জন্ম হয়, তার নিশ্চিত পরীক্ষামূলক তথ্য নেই।
সঠিক তথ্য- চক্ষু দান করলে মুখের চেহারা নষ্ট হয় না। কর্নিয়া নেওয়া হয়। যখন চোখ বন্ধ থাকে , তখন স্বাভাবিকই থাকবে।
২) কোনও ব্যক্তি জীবিত থাকাকালীন তাদের চোখ দান করতে পারে।
সঠিক তথ্য: কিডনি বা যকৃতের কিছু অংশ জীবিত ব্যক্তির কাছ থেকে অন্য ব্যক্তিকে দান করা যেতে পারে, তবে মৃত্যুর পরে চোখ দান করা হয়। আপনি জীবিত থাকাকালীন আপনার চোখ দান করার শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন।
৩) চোখের দান সমস্ত অন্ধ মানুষকে সাহায্য করতে পারে
সঠিক তথ্য: শুধুমাত্র কর্নিয়ার অস্বচ্ছ ব্যক্তিরাই উপকৃত হতে পারে, অন্যদিকে রেটিনা বা অপটিক নার্ভের জন্য অন্ধত্ব এলে তারা চোখ দান থেকে উপকৃত হবে না।
৪) আপনি যদি রেটিনার ভোগেন বা আপনার চোখে শল্যচিকিৎসা হয়ে থাকে, আপনি দাতা হতে পারবেন না।
সঠিক তথ্য: রেটিনা বা অপটিক নার্ভ সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের পর চোখ দান করা যায়।
৫) চোখ মৃত্যুর পরে যে কোনও সময় দান করা যায়
সঠিক তথ্য: মৃত্যুর ৬ ঘন্টার মধ্যে কোনও দাতার কাছ থেকে চোখ সংগ্রহ করা দরকার। দাতার দেহকে শীতল পরিবেশে রাখা উচিত। চোখ বন্ধ করা, আর্দ্র সুতির কাপড় চোখের উপরে রাখা এবং মাথার নীচে দুটি বালিশ রাখতে হবে। কারণ, স্থানীয় চক্ষু সংগ্রহ কেন্দ্র (হাসপাতাল) বা চক্ষু ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সময় প্রয়োজন। আর সেই সময় যাতে চোখ ঠিক থাকে তার জন্যই এই পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।
৬) চোখ দান করে বিক্রি করা হয়। সঠিক তথ্য: যে কোনও মানব অঙ্গ বিক্রি ও ক্রয় করা অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ; এটি একটি মহৎ কাজ এবং অনুমোদিত সংস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।