রিয়েল লাইফ চরিত্র থেকেই অনুপ্রাণিত ছিল `প্রাক্তন`-র চিত্রনাট্য, জেনে নিন শুটিংয়ের নেপথ্য গল্প
নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত নব্বই দশকের অন্যতম সেরা জুটি। এখনও তাঁরা দর্শকের কাছে ইন্ডাস্ট্রির এক নম্বর জুটি। ঠিক যখন ইন্ডাস্ট্রি তাঁদের প্রিয় জুটিকে একসঙ্গে দেখার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন, ঠিক সেইসময় রামধনুর মতো উদয় হয়ে সকলকে চমকে দেন দুই অভিনেতা। প্রায় পনেরো বছর পর তাঁদের প্রত্যাবর্তন হয় শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায় এবং নন্দিতা রায়ের হাত ধরে।
ট্রেন জার্নির মধ্যে দিয়ে একটি সম্পর্কের জার্নি ফুটিয়ে তুলেছিলেন পরিচালকেরা। তবে আজ যে তথ্য শেয়ার করব তা আপনাদের অজানা। আসলে এটি কোনও ট্রেনে শুটিং করা হয় নি, একটি সেট তৈরি করা হয়েছিল। শিল্প নির্দেশক নীতিশ রায় তৈরি করেছিলেন এই ট্রেনটি। শুটিংয়ের সময় ট্রেনের ঝাঁকুনি বোঝানোর জন্য টেকনিশিয়ানরাই অনবরত ঝাঁকাতেন এই ট্রেন। তবে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য পরিচালকরা সিনেমাটিতে ভারতীয় রেলওয়ের সমস্ত সামগ্রী, ব্যবহার করেছিলেন। এর জন্য ছবির এন্ড স্ক্রোলে ভারতীয় রেলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পরিচালকদ্বয়।
তুমি যাকে ভালবাসো গানটি এই ছবির অন্যতম ক্লাইম্যাক্স পয়েন্টে আসে। এই গানটির জন্য জাতীয় পুরস্কার পান ইমন চক্রবর্তী। অনুপম রায়ের সঙ্গীত পরিচালনায় গানটি গেয়েছিলেন ইমন। তবে এর পিছনেও লুকিয়ে রয়েছে একটি রহস্য। অনুপম রায় শিল্পীর নাম না করেই দুজনের রেকর্ডেড ভার্সান পাঠিয়েছিলেন পরিচালকের কাছে। পরিচালকরা না চিনেই ইমনের ভার্সানটি বেছে নেন, এরপর বাকিটা ইতিহাস। এখনও পর্যন্ত শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায় জানেন না যে দ্বিতীয় কন্ঠটি কার ছিল।
অনেকদিন পর ঋতুপর্ণা প্রসেনজিতের রসায়ন দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন সকলে। তাঁদের একে অপরের দিকে তাকানো, অভিমান ভাঙানো, সবই যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছিল। ১৫ বছর পর আবার একসঙ্গে কাজে ফিরেও কোনও অস্বস্তি ছিল না দুজনের, বরং আরও ম্যাচিওর এক্সপ্রেশন। আবারও যেন ফিরে গিয়েছিলেন পুরোনো দিনে। শুধু তাঁরাই নন,নস্টালজিয়ায় ভাসছিলেন শ্রোতারা, প্রেক্ষাগৃহ পরিপূর্ণ করে ভালবাসা উজার করে দিয়েছিলেন এই জুটিকে।
প্রসেনজিৎ ও ঋতুপর্ণা অভিনীত চরিত্র দুটি আসলে রিয়েল লাইফ চরিত্র থেকে অনুপ্রাণিত। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং নন্দিতা রায় একজন জনপ্রিয় ট্যুর গাইডের জীবন থেকেই গল্পটি ভাবেন। ঋত্বিক চক্রবর্তী ও তাঁর স্ত্রী মধুরার চরিত্র রূপান্তরিত হয় উজান ও সুদীপায়।এই জুটিকে দু হাত ভরে ভালবাসা দিয়েছেন দর্শক।
অনুপম রায়ের কলকাতা গানটিও খুব জনপ্রিয় হয়েছিল এই ছবিতে। এই গানে প্রসেনজিতের চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলা হয়। ট্যুর গাইড কীভাবে শহরের আনাচ কানাচ ঘুরিয়ে দেখান পর্যটকদের তার রেফারেন্স পেতে প্রসেনজিৎ ঋত্বিকের সঙ্গে কলকাতা সফরে বেরিয়েছিলেন। এই চরিত্রের জন্য যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ঋত্বিকের কথা বলা, হাঁটাচলা, কাঁধে ক্রস করে রাখা স্লিগ ব্যাগের ব্যবহার এবং অবশ্যই তাঁর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ও অভিব্যক্তি এই চরিত্রে ঢুকতে নায়ককে সাহায্য় করেছিল।