EXPLAINED | Puri Jagannath Temple 10 Mysterious Facts: ছায়া পড়ে না, নেই ঢেউয়ের শব্দ! পুরীর মন্দিরের এই ১০ অলৌকিক রহস্যের হয়নি কিনারা...
৮০০ বছরের পুরনো পুরীর জগন্নাথ মন্দির। ভক্তরা প্রবল জাগ্রত মহাপ্রভুর দর্শনের জন্য় মুখিয়ে থাকেন। তবে এই পুরীর মন্দির কিন্তু অলৌকিকতায় মোড়া। আজও এখানকার ১০ রহস্যের হয়নি কিনারা। বিজ্ঞানও দিতে পারেনি কোনও উত্তর। এই প্রতিবেদনে রইল সেরকমই কিছু আশ্চর্যজনক ঘটনার উল্লেখ...
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরটি ২১৪ ফুট লম্বা। সেই মন্দিরের চূড়ার ১১ ফুট উপরের নীল চক্রে ওড়ে লাল-হলুদ পতাকা। যার নাম পতিত পবন। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হল হাওয়ার বিপরীত দিকে এই পতাকা ওড়ে। হাওয়ার দিক পরিবর্তনের সঙ্গে পতাকা ওড়ার দিক বদল হয় না।
পুরীর মন্দিরের ভিতর কোনও ঢেউয়ের শব্দ শোনা যায় না। দেবী সুভদ্রা চেয়েছিলেন মন্দিরের ভিতর নীরবতা বজায় থাক। তাই মন্দিরের ভিতর সমুদ্রের কোনও শব্দ কানে আসে না।
৩৭ হাজার স্কোয়ারফুট জায়গা জুড়ে বিস্তৃত মন্দিরের কোনও ছায়া পড়ে না! অলৌকিক কাণ্ড ছাড়া আর কী!
পুরী মন্দিরের চূড়ায় কখনও কোনও পাখি বসতে দেখা যায়নি! এমনকী কেউ কখনও মন্দিরের উপরে পাখি উড়তেও দেখেনি, এমনকী কোনও বিমানও যায় না। মানুষের বিশ্বাস, কিছু প্রাকৃতিক শক্তি মন্দিরের নীল চক্রের উপর দিয়ে উড়ন্ত বস্তুগুলিকে বাধা দেয়। এবং এটি প্রাকৃতিক নো ফ্লাইং জোন!
জগন্নাথ মন্দিরের শীর্ষে যে ধাতব চাকা রাখা হয় তাকে নীল চক্র বা নীল চাকা বলা হয়। আশ্চর্যজনক বিষয় হল যে কেউ যে কোনও প্রান্ত থেকে ওই চক্রের দিকে তাকান, মনে হবে চক্রটি তাঁর দিকেই ঘোরানো। দ্বাদশ শতকে মন্দিরটি তৈরির সময়ে নীল চক্র স্থাপিত হয়েছিল। সেই সময় প্রযুক্তিও তেমন উন্নত ছিল না। তাহলে কীভাবে চূড়ার উপর অত ভারী চক্রটি বসানো হল, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। ১২ ফুট উচ্চতার প্রায় ২০০০ কেজি ওজনের অষ্টধাতুর এই চক্র!
৮, ১১, ১২ ও ১৯ বছর অন্তর জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিষশাস্ত্র মেনেই পুরীর মন্দিরের জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহ বদল হয়। যা নবকলেবর নামেই পরিচিত। পুরনো মূর্তি কোইলি বৈকুণ্ঠের কাছে পুঁতে দেওয়া হয়। আশ্চর্যজনক বিষয় হল, জগন্নাথ মহাপ্রভুর নতুন বিগ্রহের জন্য় যে নিম গাছটি বেছে নেওয়া হয়, সেটি মন্দির কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত এক কাঠুরেই সকলের আড়ালে ২১ দিন ধরে কাটেন।
নবকলেবর পরেই মূর্তি বদল হয় অত্য়ন্ত নিষ্ঠা ভরে যাবতীয় রীতি মেনে। মন্দিরের প্রবীণ পুরোহিতের প্রথমে চোখ বেঁধে দেওয়া হয়। তারপর তাঁর হাতে দস্তানা পরানো হয়। এরপর তিনি মূর্তি বদল করেন। শুনলে অবাক হবেন যে, সেই সময় গোটা পুরীর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। মন্দিরের বাইরে বিরাট কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকে। মনে করা হয় মূর্তি বদল কেউ দেখে ফেললে তাঁর বিরাট ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এমনকী নষ্ট হতে পারে চোখও। ঠিক যে কারণে পুরোহিতের চোখ বেঁধে দেয়।
বলা হয় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রান্নাঘর বিশ্বের বৃহত্তম। এই রান্নাঘরেই জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ তৈরি হয়। এখানেও পরতে পরতে রহস্য়। মাটির উনুনে কাঠের আঁচে পরপর উপর-নীচ করে ৭টি পাত্র বসিয়ে রান্না হয়। শুনলে অবাক হতে হবে যে, প্রথমে উপরের পাত্রের রান্না সিদ্ধ হয়। তারপর এক-এক করে নীচের পাত্রগুলির রান্না হয়। উনুনে সবার উপর যে পাত্রটি বসে তারা রান্না সব শেষে হয়। পুরী মন্দিরে যতই ভক্ত আসুক না কেন কখনও প্রসাদ কম পড়ে না।