সামনেই রথ, বাড়িতেই পুরীর গজা বানাবেন কীভাবে?
নিজস্ব প্রতিবেদন: রথযাত্রা উৎসব মানেই খাদ্যরসিক বাঙালির কাছে মুড়ি, তেলেভাজা, পাপড় ভাজা খাওয়াতো আছেই, কিন্তু ওড়িশার রথযাত্রা কীভাবে বাংলার সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়ল তা অনেকেরই জানা নেই। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হয় হুগলি জেলার মাহেশের রথযাত্রাই (১৯৩৬ খ্রী) বাংলার প্রাচীনতম রথযাত্রা। যদিও জানা গিয়েছে ১৮৩৮ সালে রুপোর রথ বানিয়ে যাত্রা শুরু করেন রানি রাসমণি। কলকাতার মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের মার্বেল প্যালেসের প্রাচীন রীতি মেনে রথযাত্রার ঐতিহ্যপূর্ণ। কালের নিয়ম মেনেই এখনও রথযাত্রা বাঙালিদের কাছে এক উৎসব।
পুরীর রথযাত্রা উৎসবে বহু দূর থেকে প্রচুর মানুষ আসেন, কিন্তু Corona পরিস্থিতিতে এই সমাগম আপতত স্থগিত। শুধুমাত্র করোনা বিধি মেনেই এই রথযাত্রা শুরু হয়েছে। ২০২১এর ১২ জুলাই রথযাত্রা উৎসব। Corona পরিস্থিতিতে বাড়ির শিশুদেরকে রথ সাজিয়ে, বাঁশি বাজিয়ে বেড় করা সুরক্ষার নয়, তা বলে রথের প্রসাদের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হবেন না। পুরীর গজা বিশ্ব বিখ্যাত আর এই রথে বাড়িতেই বানিয়ে নিন সেই গজা। জেনে নিন কীভাবে বানাবেন পুরীর গজা।
পুরীর গজা বানানোর উপকরণগুলি জেনে নিন, ৪জনের জন্য গজা বানাতে প্রয়োজন: ১কাপ ময়দা,১/১/২টেবিলচামচ চালের গুঁড়ো, ২ টেবিল চামচ ঘি, প্রয়োজন অনুযায়ী জল নিয়ে চিনির সিরা বানাতে হবে। ১ কাপ চিনি, ১ কাপ জল, ১/৪;চা চামচ এলাচ গুঁড়ো দিয়ে বানান চিনির সিরা।
১ কাপ ময়দা ২টেবিলচামচ ঘি দিয়ে খুব ভালো করে ময়ান দিয়ে তারপর একটু একটু করে জল মিশিয়ে ভাল করে মেখে একটা শক্ত ডো বানিয়ে তা ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে কুড়ি মিনিট। কড়াই ১ কাপ চিনির সঙ্গে ১ কাপ জল মিশিয়ে তা ফুটে গেলে দিতে হবে সামান্য এলাচ গুঁড়ো, ফুটতে ফুটতে জলটা যখন একটু ঘন হয়ে আসবে, দুই আঙুলের মধ্যে সামান্য রস লাগিয়ে দেখতে হবে চ্যাটচ্যাট ভাব এসেছে কিনা।আর আঙ্গুল দুটোর ব্যবধানে মাঝখান থেকে হালকা সুতোর উঠে যাওয়া হচ্ছে কিনা! এরকম হলেই গ্যাস কেননা গজার জন্য সিরা তৈরি।
ময়দা আরেকবার একটু মেখে নিয়ে সমান ভাগে কেটে নিতে হবে লেচি। ৫ থেকে ৭টা পর্যন্ত লেচি হতে পারে। লেচি গুলো সব হাতের তালুতে গোল করে পাকিয়ে সামান্য চালের গুঁড়ো ভরিয়ে রুটির মতো বেলে নিতে হবে পাতলা করে। একটা ছোট বাটিতে দেড় টেবিলচামচ চালের গুঁড়োর সঙ্গে ১ টেবিলচামচ ঘি মিশিয়ে ১ জোলো মিশ্রণ বানাতে হবে যেটা একেকটা রুটির উপর ঘি বা বাটার লাগানোর মতো করে লাগিয়ে নিতে হবে। এই ঘি মেশানো চালের গুঁড়ো একেক টা রুটি নিয়ে তার উপর মাখিয়ে পরের টায় মাখাতে হবে।এইভাবে একটার উপর আরেকটা রুটি চাপিয়ে দিতে হবে। সব গুলো একভাবে করে নিয়ে এবারে এটাকে পাটিসাপটার মতো রোল করে নিয়ে একটাই হবে, সব গুলো রুটি মিলিয়ে। মুখটা ঘি ভরিয়ে ভালো করে চেপে আটকে দিতে হবে। এবারে একটা ছুরি দিয়ে এই রোলটাকে সমান ভাগে কেটে নিতে হবে। আবারও সেই ৫ থেকে ৭টা টুকরো হতে পারে।ঠিক যেভাবে কাটা হল সেইভাবেই একেকটা টুকরো নিয়ে লম্বা করে বেলে নিতে হবে আলতো করে, খুব বেশি পাতলা বা মোটা হবে না এই বেলতে থাকা কাঁচা গজাগুলো।
সব গুলো একভাবে বেলে নিয়ে তেলসমেত কড়াই বসিয়ে দিতে হবে উনুনে। ফুল ফ্লেমে তেল গরম করে এবারে গ্যাসের পাওয়ার কমিয়ে দিয়ে একটা একটা করে গজা তেলে ছেড়ে দিতে হবে ভাজার জন্য।যতটা আঁটে ততটা দিয়ে হালকা লাল করে ভেজে তুলতে হবে এগুলো। ওদিকে চিনির সিরা গ্যাস জ্বালিয়ে হালকা গরম করে নিতে হবে এইসময়। তারপর গ্যাসের পাওয়ার বন্ধ করে এই ভাজা গজাগুলো ওর মধ্যে দিয়ে এপিঠ ওপিঠ করে রস ভরিয়ে নিতে হবে এক এক করে।মাখানো শেষে একটা ডিশের উপর তুলে রেখে দিতে হবে ছেড়ে ছেড়ে। ঠান্ডা হলেই পরিবেশন করে দিন এই সুন্দর স্বাদের মুচমুচে রসালো পুরীর গজা।