স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে আপত্তি দিল্লির রোহিঙ্গা শরণার্থীদের
দিল্লিতে বসবাসকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে পুলিস। জারি করা হয়েছে জাতীয় তথ্যযাচাই ফর্ম। আর এতেই সিঁদূরে মেঘ দেখছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।
এর আগেও এই ধরনের তথ্য যাচাইয়ের ফর্ম বিলি করা হয়েছিল। নতুন করে ফর্ম বিলি শুরু হওয়ায় আশঙ্কার চোরাস্ত্রোত বইছে দিল্লির রোহিঙ্গা বস্তিতে।
রোহিঙ্গাদের দাবি, ফর্মে নিজের নামের সঙ্গে লেখা হয়েছে, 'আমি মায়ানমারের বাঙালি'। এই শর্তের জেরে মায়ানমারের সঙ্গে তাঁদের লড়াইকে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে না বলে মনে করছে একশ্রেণির রোহিঙ্গা।
পুলিসের বক্তব্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী তাদের চলতে হচ্ছে। এতে পুলিসের কোনও ভূমিকা নেই।
এক রোহিঙ্গা যুবকের কথায়, ''সবার কাছ থেকে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের কথা বলে গিয়েছে পুলিস। এর সঙ্গে মায়ানমারে পাঠিয়ে দেওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে তারা। তবে আমরা বিশ্বাস করছি না''।
দিল্লিতে ই-রিকশা চালান আবদুল্লা। তিনি বলেন, ''আমাদের জোর করে ফেরত পাঠাবেন না। হত্যা করুন অথবা বোমা মেরে উড়িয়ে দিন। নরকে পাঠানোর আগে সব দিক বিবেচনা করুন। মায়ানমারের পরিস্থিত খুব খারাপ''।
অতিসম্প্রতি সাতজন অনু্প্রবেশকারী রোহিঙ্গাকে মায়ানমার সেনার হাতে তুলে দিয়েছে ভারত সরকার। এব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেনি সুপ্রিম কোর্টও। ফলে আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন রোহিঙ্গারা।
রোহিঙ্গাদের আশঙ্কাও অমূলক নয়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের ব্যাপারে সব রাজ্য সরকারকে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। সব তথ্য আসার পর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানো নিয়ে সে দেশের সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালানো হবে।
ভারতে বসবাস করছে প্রায় ৪০,০০০ রোহিঙ্গা। গত অগস্টে সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেছিলেন, রোহিঙ্গারা বেআইনি শরণার্থী। রোহিঙ্গারা বেআইনি কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় গোয়েন্দাসংস্থাগুলির তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের একাংশের সঙ্গে জইশ-ই-মহম্মদের মতো পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলির যোগ রয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে জেহাদের জন্য তাদের অস্ত্র সরবরাহ করছে ওই জঙ্গি সংগঠনগুলি।