Russia-Ukraine War: দেখে নিন ইউক্রেন ও রাশিয়া কী সব ভয়ঙ্কর অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধে নেমেছে!
প্রথমে দেখে নেওয়া যাক রুশ সামরিক বাহিনী কীরকম অস্ত্র ব্যবহার করছে। তাদের নিজেদের তৈরি ইসকান্দার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানতে সক্ষম। স্বল্প পাল্লার হলেও রাশিয়ার শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ইসকান্দার নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া কয়েকশো ইসকান্দার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। রাশিয়ার ছোড়া এই ক্ষেপণাস্ত্রের অনেকগুলিই ইউক্রেনের বাড়িঘর, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আঘাত হেনেছে এবং এতে সাধারণ মানুষেরও প্রাণহানি হয়েছে বলে দাবি ইউক্রেনের।
রাশিয়ার তৈরি ৩এম-১৪ কালিবর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূমি থেকে ভূমিতে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম ল্যান্ড অ্যাটাক ক্রুজ মিসাইল (এলএসিএম)। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ভূমিতে হামলার জন্য এটিই সবচেয়ে বড় ভরসা রুশ নৌবাহিনীর।
সোভিয়েত আমলে তৈরি রাশিয়ার টিওএস-১ হল প্রাণঘাতী এক অস্ত্র। বুরাটিনো নামের এই অস্ত্র থেকে মূলত আগুনের গোলা বেরয়। এ জন্য এর নাম হেভি ফ্লেম থ্রোয়ার। সর্বোচ্চ ছ' কিলোমিটার দূর পর্যন্ত এটি আঘাত হানতে পারে। এতে অনেকগুলি রকেটও থাকে। অক্সিজেন ব্যবহার করে উচ্চমাত্রার বিস্ফোরণে এটি ব্যবহার করা হয়। রাশিয়ার সবচেয়ে বিধ্বংসী অস্ত্রের মধ্যে টিএওস-১ একটি।
যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রধান দুটি ট্যাঙ্ক হল টি-৯০ এবং টি-৭২ বিএম৩। সম্প্রতি এটির আরও আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধে সম্মুখসমরে এই দুটি ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে রাশিয়া।
এবার দেখা যাক ইউক্রেন কী কী অস্ত্র ব্যবহার করছে। রাশিয়ার তুলনায় ইউক্রেনের সামরিক শক্তি অবশ্য অনেক কম অধুনিক, বৈচিত্রেও অনেক কম। ইউক্রেনের অস্ত্রাগারে থাকা অস্ত্রের বেশিরভাগই পশ্চিমিদের দেওয়া। আকাশপথে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ-যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠেছে তুরস্কের তৈরি বায়রাক্তার ড্রোন। রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনের সর্বত্র এই ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। অত্যাধুনিক এই ড্রোনকে 'কিলার ড্রোন' বলে।
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র এফজিএম-১৪৮ 'জ্যাভেলিন' নামে পরিচিত। সর্বোচ্চ চার কিলোমিটার দূর থেকে এটি ট্যাঙ্ক ধ্বংস করতে পারে। এখন ইউক্রেনের অস্ত্রাগারে থাকা সবচেয়ে প্রাণঘাতী অস্ত্রগুলির একটি এটি।
নেক্সট জেনারেশন লাইট অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ওয়েপন বা 'এনএলএডব্লিউ' হালকা বহনযোগ্য ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী এক অস্ত্র। সর্বোচ্চ ৮০০ মিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। পদাতিক বাহিনী যাতে প্রতিপক্ষের ট্যাঙ্ক ধ্বংস করে এগোতে পারে, মূলত এমন লক্ষ্য থেকেই এটি তৈরি করা হয়েছে। এটি ব্রিটেনের অস্ত্র। ইউক্রেনে রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরুর পর রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনকে অস্ত্র-সহায়তা হিসেবে কয়েকশো এনএলএডব্লিউ দিয়েছে তারা।
স্টিংগার হল ভূমি-থেকে-আকাশে সর্বোচ্চ আট কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এক ক্ষেপণাস্ত্র। রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর পশ্চিমি দেশগুলি ইউক্রেনকে এই ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে। যুদ্ধ বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, রাশিয়া যে ইউক্রেনে আকাশপথে এখনও তেমন শক্তিমত্তা দেখাতে পারেনি, তার একটি বড় কারণ ইউক্রেনের হাতে থাকা শত শত স্টিংগার ক্ষেপণাস্ত্র। এর মাধ্যমে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী রাশিয়ার অনেক হেলিকপ্টারকে মাটিতে নামিয়ে দিতে পেরেছে।