প্রযুক্তির সাহায্যে কথা বলল ৩,০০০ বছরের পুরনো মিশরীয় মমি! জানাল শেষ ইচ্ছা

Sudip Dey Mon, 27 Jan 2020-5:02 pm,

প্রায় তিন হাজার বছর আগেই মৃত্যুর পর মমি করা হয় তাঁকে। ১৮২৩ সালে মমিটি উদ্ধার করে ইংল্যান্ডের ‘লিডস সিটি মিউজিয়াম’-এ রাখা হয়। প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানতে পারেন, এটি নেসিয়ামানের মমি।

নেসিয়ামান মিশরের প্রাচীন শহর থিবসের কারনাকে আমান (সূর্য এবং বায়ুর দেবতা)-এর মন্দিরের প্রধান পূজারী ছিলেন। দেবতা আমানের মন্দিরের থাকতেন নেসিয়ামান। ওই মন্দিরেই মৃত্যু হয় তাঁর।

প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানতে পারেন, মুখে মারাত্মক সংক্রমণের জন্য শেষ জীবনে সে ভাবে কথা বলতে পারতেন না নেসিয়ামান। ওই সংক্রমণে তাঁর দাঁত, মাড়ি দ্রুত ক্ষয়ে যেতে শুরু করেছিল। একটা সময় ওই সংক্রমণ নেসিয়ামানের সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে আর তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।

কিন্তু কী ভাবে কথা বললেন ৩,০০০ বছর আগেই মৃত মিশরীয় পুরহিত নেসিয়ামান? গত বুধবার ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ নামে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩ডি প্রিন্টার ভোকাল বক্সের মাধ্যমে কথা বলেছেন নেসিয়ামান। অর্থাৎ, আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্যে ৩,০০০ বছরের পুরনো মমিকে কথা বলাতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীরা জানান, মানুষের ল্যারিংসে শব্দ তৈরি হয় আর ভোকাল ট্র্যাক প্যাসেজে ওই শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়ে অর্থপূর্ণ শব্দ তৈরি করে। এই গোটা বিষয়টাকে একসঙ্গে মানুষের ভয়েস বক্স বলা হয়। এ ক্ষেত্রে ৩ডি প্রিন্টার ভোকাল বক্সের সাহায্য নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

৩,০০০ বছর আগে নেসিয়ামান শেষ যে কথাটা বলেছিলেন, তা জানার জন্য প্রথমে বিজ্ঞানীদের তাঁর ভোকাল ট্র্যাকের ডাইমেনশন ৩ডি-প্রিন্টারে কপি করতে হয়েছে। তবে যদি মৃত ব্যক্তির ভোকাল ট্র্যাকের নরম কোষগুলি অক্ষত থাকে, এই পদ্ধতি শুধুমাত্র তখনই সম্ভব। নেসিয়ামানের দেহ এত ভাল ভাবে সংরক্ষিত ছিল যে, এত বছর পরেও তাঁর ভোকাল ট্র্যাকের কোষগুলি অক্ষত অবস্থাতেই পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

৩ডি-প্রিন্টারে নেসিয়ামানের মমির ভোকাল ট্র্যাকের কপি করে ল্যারিংসে কৃত্রিম ভাবে তাঁর কণ্ঠস্বর তৈরি করেন। ওই শব্দ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন যে, নেসিয়ামান শেষ যে কথাটা বলেছিলেন সেটি ‘বেড’ বা ‘ব্যাড’ জাতিয় কোনও শব্দ। এই শব্দের অর্থ কী, এখন তা জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link